হার্টের রোগীর খাবারের তালিকা গুলো জেনে নিন

আপনি কি হার্টের রোগীর খাবারের তালিকা গুলো জানতে চান। তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। কারন আমি হার্টের রোগীর খাবারের তালিকা গুলো আপনাদের জানাতে চলেছি। এই বিষয়টি নিয়ে এই পোস্টে বিস্তারিত আলোচনা করবো। চিন্তার কোন কারণ নেই। হার্টের রোগীর খাবারের তালিকার পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়লে আপনার সকল ধরনের দ্বিধা দূর হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।

সুতরাং, আমাদের এই পুরো আর্টিকেলটি পড়ুন এবং হার্টের রোগীর খাবারের তালিকা গুলো এর থেকে তথ্য নিয়ে সেগুলো মেনে চলুন। দেখবেন ইনশাআল্লাহ আপনি সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
পোস্টসূচিপত্রঃ 

    ভূমিকা

    সুস্বাস্থ্য হলো আমাদের শরীরের জন্য মহামূল্যবান একটি আল্লাহর নিয়ামত বা সম্পদ। এটিকে আমরা অবহেলা অনিয়মিত তার কারণে নষ্ট করে ফেলছি। যার ফলে আমরা হৃদরোগে আক্রান্ত হই। আমাদের স্বাস্থ্য এবং সুস্বাস্থ্যের জন্য হার্ট সুস্থ থাকা অপরিহার্য। আমাদের শরীরে সঠিকভাবে যদি রক্ত পাম্প না করে। তাহলে শরীরের টিস্য, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোতে, অক্সিজেন এবং পুষ্টি সরবরাহ হয় না।

    যার ফলে আমরা হৃদরোগে আক্রান্ত হই। সাধারণত হৃদরোগ কার্ডিওভাসপুলার ডিজিজ নামে পরিচিত। এটি হৃদপিণ্ড এবং রক্তনালীকে প্রভাবিত করে। পৃথিবীতে হৃদরোগে আনুমানিক প্রতিবছর ১৭.৯ মিলিয়ন বা এক কোটি ৭৯ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়। যার শতকরা ৩১% মানে প্রতিবছর ১০০ জনের মধ্যে ৩১ জন মানুষ মৃত্যুবরণ করে। প্রতি বছর পুরুষ ও মহিলা প্রায় ছয় লক্ষ পঞ্চান্ন হাজার মৃত্যুবরণ করে। এইজন্য আমাদের উচিত স্বাস্থ্যের মূল্যায়ন করা।

    হার্টের রোগীর খাবারের তালিকা

    সুস্বাস্থ্য আমাদের পরম বন্ধু । আমাদের হৃদরোগ থেকে বাঁচার জন্য সঠিক খাবারগুলো নির্বাচন করতে হবে। আমরা চোখের সামনে যা পাই তাই খাই এমনটি করা যাবেনা । এতে করে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়।
    • সোডিয়ামযুক্ত খাবার খেলে উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে। হৃদরোগের জন্য ঝুঁকির কারণ হচ্ছে উচ্চ স্যাচুরেটেড এবং ট্রান্স ফ্যাট যুক্ত খাবার। এই খাবার খেলে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে। যা থেকে হৃদরোগের জন্য ঝু্কির কারণ হতে পারে।
    • যে সকল খাদ্যের স্যাচুরেটেড ও ট্রান্স ফ্যাট কম থাকে এবং ফাইবার বেশি থাকে। যা কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
    • অধিক ক্যালরি ও কম্পোস্টিকর খাবার গ্রহণ করলে ওজন বৃদ্ধি পায়। যার হৃদ রোগের ঝুঁকির কারণ হতে পারে। পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করলে হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
    মাছঃ মাছ আপনার স্বাস্থ্যের প্রদাহ কমাতে এবং হৃদপিন্ড ভালো রাখতে সহায়তা করে। সপ্তাহে অন্তত দুইবার চর্বিযুক্ত মাছ খেতে হবে। বৈজ্ঞানিকরা গবেষণা করে পেয়েছেন যে, চর্বিযুক্ত মাছে ওমেগা ৩ ফ্যাট এসিড আছে। যার হৃদ রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

    অ্যান্টিঅক্সিডেন্টঃ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যুক্ত খাবার প্রদাহ কমাতে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। আমেরিকার জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনে গবেষণায় পাওয়া গেছে যে, বেরি যুক্ত খাবার ৮ সপ্তাহ খেলে আপনার হার্টের অ্যান্ডোথেলিয়ালকে উন্নত করে। বেরি জাতীয় খাবার যেমন স্ট্রবেরি এবং রাম্পবেরিতে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

    বাদামঃ বাদাম একটি সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্যকর খাবার। যাতে রয়েছে স্বাস্থ্যকর চর্বি ফাইবার এবং প্রোটিন। যা কোলেস্টেরলের মাত্রা উন্নত করে এবং আপনার স্বাস্থ্য কমাতে সাহায্য করে। আমেরিকান কলেজ অফ কার্ডিওলজি জার্নালি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, বাদাম করোনারি হৃদরোগের ঝুঁকি ৩৭% পর্যন্ত কমাতে পারে।

    একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে যে এলডিএল কমাতে সাহায্য করে। খারাপ কলেস্টরল কমাতে এবং ভালো কোলেস্টেরল বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। যা এইচডিএল কোলেস্টেরল। সুতরাং বাদাম হৃদরোগ দূর করতে সাহায্য করে।

    ডার্ক চকলেটঃ ডার্ক চকলেট একটি সুস্বাদু খাবার এবং স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। ডার্ক চকলেট আপনার হৃদরোগের জন্য অনেক ভালো কাজ করে। এটিতে বেশি পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সাইডেন্ট রয়েছে। রক্ত চলাচলের সাহায্য করে। এমনকি ব্লাড প্রেসার কমাতেও সাহায্য করে। এইচডিএল কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।

    আমেরিকার জার্নাল অফ নিউট্রিশন প্রকাশিত একটি গবেষণায় পাওয়া গেছে যে, প্রাপ্তবয়স্কদের ওজন কমাতে সাহায্য করে ডার্ক চকলেট।

    শাকসবজিঃ বেশি বেশি শাকসবজি খেতে হবে। যেমন পালং শাক পাতাকপি ফুলকপি পটল ইত্যাদি। এগুলোতে ভিটামিন মিনারেলস এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে। হৃদরোগের ঝুঁকি কমাই এবং ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখে।

    ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে গবেষণায় প্রকাশিত হয়েছে যে, প্রতিদিন শাক-সবজি খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি ১৬% পর্যন্ত কমায়। সবুজ শাক সবজির মধ্যে রয়েছে ভিটামিন কে, ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়ামের মত ভিটামিন। শাক সবজির মধ্যে কেলারি কম এবং ফাইবার বেশি থাকে ওজন কমাতে সাহায্য করে। সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।

    হার্ট ভালো আছে বুঝার উপায়

    হৃদরোগ হওয়ার পিছনে মূল কারণ হচ্ছে স্বাস্থ্যের প্রতি অসচেতনতা। দিন দিন হৃদরোগের রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। প্রতিবছর শতকরা ৩১ শতাংশ মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয়। আজকে আমরা জানবো হৃদরোগের কিছু লক্ষণ সম্পর্কে।

    বুকের ব্যথাঃ বুকে ব্যথা হলে এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। কারণ বুকে ব্যথা হার্টের সমস্যার অন্যতম প্রধান কারণ। তাই বুকের ব্যথা হলে হার্টের সমস্যা হতে পারে। এই বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

    কাশিঃ যদি দেখেন যে অনেকদিন হয়ে গেছে কাশি থামছে না। কাশতে কাশতে রক্ত বের হয়ে যাচ্ছে। তাহলে হার্টের সমস্যা হতে পারে। এই ব্যাপারে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

    পিঠে ব্যথাঃ পিঠে ব্যথা অবহেলা করবেন না। আমরা অনেকেই মনে করি পিঠে ব্যাথা হলে হয়তো গ্যাসের সমস্যা। গ্যাসের সমস্যার কারণে পেট ব্যথা করে না। যদি দেখেন যে সব সময় পিঠে ব্যথা করছে। তাহলে অবহেলা নয় এটি হার্টেরও সমস্যা হতে পারে। এই ব্যাপারে সরাসরি চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

    ক্লান্তিঃ যদি দেখেন যে কোন রকম কোন পরিশ্রম ছাড়াই নিজেকে ক্লান্ত মনে হচ্ছে। হার্টের সমস্যার কারণে এমনটি হয়ে থাকে।

    পালস কত থাকা উচিত

    এই পালস রেটের মাধ্যমে জানা যায় আপনার শারীরিক অবস্থা। কিছু স্বাস্থ্য সচেতন ব্যক্তির রয়েছে। যারা নিয়মিত তাদের স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখে। আর নিয়মিত তাদের পালস রেট চেক করে। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতি মিনিটে পালসের ৬০ থেকে ১০০ থাকলে স্বাভাবিক। পালস রেট ৬০ এর কম হয় এবং যদি পালস রেট ১০০ এর উপরে হয়। তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ

    নিতে হবে। তবে বয়স ভেদে পালসের ভিন্ন হয়ে থাকে। যে সকল শিশুর বয়স ছয় মাস থেকে এক বছর হয় তাদের পালসেট ১০০ থেকে ১৫০ স্বাভাবিক। পরিশ্রমের কারণে ও পালস রেট ওঠা নামা করে। সেক্ষেত্রে ভয়ের কিছু নেই। কারণ পরিশ্রমের কারণে একজন ব্যক্তির হার্টবিট ওঠা নামা করে।

    শেষ কথা

    প্রিয় পাঠকগণ, নিশ্চয়ই এই পোস্টটি থেকে হার্টের রোগীর খাবারের তালিকার বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। যদি আপনারা এই পোস্টটি পড়ে উপকৃত হন। তাহলে অবশ্যই আপনি আপনার বন্ধু এবং পরিবারের সাথে পোস্টটি শেয়ার করুন। আর পরবর্তী পোস্টগুলো পড়ার জন্য আপনাকে আমন্ত্রণ জানানো হলো। পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। ভালো থাকুন আপনি আপনার পরিবারকে নিয়ে আসসালামুআলাইকুম।

    এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

    পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
    এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

    এসএইচ নিউজস্টোরের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

    comment url