ফোড়া পাকানোর ঘরোয়া উপায় কি - পাছায় ফোড়া হলে করণীয় কি

ফোড়া পাকানোর ঘরোয়া উপায় কি এবং পাছায় ফোড়া হলে করণীয় গুলো কি কি এর সাথে আরো অনেক গুলো বিষয় রয়েছে। যা আপনি ফোড়া পাকানোর ঘরোয়া উপায় কি এর আর্টিকেলটি পড়লে জানতে পারবেন। যে সকল ব্যক্তিদের শরীরে ফোড়া হয়েছে তারাই শুধু জানে, ফোড়া কতটা যন্ত্রণাদায়ক ও বিরক্তকর। আর এই বিরক্তকর এবং যন্ত্রণাদায়ক ফোড়া থেকে মুক্তি পেতে হলে ফোড়া পাকানোর ঘরোয়া উপায়টি জানতে হবে।
ফোড়া পাকানোর ঘরোয়া উপায় কি - পাছায় ফোড়া হলে করণীয় কি
    পোস্টসূচিপত্রঃ 

    ভূমিকা

    ফোড়া যাকে ইংরেজিতে Boils বলা হয়। ফোড়া হলো একটি ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ। যা একজন ব্যক্তির জন্য খুবই বেদনাদায়ক এবং বিরক্তিকর হতে পারে। ফোড়া মূলত আপনার ত্বকের নিচের ছোট ছোট লোমকূপগুলির কারণে ও গঠিত হয়। ফোড়া শরীরের এমন জায়গায় গুলোতে হয়। যেখানে মূলত প্রতিনিয়ত চাপ ও ঘর্ষণ অনুভব করে। যেমন ধরেন আপনার মুখ বা ত্বক, বগল, কাঁধ এবং পাছা ইত্যাদি মূলত এই সকল জায়গায়তে বেশি ফোড়া হয়ে থাকে। এই কয়েকটি জায়গার মধ্যে সবচাইতে বেশি পাছায় ফোড়া হয়। আর পাছায় ফোড়া হলে করণীয় কি কি সেগুলো জেনে নিন।

    ফোড়া পাকানোর ঘরোয়া উপায়

    আজকে আমি বলে দিবো কিভাবে আপনি ঘরোয়া উপায়গুলো ব্যবহার করে। সম্পূর্ণভাবে শরীরের যে কোন স্থান থেকে ফোড়া দূর করতে পারবেন। আমি যে ঘরোয়া উপায় গুলো আপনাকে বলে দিবো তা সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়।

    আর আমি আশা করি এগুলো মেনে চললেই আপনি ফোড়া থেকে মুক্তি পাবেন। সম্পূর্ণভাবে ফোড়া থেকে মুক্তি পেতে আপনি এখন কি কি করতে পারেন। সেগুলো আমি সম্পূর্ণ আপনাকে এই পোষ্টের মাধ্যমে বলে দিবো। সুতরাং পুরো পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ে আমাদের সাথে থাকুন।

    চা গাছের তেল : সর্বপ্রথম যে ফোড়া পাকানোর ঘরোয়া উপায়টি বলে দিবো সেটি হলো চা গাছের তেল। হ্যাঁ আপনি ঠিকই পড়েছেন চা গাছের তেল। কারণ শক্তিশালী এন্টি ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিসেপটিক। এই ব্যাকটেরিয়া গুলো আপনার পাছায় ফোড়া এবং ত্বকসহ যে কোন স্থানে ফোড়া হওয়ার জন্য দায়ী। 
    তাই এই ফোঁড়া থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য। এই ঘরোয়া উপায়টি মেনে চলুন। এই ব্যাকটেরিয়া গুলো আপনার চুলের মধ্যে থাকা ছোট ছোট ফলিকলগুলোকে আক্রমণ করে যার ফলে ফোড়া হয়। আর এই শক্তিশালী ব্যাকটেরিয়াগুলোকে দূর করার জন্য চা গাছের তেল অনেক ভালো কাজ করে। 

    চা গাছের তেলের মধ্যে রয়েছে Cyclic Monoterpenes যা টেনপিনেন 4ol এর সাথে সম্পর্কিত। যা আপনার শরীর থেকে ফোড়া নিরাময় করার জন্য অনেক ভালো কাজ করে। তবে এটি ব্যবহারের নিয়ম জানতে হবে। এটি ব্যবহারের নিয়ম হল পাঁচ ফোটা ট্রিয়াল, ১ চা চামচ নারকেল তেলের সাথে মিশিয়ে। তারপর এটি তুলার মধ্যে নিয়ে দিনে ২ বার ফোড়া স্থানটিতে লাগাতে পারেন। দেখবেন ফোড়া ভালো হয়ে যাবে আস্তে আস্তে এবং আপনি আরাম পাবেন।

    হলুদের গুঁড়া : হলুদের গুঁড়া ফোড়া পাকানোর ঘরোয়া উপায় হিসেবে খুবই কার্যকরী। হলুদের গুঁড়ার মধ্যে এমন কিছু কার্যকরী বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা ফোড়া পাকানোর জন্য খুবই উপযুক্ত। হলুদের গুড়া শুধু ফোড়া পাকানোর কাজে ব্যবহার করা হয় না। পাশাপাশি এটি আপনার ফোড়া সাড়াতেও খুবই কার্যকরী ভূমিকা রাখে। 

    হলুদের গুড়া মধ্যে রয়েছে Antibacterial এবং anti-inflammatory Properties এর মত বৈশিষ্ট্য। যা কারকিউমিন নামে পরিচিত। এখন কথা হচ্ছে আপনি হলুদের গুড়া কিভাবে ব্যবহার করবেন। আর এটি ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি কিভাবে ফোড়া দূর করবেন। এর জন্য আপনাকে কিছু পরিমাণ আদা নিতে হবে। তারপর সেটিকে পাটা দিয়ে বেটে ভালো করে পেস্ট করে নিন। 
    এবার পেস্ট কৃত আদা এবং হলুদের গুড়া একসাথে ভালো করে মিক্স করে নিন। তারপরে শরীরের যে স্থানটিতে ফোড়া হয়েছে। ঐ স্থান গুলোতে দিনে ২ বার করে লাগাতে থাকেন। তাহলে দেখবেন আপনার ফোড়া ভালো হয়ে গেছে। তাহলে আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন ফোড়া পাকানোর ঘরোয়া উপায়ে। কিভাবে ফোড়া দূর করতে পারবেন।

    এপসম লবন: সাধারণত আমরা সবাই জানি লবণ শুধু রান্নাবান্নার কাজে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু এখন আমরা জানবো কিভাবে এপসম লবণ ব্যবহার করে। ফোড়া পাকানোর ঘরোয়া উপায় হিসেবে ব্যবহার করা যায়। আসুন জেনে নেই। সাধারণত এপসম লবণ ম্যাগনেসিয়াম সালফেট হেপটোহাইড্রেট নামে পরিচিত। ইপসম লবন এবং গরম পানি ভালো করে একসাথে মিশিয়ে নিন। 

    তারপর দেখবেন যে গরম পানির ভাব বের হচ্ছে। পানির ভাবটি একটি কাপড় দিয়ে শুষিয়ে ভিজিয়ে ফেলুন। এভাবে করে ২০ থেকে ২৫ মিনিট ফোড়া স্থানটিতে কাপড়টি লাগাতে থাকেন। এইরকম করে দিনে ৩ বার লাগাবেন। এখন আপনি লক্ষ্য করবেন যে ফোড়া স্থানটি আর যন্ত্রণা করছে না। ফোড়া স্থানটি শান্ত করতে সাহায্য করে এবং আপনাকে আরাম দেয়।

    নিমপাতা: এখন আমি যে ফোড়া পাকানোর ঘরোয়া উপায়টি বলবো। এটি শুধু ফোড়া নিরাময়ে কাজে লাগেনা। আরো অনেক রোগ রয়েছে যেগুলোর প্রতিষেধক। সেটি হলো নিমপাতা। নিম পাতার মধ্যে এমন তিনটি উপাদান রয়েছে। যা আপনার ফোড়া নিরাময়ের জন্য সব থেকে উত্তম এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। 

    নিম পাতার মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিসেপটিক, অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল এবং এন্টিমিক্রোবিয়াল। এই শক্তিশালী উপাদান গুলো ফোড়া পাকানোর ক্ষেত্রে এবং ফোড়া নিরাময় করতে সাহায্য করে। এই নিম পাতা আয়ুর্বেদিকেেে ব্যাপকহার ব্যবহার হয়। কিভাবে ব্যবহার করবেন। তা জেনে নিন। 

    প্রথমে নিমপাতা ভালো করে পাটাতে বেটে পেস্ট করে নিন। তারপর পেস্টকৃত নিমপাতা ফোড়ার স্থানটিতে লাগান। অবশ্যই দিনে কমপক্ষে তিন থেকে চার বার ফড়ার স্থানটিতে লাগাতে হবে। আশা করা যায় আপনি এই ফোড়ার ঘরোয়া উপায়টি জেনে উপকৃত হয়েছেন।

    মসুরের ডাল: আপনি কি জানেন মসুরির ডাল ফোড়া পাকানোর ঘরোয়া উপায় হিসেবে কতটি কার্যকর। না জেনে থাকলে আমি জানিয়ে দিচ্ছি। আপনার শরীরের যে স্থানটিতে ফোড়া রয়েছে। ঐ স্থানটিতে মসুরের ডাল লাগালে ফোড়া পেঁকে যাবে। মসুর ডাল ব্যবহারের নিয়ম। 

    প্রথমে একটি পাত্রে ৫০ গ্রাম মুসুরির ডাল নেন। অবশ্যই মসুর ডালটাকে ভালো করে ধুয়ে নিবেন। তারপরে একটি পাটাতে মসুর ডাল নিয়ে ভালো করে বেটে পেস্ট করে নিন। তারপরে শরীরের যে স্থানটি ফোড়ায় আক্রান্ত। ঐ স্থানটিতে লাগিয়ে দিন। অবশ্যই নিয়মিত দিনে ৩ থেকে ৪ বার লাগাতে হবে। তারপরে দেখবেন ইনশাআল্লাহ আপনার ফোড়াটি পেকে গেছে।

    নিশিন্দা পাতা: আপনারা কেউ কি জানেন নিশিন্দা পাতার রস, ফোড়া পাকানোর ঘরোয়া উপায় হিসেবে ব্যবহত হয়। আমি জানি আপনারা অনেকেই জানেন না। তাহলে আসুন জেনে নেই নিশিন্দা পাতার রস ব্যবহার করে কিভাবে ফোড়া পাকানো যায়। আপনারা অনেকেই হয়তো তিলের তেল চিনে থাকবেন। 

    ব্যবহারের নিয়ম: প্রথমে নিশিন্দা পাতা ভালো করে ধুয়ে একটি পাটাতে ভালো করে বেটে পেস্ট করে নিতে হবে। তারপর ঐ বেস্ট কৃত নিশিন্দার পাতা এবং তিলের তেল ভালো করে মিশিয়ে শরীরের যে স্থানে ফোড়া রয়েছে ঐ স্থানে লাগিয়ে দিন। অবশ্যই দিনে কমপক্ষে ৩ থেকে ৪ বার লাগাতে হবে। এতে করে আপনার ফোড়ার ব্যথা কমবে এবং ফোড়াটি দ্রুত পাকাতেও সাহায্য করবে।

    পানের পাতা ও ঘি: আপনি কি জানেন পানের পাতা ও ঘি যৌথভাবে ব্যবহার করে ফোড়া পাকানো সম্ভব। আমি জানি আপনি জানেন। তারপরও আর একবার জেনে নিন। পানের পাতা ফোড়া পাকানোর ঘরোয়া হিসেবে খুবই কার্যকরী একটি উপাদান। 

    আর ফোড়া পাকানোর জন্য যে কাজটি আপনাকে করতে হবে। তাহলে পান পাতার উপরে ভালোভাবে ঘি মাখিয়ে, তারপরে শরীরের যে স্থানটিতে ফোড়া রয়েছে আগিয়ে ২০ থেকে ২৫ মিনিট রাখুন। কিন্তু অবশ্যই ঘি খাঁটি হতে হবে। এতে করে দেখবেন আপনার ফোড়াটি পেকে গেছে এবং কিছু দিনের মধ্যে ফেটে যাবে।

    পেঁয়াজের রস: পেঁয়াজের রস ফোড়ার ব্যাথা কমাতে এবং ফোড়া পাকানোর ঘরোয়া উপায়ের ক্ষেত্রে খুবই কার্যকরী একটি উপাদান। এই উপাদানের সঠিক ব্যবহার করার জন্য আপনাকে যা করতে হবে। প্রথমে পিয়াজটি ভালো করে ধুয়ে নিন। 

    এরপরে একটি পাটাতে পেঁয়াজটি ভালো করে বেটে রস বের করে নিন। তারপরে শরীরের যে স্থানগুলোতে ফোড়া রয়েছে। ঐ স্থানগুলোতে লাগিয়ে দিন। অবশ্যই দিনে ২ থেকে ৩ বার ফোড়া স্থানটিতে লাগাতে হবে।

    অর্জুন গাছের পাতা: ফোড়া পাকানোর ক্ষেত্রে অর্জুন গাছের পাতা খুবই কার্যকরী একটি উপাদান। অর্জুন পাতা ভালো করে ধুয়ে। পাটাতে বেটে তা থেকে রস বের করে নিতে হবে। এরপরে পাতার রস শরীরের যে স্থানটিতে ফোঁড়া আছে। ঐ স্থানগুলোতে লাগিয়ে দিন। দেখবেন ফোড়া পেকে গেছে। এমনকি অর্জুন পাতা ফোড়ার ঘা শুকানোর ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হয়।

    পাছায় ফোড়া হওয়ার কারণ

    পাছায় ফোড়া হওয়ার নির্দিষ্ট কোন কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। তবে মনে করা হয়। এমন কিছু কারণ রয়েছে যেগুলো দ্বারা পাছায় ফোড়া হতে পারে। তাহলে দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক। পাছায় কোন কারণগুলোর জন্য ফোড়া হতে পারে।
    • পাছার মলদ্বার যদি অপরিষ্কার থাকে সেই ক্ষেত্রে ফোড়া হতে পারে। অতএব মলদ্বার সবসময় পরিষ্কার রাখতে হবে।
    • পাছায় মলদ্বারের ফোড়া হওয়ার আরেকটি কারণ হলো জন্মগত ভাবে সমস্যা। জন্মগতভাবে কারো যদি মলদ্বারের কাছে গ্ল্যান্ডের সমস্যা থাকে। তাহলে পাছায় ফোড়া হতে পারে।
    • পাছায় যদি দীর্ঘমেয়াদি কোন ইনফেকশন থেকে থাকে। তাহলে ফোড়া হওয়ার জন্য এটি একটি কারণ।
    • অনেকের ডায়াবেটিসের কারণেও পাছায় ফোড়া হয়ে থাকে। সাধারণত যাদের দীর্ঘ মেয়াদী ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে বেশি হয়ে থাকে।
    • আবার যাদের কিডনি ডিসিজ জনিত সমস্যা রয়েছে। তাদের পাছায় ফোড়া হওয়ার এটি একটি কারণ। অতএব যাদের কিডনি ডিসিজ জনিত সমস্যার রয়েছে। তাদের পাছায় ফোড়া হতে পারে।
    • সর্বশেষ যে কারণটি আমি বলতে চাই। সেটি হল যাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। তাদের ক্ষেত্রে পাছায় ফোড়া হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

    পাছায় ফোড়া হলে করণীয়

    পাছায় ফোড়া অনেক কষ্টদায়ক ও বেদনাদায়ক হয়ে থাকে। কারণ পাছায় ফোড়া হলে মলত্যাগের সময় সমস্যা হয়। বসে থাকতে সমস্যা হয়। ঘুমোতে গেলে সমস্যা হয়। এমনকি যেকোনো কাজের ক্ষেত্রে এটি সমস্যা বয়ে আনে। পাছায় ফোড়া হলে তীব্র ব্যথার সাথে জ্বর হয়। আবার দেখা যায় যে, অনেকের প্রস্রাব ও পায়খানা বন্ধ হয়ে যায়। 

    এই জন্য পাছায় ফোড়া পাকানোর ঘরোয়া উপায় বা এগুলো গুরুতর সমস্যা হলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। পাছার ফোড়া যদি সঠিক সময় চিকিৎসা না করা হয়। তাহলে পাছার ফোড়াটি ফিস্টুলায় পরিণত হতে পারে। এই ফিস্টুলা সাধারণত ওষুধ খাওয়ার মাধ্যমে ভাল হয় না। 

    শুধু ফিস্টুলাই না ফোড়াও সাধারণত ঔষধ ভালো হয় না। এই পাছায় ফোড়া ভালো হওয়ার জন্য যে করণীয় রয়েছে। তাহলো আপনার পাছার ফোড়াটির প্রাথমিক অবস্থায় পুচ বের করে ফেলুন। তাহলে কি হবে, আপনার পাছার ফোড়াটি ফিস্টুলায় পরিণত হবে না।ফোড়া সাধারণত দুই রকমের হয়ে থাকে। সাধারণ ফোড়া এবং জটিল ফোড়া। 

    সাধারণ ফোড়া গুলোতে পুঁজ বের করে ফেললেই এটি ভালো হয়ে যায়। কিন্তু জটিল পড়ার ক্ষেত্রে এটি ফুস্টোলায় পরিণত হয়। তবে ঘাবড়ানোর কিছু নাই। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আপনি ডাক্তারের শরণাপন্ন হন। ডাক্তারের কথা অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করুন। ইনশাল্লাহ ভালো হয়ে যাবে।

    ফোড়া উঠলে যা করবেন বা করা যাবে না

    আমাদের শরীরে ফোড়া উঠলে ফোড়াটি না ফাটানো পর্যন্ত মানসিক শান্তি পায় না। সাধারণত ইনফেকশনের কারণেই শরীরে ফোড়া হয়। যখন শরীরে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ করে। তখন এই ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য শরীরের ইউমিন সিস্টেম শ্বেত রক্তকণিকা পাঠায়। 

    এই আক্রমণের ফলে শরীরের কিছু টিস্যু মারা যায় এবং সেই স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়। আর এর ফলেই সৃষ্টি হয় ফোড়া। এই ফোঁড়া থেকে মুক্তি পেতে ১ মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। এখন ফোড়া উঠলে যা করা যাবে না।

    ফোড়া ফাটানো যাবে না: আমাদের শরীরে ফোড়া উঠলে সেটিকে ফাটানো যাবে না। শরীরে ফোড়া উঠলে সেটিকে ফাটানোর জন্য মনে তীব্র আকাঙ্ক্ষা জাগে। কিন্তু এই আকাঙ্ক্ষাকে দমিয়ে রাখতে হবে। এটিকে নিজে নিজে ফাটতে দিন। কারণ এটিকে খোঁচালে বা চাপ দিলে এর ব্যাকটেরিয়া গুলো গভীরে চলে যেতে পারে।

    ব্যথা কমানোর ঔষধ: সাধারণত শরীরের যেকোন স্থানে ফোড়া উঠলে তীব্র ব্যথা বা যন্ত্রণা হয়। এই ফোড়া হওয়ার কারণে যেকোনো কাজ করতে গেলে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। যেমন পাছায় ফোড়া হলে ঘুমাতে গেলে তীব্র ব্যথা লাগে। তাই এই সমস্যা থেকে সমাধান পেতে হলে। আপনি আইবুপ্রফেন সেবন করে এর ফলাফল দেখতে পারেন।

    গরম পানি ব্যবহার করুন: আপনার শরীরের ফোড়াটি যদি ফেটে যায় এবং সেখান থেকে পূজ বের হতে শুরু করে। তাহলে পুঁজ বের হয়ে যেতে দিন। তারপর যেটি করবেন ঐ স্থানটিতে সাবান এবং হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। আবার বিকল্প একটি পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন। সেটি হল রাবিং অ্যালকোহল।

    ব্যান্ডেজ: পুজঁ বের হয়ে যাওয়া স্থানটিতে ব্যান্ডেজ করে দিন। এর ফলে ইনফেকশন আর কোথাও ছড়াতে পারবে না। অতএব, ক্ষতস্থানটিতে ব্যান্ডেজ করে রাখুন এবং দিনে কমপক্ষে একবার করে এটিকে চেঞ্জ করুন।

    হাত ধৌত: ফোঁড়ার সংস্পর্শে হাত চলে গেলে সাবান এবং পানি দিয়ে হাত ধৌত করুন। কারণ ফোঁড়াতে থাকা ব্যাকটেরিয়া আপনার শরীরে যেন আর ছড়াতে না পারে। এইজন্য খুবই সাবধান ফোড়া থেকে পূজ বের করার পরে ভালো করে হাত ধৌত করে ফেলুন।

    জিনিস বা কাপড় ব্যবহার: যে সকল কাপড় বা জিনিস পড়ার সংস্পর্শে এসেছে ঐ সকল কাপড় কারো সাথে শেয়ার করবেন না। ওতে থাকা ব্যাকটেরিয়া ছড়াতে পারে। যেমন গামছা, সাবান এবং ফেস ওয়াশ ইত্যাদি ব্যবহার যোগ্য জিনিস শেয়ার করা যাবে না।

    চিকিৎসকের পরামর্শ: যদি দেখেন আপনার শরীরের ফোড়াটি পাকছে না বা পাকলেও এটি থেকে আপনি মুক্তি পাচ্ছেন না। তাহলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কারণ এটি থেকে আরও গুরুতর সমস্যার সম্ভাবনা রয়েছে।

    ফোড়া হলে কি ওষুধ খাবো

    সাধারণত শরীরে ফোড়া উঠলে কোন ঔষধ কাজ করে না। এর জন্য কিছু ফোড়া পাকানোর ঘরোয়া উপায় বা পদ্ধতি রয়েছে। সেগুলো অনুসরণ করতে পারেন। তবুও আপনার যদি মনে হয় ফোড়া থেকে মুক্তি পেতে হলে ঔষুধ খাওয়া দরকার। তাহলে আপনি ডাক্তারের শরণাপন্ন হন এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সেবা নিন।

    ফোড়া সারতে কত সময় লাগে?
    সাধারণত ফোড়া সারতে এক মাস সময় লাগতে পারে।

    ফোড়া থেকে কি ক্যান্সার হয়?
    হ্যাঁ ফোড়া থেকে স্কিন ক্যান্সার হতে পারে।

    ফোড়া হলে কি খাওয়া যাবে না?
    ফোড়া হলে টক জাতীয় জিনিস খাওয়া যাবে না।

    ফোড়ার এন্টিবায়োটিক ওষুধের নাম কি?
    Sefril 250
    Cephran 500
    Doxin 100
    Flux 500
    Levox 500
    Cef-3 ds

    উপসংহারঃ ফোড়া পাকানোর ঘরোয়া উপায় কি

    পরিশেষে বলা যায় যে, ফোড়া পাকানোর ঘরোয়া উপায় এবং পাছায় ফোড়া হলে করণীয় এই বিষয়গুলো পড়ে যা আপনি জেনেছেন এবং বুঝেছেন সেগুলো প্রয়োগ করুন। এরপরে যদি ফোড়াটি এক মাসের মধ্যে বা তার কম সময়ের মধ্যে যদি কোন প্রতিকার না পাওয়া যায়। তাহলে আপনি যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং সে অনুযায়ী সেবা গ্রহণ করুন।

    শেষ কথা: পাঠক আসসালামু আলাইকুম। ফোড়া পাকানোর ঘরোয়া উপায় এবং পাছায় ফোড়া হলে করণীয় এই সকল বিষয়গুলো জেনে যদি আপনি উপকৃত হন। তাহলে আপনার পরিবার এবং বন্ধুদের সাথে পোস্টটি শেয়ার করুন এবং পরবর্তী পোস্টটি পড়ে আমাদের সাথেই থাকুন। ভালো থাকবেন ধন্যবাদ।

    এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

    পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
    এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

    এসএইচ নিউজস্টোরের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

    comment url