টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি গুলো জেনে নিন

টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি যদি জানতে চান তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি এই বিষয়গুলোর পাশাপাশি টাইগার মুরগী খামার দেওয়ার জন্য আরও যে বিষয়গুলো প্রয়োজন। ওই সব বিষয়গুলো রয়েছে।
টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি গুলো জেনে নিন
টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি খুবই জনপ্রিয়। কারণ টাইগার মুরগি পালনের মাধ্যমে অধিক লাভজনক হওয়া যায়। আপনি চাইলে এই মুরগিগুলো খামারের মাধ্যমেও পালন পারেন। আবার চাইলে খোলা আকাশের নিচে আলো বাতাসের মাঝেও পালন করতে পারেন। আর এই মুরগিটি অধিক লাভজনক বলে গণ্য করা হয়।
পোস্ট সূচিপএঃ 

    ভূমিকা

    টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি প্রত্যেক খামারেরই জানা উচিত। সোনালি মুরগি ও দেশি মুরগি এগুলো কোন না কোন জাতের মধ্যে পড়ে কিন্তু টাইগার মুরগির কোন জাত নেই। টাইগার মুরগির বৈজ্ঞানিক নাম হলো সিপিএফ থ্রি এবং বাংলায় একে টাইগার মুরগি বলে। টাইগার মুরগী বলার কারণ এই মুরগির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি। আর এই মুরগি ওজনে অন্য সকল মুরগির থেকে বেশি হয় এবং তাড়াতাড়ি ওজনেও বাড়ে। টাইগার মুরগির পালনের জন্য খাবার তালিকা এবং এর প্রতিরোধ ক্ষমতা আরো বৃদ্ধি করার জন্য ভ্যাকসিনের তালিকা জানা দরকার।

    টাইগার মুরগি পালন পদ্ধতি

    বাংলাদেশে টাইগার মুরগি পালন করার পদ্ধতি খুবই সহজ আবার খুব কঠিন। এর কারণ হচ্ছে টাইগার মুরগি, দেশি মুরগি এবং সোনালি মুরগি পালন পদ্ধতি প্রায় একই রকম। আমাদের দেশে টাইগার মুরগি পালনের জনপ্রিয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। 
    এর কারণ হলো টাইগার মুরগি পালনে অধিক লাভবান হওয়া যায়। তবে সেটি সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে। প্রথমে কম টাকা ইনভেস্ট করে ব্যবসার মাধ্যমে এই ব্যবসাটি বুঝতে হবে। তারপরে যখন আপনি বুঝতে পারবেন যে এখন বড় একটি এমাউন্ট বা টাকা ইনভেস্ট করলে আপনি লাভবান হবেন।

    তখন বড় একটি অ্যামাউন্ট ইনভেস্ট করুন। কারণ আপনার যদি কোন বিষয়ে অভিজ্ঞতা না থাকে তাহলে আপনি কখনোই লাভবান হতে পারবেন না। বিনা অভিজ্ঞতায় লাভবান হওয়ার সুযোগ খুব কম থাকে। সুতরাং টাইগার মুরগি পালনের পদ্ধতি গুলো জেনে সে অনুযায়ী আস্তে আস্তে মুরগি লালন পালন করুন এবং নিজের অভিজ্ঞতা বাড়ান।
    • টাইগার মুরগি গরমের সময় ব্রিডিং হতে সাত থেকে আট দিন সময় লাগে এবং শীতের সময় চৌদ্দ থেকে পনেঁর দিন সময় লাগে।
    • এই মুরগিটি কেজিতে আসতে চল্লিশ দিনের মতো সময় লাগে। যেখানে সোনালী ও দেশি মুরগি কেজিতে আসতে ষাট থেকে পঁয়ষট্টি দিন সময় লাগে।
    • টাইগার মোরগের ওজন দশ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে এবং টাইগার মুরগির ওজন পাঁচ থেকে ছয় কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে।
    • আপনি চাইলে মুরগিগুলো খামারের মধ্যে রেখে পালন করতে পারেন আবার খোলা আকাশের নিচে ছেড়ে দিও পালন করতে পারেন।
    • টাইগার মুরগি বছরে দুইশত থেকে তিনশত টি পর্যন্ত ডিম দিয়ে থাকে।
    • এই মুরগির বাচ্চার দাম সর্বনিম্ন একশ টাকা এবং সর্বোচ্চ একশ দশ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে এর দাম সময় ভেদে পরিবর্তন হয়।
    • এই মুরগি সম্পূর্ণরূপে ডিমে আসতে সময় লাগে প্রায় একশ ষাট থেকে একশ আশি দিনের মতো।
    মুরগিগুলো সাধারনত প্রত্যেক দিন গড়ে একশ ত্রিশ গ্রাম পর্যন্ত খাবার খেয়ে থাকে। তবে টাইগার মুরগি ওজন ভেদে নিজের খাদ্য গ্রহণ করে। টাইগার মুরগি পালনের সময় খামারের আশপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। যাতে করে মুরগি কোন ধরনের রোগে আক্রান্ত না হয়। 

    অধিক শীতে বা শীতের সময় মুরগির খামারের ভেতরে যেন কোন ধরনের ঠান্ডা বায়ু চলাচল না করতে পারে সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে। শীতের সময় এই মুরগিগুলোকে অন্য সকল মুরগির থেকে আলাদা রাখতে হবে। শীতের সময় খেয়াল রাখতে হবে মুরগি যে মেঝের উপরে থাকে সেটি যেন পরিষ্কার এবং শুকনো থাকে। 

    শীতের কিছুদিন আগেই টাইগার মুরগিকে ভ্যাকসিন দিতে হবে। টাইগার মুরগি পালনের জন্য অবশ্যই আপনাকে উপযুক্ত একটি স্থান নির্ধারণ করতে হবে। যেখান থেকে মুরগি আলো ও বাতাস গ্রহণ করতে পারে। টাইগার মুরগিকে অবশ্যই পুষ্টিকর খাদ্য দিতে হবে। 

    যেমন ভিটামিন, কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন এবং খনিজ যুক্ত খাবার। এর সাথে আপনার মুরগিকে পরিষ্কার পানি খাওয়াতে হবে। যাতে করে কোন ধরনের রোগ বালায়ে আক্রান্ত না হয়। এই মুরগি যদি কোন ধরনের রোগে আক্রান্ত হয় তাহলে অবশ্যই সরাসরি চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবে।

    পরিশেষে বলা যায় টাইগার মুরগি পালনের পদ্ধতি আরো অনেক রয়েছে। যেগুলো আপনি মুরগি পালন করার সময় আস্তে আস্তে শিখে যাবেন। তাই আপনি যদি টাইগার মুরগী পালনে লাভবান হতে চান। আর আপনার যদি সে বিষয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে জ্ঞান না থাকে। তাহলে আমি বলবো অল্প টাকা এবং নিম্ন পরিসরে শুরু করেন। দেখবেন ইনশাআল্লাহ আপনি এই ব্যবসায় লাভবান হবেন।

    টাইগার মুরগি পালনের সুবিধা

    • টাইগার মুরগি অন্যান্য মুরগির থেকে খুব তাড়াতাড়ি ওজন বাড়ে
    • অন্যান্য মুরগি থেকে টাইগার মুরগি কম রোগে আক্রান্ত হয়
    • এই মুরগির ওজন অন্যান্য মুরগি থেকে বেশি হয়আর 
    • এই মুরগি পালনের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে খুব তাড়াতাড়ি লাভবান হওয়া যায়
    • টাইগার মুরগি বিক্রয় খুবই তাড়াতাড়ি হয় যা অন্যান্য মুরগি থেকে এই মুরগির সুবিধা
    • এই মুরগিতে ডিম বিক্রির চেয়ে বাচ্চা বিক্রিতে বেশি লাভবান হওয়া যায়

    টাইগার মুরগির পালনের অসুবিধা

    • টাইগার মুরগির বাচ্চার দাম অন্যান্য মুরগির বাচ্চার দামের থেকে বেশি
    • এই মুরগি অন্যান্য সকল মুরগি থেকে বেশি খায়
    • আর সবচেয়ে বড় অসুবিধা হচ্ছে এই মুরগির বাচ্চা ভালো মানের পাওয়া খুবই কষ্টকর

    টাইগার মুরগির খাবার তালিকা

    যেকোনো মুরগি বৃদ্ধি ও সুস্থ থাকার জন্য তার খাবার এবং তা ভালো মানের খাবার হওয়া খুবই জরুরী। আর ঠিক তেমনিভাবে টাইগার মুরগি পালনের জন্য টাইগার মুরগির খাবার তালিকা অথবা খাদ্য তালিকা জানা অত্যন্ত জরুরী। কারণ এর মধ্যে অনেকটাই নির্ভর করে মুরগিটির ওজন কত তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি পাবে এবং মুরগিটি পুষ্টিহীনতায় ভুগবে কিনা। 
    তাই টাইগার মুরগি খাবারের তালিকায় কি কি খাদ্য রয়েছে তা জানা প্রয়োজন। টাইগার মুরগি ওজনে খুবই তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি পায়। মাত্র চল্লিশ দিনে এক কেজি হয়ে যায়। আর এই জন্যই অন্যান্য মুরগির তুলনায় টাইগার মুরগি খাবার বেশি খায়।

    ব্রয়লার স্টার্টার ফিডঃ এই ফিডটি ত্রিশ দিনের নিচের যে সকল টাইগার মুরগি রয়েছে তাদের খাবার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। এই ফিডটি প্রতি কেজি পঁয়ষট্টি থেকে সত্তর টাকা নিতে পারে। ত্রিশ দিনের নিচের টাইগার মুরগির জন্য এই ফিডটি অনেক পুষ্টিকর সম্পন্ন। তাই আপনার টাইগার মুরগির বাচ্চাগুলোকে এই ফিডটি খাওয়াতে পারেন।

    ব্রয়লার গ্রোয়ার ফিডঃ এই ফিডটি ত্রিশ দিনের উপরে যে সকল টাইগার মুরগি রয়েছে তাদের খাবার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। এই ফিডটি প্রতি কেজিতে সত্তর থেকে পঁচাত্তর টাকা নিতে পারে। অবশ্যই দেখে নিবেন এটি আসল নাকি নকল। 

    এই ফিডটি ও বড় টাইগার মুরগীদের জন্য খুবই উপকারী ও পুষ্টিকর। এটি শুধুমাত্র ত্রিশ দিনের উপরে যে সকল টাইগার মুরগি রয়েছে তাদেরকেই খাওয়াবেন। এই ফিডটি টাইগার মুরগি কে খাওয়ালে খুব অল্প দিনে মুরগি মোটা তাজা হয়ে যায়। সুতরাং টাইগার মুরগির খাবার তালিকায় এটি অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।

    লেয়ার লেয়ার ওয়ান ফিডঃ এই খাবারটি দুই মাস বয়সের উপরে যেই সকল টাইগার মুরগির রয়েছে তাদের খাবার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুন। এই ফিডের মধ্যে রয়েছে ঝিনুকের গুড়া, হাড়ের গুড়া এবং ভুট্টার গুড়া সহ আরো অনেক কিছুর মিশ্রণে এটি তৈরি। 

    অতএব এটি পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি ফিড বা খাবার। আপনার মুরগিটি যতদিন পর্যন্ত ফার্মে রাখবেন এবং ডিম পারবে ততদিন পর্যন্ত এই লেয়ার লেয়ার ওয়ান ফিডটি খাওয়াবেন। এখনই আপনার টাইগার মুরগির খাবারের মধ্যে এই ফিড অন্তর্ভুক্ত করুন।

    ভুট্টা ভাঙ্গাঃ ভুট্টা ভাঙ্গা টাইগার মুরগিদের খাদ্য হিসেবে অন্যান্য ফিডের সাথে দিতে পারেন। ভুট্টা ভাঙ্গা মুরগীদের শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে এবং এটি অনেক পুষ্টিকর ও উপকারী খাবার। সুতরাং আপনি টাইগার মুরগিদের অন্যান্য যে সকল ফিড রয়েছে। তাদের পাশাপাশি ভুট্টা ভাঙ্গা খাওয়াতে পারেন।

    চালের খুদঃ চালের খুদ অন্যান্য ফিডের সাথে বা পাশাপাশি খাওয়াতে পারেন। চালের খুদের মধ্যে রয়েছে অনেক ধরনের পুষ্টি যেমন ভিটামিন এবং প্রোটিন। তাই আপনার টাইগার মুরগীদের খাবার তালিকায় চালের খুদ অন্তর্ভুক্ত করুন।

    এক থেকে সাত দিনের বাচ্চার খাবার গ্রহণঃ প্রথম দিন পনেরো গ্রাম, দ্বিতীয় দিন ঊনিশ গ্রাম, তৃতীয় দিন চব্বিশ গ্রাম, চতুর্থ দিন ছাব্বিশ গ্রাম, পঞ্চম দিন ত্রিশ গ্রাম, ষষ্ঠ দিন তেত্রিশ গ্রাম এবং সপ্তম দিন আটত্রিশ গ্রাম খাবার খাই। সুতরাং আপনি চাইলে এভাবেও হিসাব করে টাইগার মুরগির বাচ্চাদের খাবার দিতে পারেন। তাহলে আপনার খাবার তালিকা কি পরিমান খাবার থাকবে তা হিসাব করতে সুবিধা হবে।

    পরিশেষে বলা যায় যে টাইগার মুরগির খাবার তালিকায় যে সকল খাবার উপরে দেখানো হলো। ওই সকল খাবারগুলো আপনার মুরগিকে নিয়ম মেনে খাওয়ান। দেখবেন ইনশাআল্লাহ আপনার মুরগি ওজন বৃদ্ধি পাবে এবং সুস্থ থাকবে। অবশ্যই মুরগিকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করাবেন।

    টাইগার মুরগির ভ্যাকসিন তালিকা

    টাইগার মুরগির ভ্যাকসিন তালিকায় এমন কিছু ভ্যাকসিন রয়েছে। যেগুলো একজন খামারীর জানা খুবই প্রয়োজন। কারণ এর মধ্যে এক থেকে পঁচাশি দিন মধ্যে কি কি ভ্যাকসিন দিতে হবে টাইগার মুরগীদের তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। 
    ভ্যাকসিন ছাড়া টাইগার মুরগি পোষা খুবই কষ্টকর। কারণ মুরগিগুলোর যখন তখন যেকোনো রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তাই রোগ হওয়ার আগে সতর্ক হওয়া দরকার। আর এই সতর্কতার জন্য মুরগিকে ভ্যাকসিন প্রদান করতে হবে। অতএব নিয়ম মেনে আপনার মুরগিগুলোকে ভ্যাকসিন প্রদান করুন।

    মারএক্স ভ্যাকসিনঃ টাইগার মুরগির এক দিনের বাচ্চাদের জন্য মারএক্স ভ্যাকসিন দেওয়া খুবই জরুরী। তাই বাচ্চা ফুটানোর পরপরই এক থেকে দুই দিনের মধ্যেই মুরগির বাচ্চাদের মারএক্স ভ্যাকসিন প্রদান করুন। তাহলে বাচ্চা গুলো সুস্থ থাকবে। 

    এই ভ্যাকসিনের দাম ৩২০০ থেকে ৩৪০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। একটি ভ্যাকসিন থেকে অনেকগুলো বাচ্চা কে দেওয়া যায়। সুতরাং টাইগার মুরগির এক দিনের বাচ্চাদের জন্য মারএক্স ভেক্সেন ক্রয় করুন এবং প্রদান করুন।

    বি সি আর ডি ভি রানীক্ষেত ভ্যাকসিনঃ তিন থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে যে সকল টাইগার মুরগির বাচ্চার রয়েছে ওই সকল বাচ্চাগুলোকে রানীক্ষেত ভ্যাকসিন দিতে হবে। প্রত্যেক চোখে এক ফোঁটা করে। অতএব আপনার খামারে যে সকল বাচ্চার বয়স তিন থেকে পাঁচ দিন মধ্যে সকল বাচ্চাকে রানীকে ভ্যাকসিন প্রদান করুন এবং খামারের বাচ্চাদেরকে সুস্থ রাখুন।

    গাম্বুবোরো ভ্যাকসিনঃ টাইগার মুরগির যে সকল বাচ্চার বয়স এগারো দিন হয়েছে। ওই এগারো দিনের সময়ই গাম্বুবোরো ভ্যাকসিন প্রদান করুন। এতে করে আপনার মুরগির বাচ্চাগুলো সুস্থ থাকবে।

    বি সি আর ডি ভি রানীক্ষেতঃ যে সকল টাইগার মুরগির বাচ্চাদের বয়স তেইশ থেকে পঁচিশ দিনের মধ্য ঐ সকল বাচ্চাদের বি সি আর ডি ভি রানীক্ষেত ভ্যাকসিন প্রদান করুন। এক চোখে এক ফোটা করে। এই ভ্যাকসিনটি প্রদান করলে আপনার মুরগির বাচ্চাগুলো সুস্থ ও স্বাভাবিক থাকবে।

    ফাউলপক্স ভ্যাকসিনঃ এই ভ্যাকসিন টি টাইগার মুরগিদের যখন ত্রিশ থেকে পঁয়ত্রিশ দিন বয়স হবে তখন প্রদান করুন। এই ভ্যাকসিনটি মুরগিদের ডানা বা পাখার নিচে সৃজের মাধ্যমে প্রদান করুন।

    কৃমির ঔষধঃ টাইগার মুরগিদের পঞ্চাশ দিনের মাথায় বা সময় গিয়ে কৃমির ঔষধ পানির সাথে মিস করে খাওয়ান। এতে করে আপনার টাইগার মুরগি গুলো সুস্থ থাকবে।

    আর ডি ভি লাইভ রানীক্ষেত ভ্যাকসিনঃ এই ভ্যাকসিনটি টাইগার মুরগীদের রানের মাংসে প্রদান করতে হবে। এতে করে আপনার মুরগিগুলোর রানগুলো অকেজ হয়ে যাবে না। সুতরাং এই ভ্যাকসিনটির মাধ্যমে মুরগির রান ভালো থাকবে।

    ফাউল কলেরা ভ্যাকসিনঃ টাইগার মুরগীদের সত্তর থেকে পঁচাত্তর দিনের মাথায় বা বয়সের সময় ঘাড়ের চামড়ার নিচে অথবা রানের মাংসে ০.৫ সি:সি করে প্রদান করুন। এই ভ্যাকসিনটিও দেওয়ার মাধ্যমে আপনার মুরগি সুস্থ ও স্বাভাবিক থাকবে। আপনার মুরগীরা যদি সত্তর থেকে পঁচাত্তর দিন বয়স হয় এখনই প্রদান করুন।

    ফাউলপক্স বা লাইভ ভ্যাকসিনঃ যে সকল টাইগার মুরগির বয়স আশি থেকে পঁচাশি দিনের মধ্যেও ওই সকল মুরগিদের এই ভ্যাকসিনটি প্রদান করুন।

    পরিশেষে বলা যায় যে প্রত্যেকটি টাইগার মুরগির জন্য ভ্যাকসিন খুবই জরুরী। কারণ ভ্যাকসিন ছাড়া মুরগিকে যখন তখন যে কোন রোগে আক্রমণ করতে পারে। সুতরাং তালিকায় যে ভ্যাকসিন গুলো রয়েছে সেগুলোর সঠিক নিয়ম মেনে প্রদান করুন।

    টাইগার মুরগি চেনার উপায়

    টাইগার মুরগি চেনার অনেক ধরনের উপায় রয়েছে। তার মধ্য থেকে বাছাই করে যেগুলো উপায়ে খুব সহজে টাইগার মুরগি চেনা যায়। তার একটি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা তুলে ধরা হয়েছে। যেগুলো বর্ণনা থেকে আপনি টাইগার মুরগির নব্বই থেকে পঁচানব্বই পারসেন্ট চিনতে পারবেন। 
    এই মুরগিগুলো না চেনার কারণে বাজারে বা খামারিরা আপনাকে ঠকিয়ে দেয়। কারণ টাইগার মুরগি ও সোনালী মুরগি দেখতে প্রায় একই রকম আর এই একই রকম হওয়ার কারণে অনেক বাজারীরা আপনার কাছে নকল মুরগিটি বিক্রি করে। আর এই মুরগি না চেনার কারণে অনেক ব্যবসায়ী শুরু হওয়ার আগেই ধ্বংস হয়ে যায়। 

    তাই আপনি যদি আপনার ব্যবসাটিকে খুবই সুন্দরভাবে সাজাতে চান এবং লাভবান হতে চান তাহলে টাইগার মুরগি চেনার উপায় গুলো জানা খুবই প্রয়োজন। আপনি যেন খুবই সহজেই টাইগার মুরগি চিনতে পারেন। সে বর্ণনাগুলো নিচে তুলে ধরা হলো। যা থেকে আপনি আসল এবং নকলের পার্থক্য করতে পারবেন।
    • টাইগার মুরগির বাচ্চার পা ও ঠো হয় মোটা
    • টাইগার মুরগির একটি বাচ্চার ওজন চল্লিশ থেকে পঁয়তাল্লিশ গ্রাম পর্যন্ত হয়
    • টাইগার মুরগি চারটি রং এর হয়ে থাকে সাদা, কালো এবং লাল। আর আরেকটি কালার হচ্ছে সাদা ও কালোর সাথে যেকোনো রং মিশানো।
    • এই মুরগি অন্যান্য মুরগি থেকে একটু চঞ্চল্যকর বেশি হয়ে থাকে
    • এই মুরগি দেখতে খুবই সুন্দর এবং মোটাসোটা হয়ে থাকে
    পরিশেষে বলা যায় যে টাইগার মুরগি পালনে খুবই লাভজনক হওয়া যায়। যদি আপনি সঠিক টাইগার মুরগীটি বেছে নিতে পারেন বা চিনতে পারেন। তাই খামারিতে লাভজনক হতে গেলে খামার করার আগে টাইগার মুরগি চেনার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে রাখুন। কারণ সঠিক টাইগার মুরগী নির্বাচন না করতে পারলে ব্যবসায় আপনার লোকসান পোহাতে হবে।

    টাইগার মুরগি পালনে লাভ কেমন

    বাংলাদেশে দিন দিন টাইগার মুরগি পালনের হার বেড়েই চলেছে। কারণ খামারিরা টাইগার মুরগি পালনে অধিক লাভ জনক হচ্ছেন। সুতরাং টাইগার মুরগি পালনে লাভজনক হওয়া খুবই সহজ। কিন্তু এইখানে কিছু কথা রয়েছে যারা লাভজনক হচ্ছেন। তারা দীর্ঘদিন ধরে এই ব্যবসায়ের সাথে যুক্ত রয়েছেন। 
    আরো পড়ূনঃ
    সুতরাং তাদের টাইগার মুরগী সম্পর্কে যথেষ্ট পরিমাণে ধারণা রয়েছে। বিধায় তারা অনেক লাভজনক হতে পারছেন। অতএব লোভে পড়ে তাড়াহুড়া করে এই ব্যবসায়ী অধিক বিনিয়োগ করা যাবে না। কারণ বিনা অভিজ্ঞতায় কোন ব্যবসায়ী সফলতা পাওয়ার সংখ্যা খুবই কম। 

    এইজন্য প্রথমে একটি ছোট এমাউন্ট নিয়ে ব্যবসায়ী যুক্ত হন। তারপরে আস্তে আস্তে যখন অভিজ্ঞতা বাড়বে আপনার ব্যবসায়ীটিও বড় হতে থাকবে এবং ইনশাআল্লাহ অবশেষে এই ব্যবসায় আপনি লাভবান হতে পারবেন। সুতরাং ধৈর্যের সাথে কাজ করতে হবে এবং ব্যবসায় পরিচালনা করতে হবে।

    টাইগার মুরগি কত দিনে ডিম পাড়ে
    উওরঃ টাইগার মুরগি একশত সত্তর থেকে একশত আশি দিন অথবা ছয় মাস পর থেকে সম্পূর্নরুপে ডিম পাড়া শুরু করে।

    টাইগার মুরগির বাচ্চার দাম
    উওরঃ প্রতি পিস টাইগার মুরগির বাচ্চার দাম একশত থেকে একশ দশ টাকা।

    টাইগার মুরগির ডিমের দাম কত
    উওরঃ প্রতি পিস টাইগার মুরগির ডিমের দাম ত্রিশ থেকে পঁয়ত্রিশ টাকা।

    টাইগার মুরগির বাচ্চা কোথায় পাওয়া যায়
    উওরঃ টাইগার মুরগির বাচ্চা বিভিন্ন বাজারে এবং বিভিন্ন ধরনের খামারীদের কাছে পাওয়া যায়।

    টাইগার মুরগি কত টাকা কেজি
    উওরঃ প্রতি কেজি টাইগার মুরগি তিনশত থেকে তিনশত পঞ্চাশ টাকা।

    টাইগার মুরগির ওজন
    উওরঃ প্রতি পিস টাইগার মুরগির ওজন পাঁচ থেকে ছয় কেজি পর্যন্ত হয় এবং টাইগার নয় থেকে দশ কেজি হতে পারে।

    এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

    পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
    এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

    এসএইচ নিউজস্টোরের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

    comment url