ট্রাফিক সাইন কাকে বলে এবং ট্রাফিক সাইন কত প্রকার কি কি
ট্রাফিক সাইন কাকে বলে এবং ট্রাফিক সাইন কত প্রকার কি কি এ সকল বিষয়গুলো কি আপনি জানেন। আমার মনে হয় জানেন না এই জন্যই আপনি জানার জন্য খুঁজছেন ট্রাফিক সাইন কত প্রকার ও কি কি। চিন্তার কোন কারণ নেই পুরো পোস্টটি এ বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
ট্রাফিক আইন মেনে চলতে হলে। ট্রাফিক আইনের মধ্যে কোন বিষয়গুলো রয়েছে সেগুলো জানা প্রয়োজন। যেমন ট্রাফিক আইন কাকে বলে এবং ট্রাফিক আইন কত প্রকার ও কি কি এ বিষয়গুলো না জানা থাকলে আপনি ট্রাফিক আইন মেনে চলবেন কিভাবে। তাই ট্রাফিক আইন সম্পর্কে জানা প্রয়োজন।
পোস্ট সূচিপএঃ
ভূমিকা
ট্রাফিক আইন কাকে বলে এই বিষয়ে আমাদের সকলেরই সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। সুতরাং ট্রাফিক সাইন কত প্রকার কি কি এই সকল বিষয় জানা থাকলে। আমরা নিজেদেরকে সুরক্ষিত মনে করবো। কিন্তু এই সকল বিষয় জানার পরেও যদি আমরা সেগুলো না মেনে চলি। তাহলে আমরা নিজেকে সুরক্ষিত ভাববো কিভাবে।
তাই নিজেকে সুরক্ষিত রাখার জন্য ট্রাফিক আইন, ট্রাফিক সাইন কত প্রকার ও কি কি এই সকল বিষয় জানার প্রয়োজন। তার সাথে এই সকল বিষয়গুলো মেনেও চলতে হবে। আর তা না হলে আমরা কখনই সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে পারবো না। তাই আসুন সবাই মিলে একসাথে ট্রাফিক আইন মেনে চলি। আর এই সকল বিষয়গুলো বিস্তারিত জানতে হলে এই পেজটি পুরো পড়ুন এবং সেগুলো মেনে চলার চেষ্টা করুন।
ট্রাফিক আইন কাকে বলে
ট্রাফিক আইন কাকে বলে। সংক্ষিপ্ত এবং উদাহরণ সহকারে আপনাকে জানিয়ে দিচ্ছি। একজন চালক যখন রাস্তায় যানবাহন চালায়। ওই যানবাহন চালানোর সময় তাকে যে সকল নিয়ম কানুন মেনে যানবাহন চালাতে হয়। নিয়ম কানুন গুলোকে ট্রাফিক আইন বলা হয়।
উদাহরণ ধরুন আপনার একটি বাইক আছে। এখন কোন কাজের জন্য বাইকটি নিয়ে একই স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে হবে। তার জন্য আপনাকে রাস্তা দিয়ে বাইকটি চালাতে হবে। এখন বাইকটি রাস্তায় চালানোর জন্য আপনাকে অনেকগুলো আইন মেনে চালাতে হবে।
আরো পড়ূনঃ কার্বলিক এসিড ব্যবহারের নিয়ম
যেমন হেলমেট পড়ে চালাতে হবে, ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকতে হবে এবং গাড়ির কাগজপত্র সহ আরো অনেক ট্রাফিক আইন রয়েছে যেগুলো মেনে চলতে হবে। আর আপনি যদি এই সকল ট্রাফিক আইন না মেনে চলেন। তাহলে আপনাকে শাস্তির আওতায় আনা হবে।
সাধারণত ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করলে জরিমানা করা হয়। সুতরাং আমরা সকলেই ট্রাফিক আইন মেনে যানবাহন চালাবো।
ট্রাফিক আইন কত প্রকার কি কি
প্রথমে আমরা জেনেছি ট্রাফিক আইন কাকে বলে। আর এখন আমরা জানবো ট্রাফিক আইন কত প্রকার ও কি কি। আপনাদের প্রথমে একটা কথা জানিয়ে রাখি ট্রাফিক আইনের কোন প্রকারভেদ নেই বা জানা যায়নি। তবুও কিছু প্রকারভেদ ট্রাফিক আইন মেনে চলুন।
আরো পড়ূনঃ ফোড়া পাকানোর ঘরোয়া উপায় কি
যেমন রাস্তার বাম দিক দিয়ে চলাচল করা, হেলমেট পরিধান করা, গাড়ির কাগজ পত্র সাথে রাখা, ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং ট্রাফিক সিগন্যাল মেনে চলা এই সকল প্রকারভেদ মেনে চলুন। এই সকল আইনগুলো যদি না মানেন। তাহলে আপনাকে শাস্তির আওতায় আনা হবে। সাধারণত জরিমানা করা হয়।
ট্রাফিক আইন না মানলে কি হয়
- লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালালে এতে ট্রাফিক আইন ভঙ্গ হয়। আর এই আইন ভঙ্গ করার জন্য সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা জরিমানা বা পাঁচ বছরের জেল।
- ভুয়া লাইসেন্স দিয়ে গাড়ি চালালে এতে ট্রাফিক আইন ভঙ্গ হয়। আর এই আইন ভঙ্গ করার জন্য সর্বোচ্চ এক থেকে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা বা ছয় মাস থেকে দুই বছরের জেল।
- রেজিস্ট্রেশন বিহীন গাড়ি চালানো যাবেনা। কারণ ট্রাফিক আইন লংঘন করা হয়। আরে আইন ভঙ্গ করার শাস্তি সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা ছয় মাসের জেল।
- ফিটনেস বিহীন গাড়ি চালালে ট্রাফিক আইন অমান্য করা হয়। আর সেই জন্য সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা জরিমান বা ছয় মাসের জেল।
- ট্রাফিক সংকেত অমান্য করলে ট্রাফিক নিয়ম বা আইন ভঙ্গ করা হয। আর এই ভঙ্গ করার জন্য সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা জরিমানা।
- অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালালে আপনি ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করেছেন। আর আইন ভঙ্গ করার জন্য সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা জরিমান।
আরো পড়ূনঃ রিডোমিল গোল্ড এর কাজ কি
- রাস্তার পাশে অবৈধ পার্কিং করা ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করা। আর এই আইন ভঙ্গ করার কারণে সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা।
- উল্টো পথে গাড়ি চালালে আপনার ট্রাফিক আইন অমান্য হয়েছে। আর এর জন্য সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা জরিমানা।
- হেলমেট পড়ে গাড়ি না চালালে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা জরিমানা।
- যত্রতত্র রাস্তা পারাপার হওয়া যাবে না। কারণ এতে করে ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করা হয়। আর সেজন্য সর্বোচ্চ হাজার টাকা জরিমানা।
- গাড়ি চালানোর সময় সিট বেল বেঁধে গাড়ি চালাবেন। আর সিট বেল্ট না বাধল সর্বোচ্চ ৫০০০ টাকা জরিমানা।
- গাড়ি চালানোর সময় ফোনে কথা বললে সর্বোচ্চ ৫০০০ টাকা জরিমানা।
এই সকল ট্রাফিক আইন গুলো আপনাকে মেনে চলতে হবে। আর যদি এই ট্রাফিক আইনগুলো আপনি না মেনে চলেন। তাহলে আপনাকে ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করার জন্য জরিমান বা জেল হতে পারে। সুতরাং রাস্তায় গাড়ি চালানোর আগে এই সকল বিষয়গুলো আপনার মাথায় রাখতে হবে। অতএব আসুন আমরা সকলেই এই ট্রাফিক আইনগুলো মেনে রাস্তায় চলাচল করি।
ট্রাফিক সাইন কাকে বলে
যে সাংকেতিক চিহ্ন গুলো রাস্তার শুরুতে, রাস্তার সাইটে, সংযোগস্থলে শুরুতে এবং বিপদজনক এলাকার শুরুতে সতর্কীকরণ হিসেবে দেওয়া থাকে। তাকে ট্রাফিক সাইন বলে। এই ট্রাফিক সাইনগুলো এই জন্যই দেওয়া থাকে। যেন চালক রা সতর্ক থাকে।
আরো পড়ূনঃ হার্টের রোগীর খাবারের তালিকা
ট্রাফিক সাইন কত প্রকার ও কি কি
- সাধারণত ট্রাফিক সাইন তিন প্রকারের হয়ে থাকে
- বাধ্যতামূলক যা বৃত্ত আকৃতির হয়ে থাকে
- সতর্কতামূলক যা ত্রিভুজ আকৃতির হয়ে থাকে
- তথ্য মূলক যা আয়তক্ষেত্রাকার আকৃতির হয়ে থাকে
- বাধ্যতামূলক ট্রাফিক সাইন কে দুই ভাগে ভাগ করা হয়
- বাধ্যতামূলক হ্যাঁ বাচক নীল রঙের হয়ে থাকে
- বাধ্যতামূলক নাবাচক লাল রঙের হয়ে থাকে
সতর্কতামূলক সাইন ত্রিভুজ আকৃতির হয়। সতর্কতামূলক সাইনে দুইটি কালার থাকে লাল এবং কালো। ত্রিভুজের বর্ডারের রং হয় লাল এবং ভেতরের চিহ্নটি হয় কালো। আরো এমন কিছু চিহ্ন রয়েছে। যেগুলো ত্রিভুজ আকৃতির নয়। বিভিন্ন অ্যাঙ্গেলের হয়ে থাকে।
আরো পড়ূনঃ আউটডোর গেমস কি কি ও তালিকা
তথ্যমূলক সাইন সাধারণত চতুর্ভুজ আকৃতির হয়ে থাকে। যা থেকে আপনি বুঝতে পারবেন। এটি একটি তথ্য মূলক সাইন। এই চতুর্ভুজের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের চিহ্ন থাকে। যা দ্বারা বোঝা যায়, এটি একটি তথ্যমূলক সাইন।
ট্রাফিক দশটি নিয়ম মেনে চলবে
আমরা সবাই প্রত্যেকদিন রাস্তায় চলাফেরা করি। কিন্তু দেখা যায় আমরা ট্রাফিক আইন মেনে চলি না। যার কারনে প্রতিনিয়তই বেড়ে চলেছে সড়ক দুর্ঘটনা। সাধারণত দেখা যায় যে আমরা যে কাজগুলো করি। আমরা যারা পথচারী আছি তারা হুটহাট করে রাস্তার এই পাশ থেকে ওপাশ যাওয়া আশা করি।
যারা কারণে দেখা যায় যে, যারা চালক আছে তারা দুর্ঘটনার শিকার হয়। আবার অনেক চালক আছে যারা নিজেকে বড় ডাইভার মনে করে। এদের নিজেকে বড় মনে করার কারণে রাস্তায় প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনা ঘটতে থাকে।
তাই আমাদের যেটা করতে হবে চালক এবং পথচারী দুজনকে সতর্ক হতে হবে। আর ট্রাফিক আইন নিয়ম-কানুন গুলো মেনে চলতে হবে। তবে তাহলেই আমরা এই সড়ক দুর্ঘটনা থেকে রেহাই পাবো। তাহলে চলুন আমরা সবাই আজ থেকে ট্রাফিক আইন মেনে চলি। তাহলে আমরা একটি সুরক্ষিত জীবন গড়ে তুলতে পারবো।
আমরা অনেকেই আছি যারা গাড়ি চালানোর সময় ফোনে কথা বলি, গান শুনি এই সকল বদ অভ্যাস পরিত্যাগ করতে হবে। কারণ এই সকল বদ অভ্যাসের কারণেই আজ সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েই চলেছে। একটি সড়ক দুর্ঘটনায় শুধু আপনার ক্ষতি হয় না।
সাথে আরো অনেকেরই ক্ষতি হয়। তাই সড়ক দুর্ঘটনা এড়িয়ে চলতে। গাড়ি চালানোর সময় ফোনে গান শোনা বা কথা বলা যাবে না। আসুন আমরা ট্রাফিক আইন মেনে চলি এবং সুরক্ষিত একটি জীবন ব্যবস্থা গড়ে তুলি।
আপনারা অনেকেই আছেন যারা মদ্যপান অবস্থায় গাড়ির ড্রাইভিং করেন। এটি করা যাবে না। এই মদ্যপান অবস্থায় গাড়ি চালানোর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। একটি সড়ক দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না হতে পারে। অতএব সেই কথা
বিবেচনা করে। আপনাকে সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে মদ্যপান অবস্থায় গাড়ি ড্রাইভিং করা যাবে না। একটি সড়ক দুর্ঘটনায় শুধু আপনারই ক্ষতি হয় না। আরো অনেকেরই ক্ষতি হতে পারে। আসুন আমরা সবাই ট্রাফিক আইন মেনে চলি।
আপনারা অনেকেই আছেন যারা হেলমেট বিহীন গাড়ি চালান। আপনাকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখার জন্য হেলমেট পড়ে গাড়ি ড্রাইভিং করতে হবে। কারণ আপনার সাথে আপনার পুরো পরিবার জড়িত রয়েছে। আপনি যদি হেলমেট বিহীন গাড়ি ড্রাইভিং করেন।
কোন দুর্ঘটনা যদি সম্মুখীন হন। তখন যে কোন ক্ষতি হতে পারে। তাই ট্রাফিক আইন মেনে চলুন। নিজেকে এবং নিজের পরিবারকে সুরক্ষিত রাখুন।
আমরা অনেকেই আছি যারা অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালিয়ে থাকি। এটি করা যাবে না। এই অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানোর ফলে সড়ক দুর্ঘটনা হয়ে থাকে। আমাদের দেশে অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানোর কারণে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা হয়ে থাকে। এই কারণে অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানো যাবেনা। ট্রাফিক আইন মেনে চলুন। নিজেকে এবং নিজের পরিবারকে ঝুঁকিমুক্ত রাখুন।
আমাদের দেশে আরেকটি বড় সমস্যা হচ্ছে ওভার ট্রাকিং। এই ওভার ট্রাকিং এর কারণেই প্রত্যেকদিন অসংখ্য সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে পুরো পৃথিবীতে। তাই সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে হলে ওভার ট্রাকিং করা যাবে না। তাই সে ক্ষেত্রে আপনাকে ট্রাফিক আইন মেনে চলতে হবে। তাহলেই আপনি সড়ক দুর্ঘটনায় রাতে পারবেন।
ফিটনেস বিহীন গাড়ি চালানো যাবেনা। কারণ ফিটনেস বিহীন গাড়ি চালালে সড়কে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কিন্তু সড়কে দেখা যায় অনেকেই ফিটনেস বিহীন গাড়ি চালান। এতে করে নিজের জীবন ঝুঁকিতে ফেলে দেন।
শুধু নিজের জীবন না সাথে আপনার পরিবারের ভবিষ্যৎ ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেন। তাই ফিটনেস বিহীন গাড়ি এড়িয়ে চলতে হবে। আসুন ট্রাফিক আইন মেনে চলি। নিজের পরিবার এবং নিজেকে সুরক্ষিত রাখি।
শেষ কথাঃ প্রিয় পাঠক আসসালামু আলাইকুম। আশা করি আপনারা ট্রাফিক আইন কাকে বলে এবং ট্রাফিক আইন কত প্রকার ও কি কি অথবা ট্রাফিক সাইন কত প্রকার ও কি কি? এই সকল বিষয়গুলো জেনে আপনি উপকৃত হয়েছেন। আর আপনি যদি এই সকল বিষয়গুলো জেনে উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে আপনার পরিবার ও বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। পুরো আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
এসএইচ নিউজস্টোরের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url