কাঁঠাল কোন মাটিতে ভালো হয় - কাঁঠাল গাছের পরিচর্যা

আপনি যদি কাঁঠাল কোন মাটিতে ভালো হয় এবং কাঁঠাল গাছের মুকুল পরিচর্যা থেকে শুরু করে কাঁঠাল সম্পর্কে আরো অনেক বিষয় জানার জন্য খোঁজাখুঁজি করে থাকেন। তাহলে সঠিক জায়গায় এসেছেন এখানে আপনাকে সেই সকল বিষয়ে জানানো হবে। যা হয়তো কাঁঠাল সম্পর্কে এর আগে শোনেননি। তাই আর দেরি না করে কাঁঠাল কোন মাটিতে ভালো হয় এবং এর সাথে জড়িত বিষয়গুলো জেনে নিন।
কাঁঠাল কোন মাটিতে ভালো হয়
আমাদের মধ্যে অনেকে রয়েছে যারা কাঁঠাল চাষ করতে ইচ্ছুক। কিন্তু সেই ব্যক্তির অজানা সে কিভাবে কাঁঠাল পরিচর্যা করবে। কাঁঠাল কোন মাটিতে ভালো হয় তা হতে শুরু করে এবং কাঁঠাল কালো হয়ে ঝরে পড়ার কারণ এগুলো সেই ব্যক্তি জানতে চাই। আর আপনার সুবিধার কথা চিন্তা করে আর্টিকেলে সেই সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
পোস্ট সূচীপত্রঃ 

    কাঁঠাল কোন পরিবেশে ভালো হয়

    আপনারা যারা কাঁঠাল গাছ নিরূপণ অথবা চাষের জন্য কোন পরিবেশটি ভালো হবে তা জানতে চেয়েছেন। কাঁঠাল চাষ সব রকম পরিবেশের জন্য উপযোগী নয়। এটি পরিবেশের উপর নির্ভর করে চাষ করতে হয়। আর তা না হলে কাঁঠাল আপনাকে ভালো ফলন দিবে না। তাই প্রত্যেকটি চাষীর কাঁঠাল কোন পরিবেশে ভালো হয় তা সম্পর্কে জানা প্রয়োজন।

    আর কাঁঠাল আমাদের দেশের জাতীয় ফল হওয়ার পাশাপাশি এটি চাহিদাও প্রচুর। কাঁঠাল চাষের জন্য ক্রান্তীয়, উপক্রান্তীয় এবং উষ্ণ, আদ্রতা সম্পূর্ণ স্থান খুবই উপযোগী বলে মনে করা হয়। তাই আপনারা যারা কাঁঠাল কোন পরিবেশের জন্য ভালো এই বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত। সেই সকল চাষিরা এই পরিবেশগুলোকে বেছে নিতে পারেন।

    কাঁঠাল গাছের মুকুলের পরিচর্যা

    আপনারা অনেকেই জানতে চেয়েছেন কাঁঠাল গাছের মুকুল পরিচর্যা কিভাবে করা যায়। কিভাবে পরিচর্যা করলে কাঁঠালের মুকুল গুলো বেঁচে থাকবে। সাধারণত কাঠালের মুকুল দুই ধরনের হয় পুরুষ ডিম্বাণু এবং মহিলা ডিম্বানু। প্রত্যেকটি গাছে পুরুষ ডিম্বাণুর পাশাপাশি মহিলা ডিম্বাণু হয়। কিন্তু দুইটি ডিম্বাণু পরিপূর্ণ কাঁঠাল এ পরিণত হয় না। 
    পুরুষ মুকুলটি কাঁঠালে পরিণত হয় না এবং মহিলা মুকুল টি কাঁঠাল এ পরিণত হয়। এখন বিষয় হচ্ছে চেনার উপায়। পুরুষ কাঁঠালটির গায়ে ছোট ছোট ফুল থাকে এবং তার যে ডান্টি থাকে সেটি চিকন হয়। আর ডান্টির নিচের গোল অংশটির আস্তরণ চিকন হয়। মহিলা কাঁঠালের ক্ষেত্রে ঠিক উল্টোটি এই কাঁঠালের ডান্টি মোটা হয় এবং কাঁঠালের উপরে আস্তরনের ফুলগুলো মোটা হয়। 

    আর ডান্টির নিচে গোল বর্ডার করা যে আস্তরণটি থাকে সেটি অনেক মোটা হয়। এখন কথা হচ্ছে পুরুষ কাঁঠালটি ঝরে পড়বে কিন্তু মহিলা কাঁঠালটি ঝরে না পড়লেও এটি বাঁচাবো উপায়। পুরুষ কাঁঠালটির উপরের আস্তরণ কালো হয়ে যায় এবং আস্তে আস্তে সেটি ছত্রাকে পরিণত হয়। 

    যেটি ক্ষতিকারক ছত্রাক নামে পরিচিত। এই ছত্রাকটি মহিলা কাঁঠালটিতে প্রভাব ফেলতে পারে। আর যদি প্রভাব ফেলে তাহলে সে কাঁঠালটি নষ্ট হয়ে যাবে। এর জন্য আপনাকে ছত্রাক নাশক ব্যবহার করতে হবে। যাতে বাকি কাঁঠাল গুলো নষ্ট না হয়। 

    এর জন্য আপনি যে ছাত্র একটি ব্যবহার করতে পারেন। তাহলে ব্লু কপার অক্সি ক্লোরাইড ডব্লিউ পি চার গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে ব্যবহার করে। পুরো গাছে স্প্রে করার মাধ্যমে এই ছত্রাকটি দমন করা যেতে পারে। তাহলে এ পুরুষ কাঁঠালে যে ছত্রাকটি রয়েছে। ওই ছত্রাকটি মহিলা কাঁঠালে আর ছড়াবে না ইনশাআল্লাহ।

    টবে কাঁঠাল গাছের পরিচর্যা

    আপনারা যে বিষয়টি সম্পর্কে জানার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছেন সে বিষয়টা আছে টবে কাঁঠাল গাছের পরিচর্যা কিভাবে করলে। ছাদের উপরে অনেক সুন্দর ভাবে টবের ভেতরে কাঁঠাল গাছ বেড়ে উঠবে। আপনি এই পদ্ধতিটি তবে অথবা বাহিরে যেকোন ভাবে ব্যবহার করতে পারেন। 

    এই পদ্ধতি যদি ব্যবহার করেন তাহলে আপনি বারোমাসি কাঁঠালের ফলন পাবেন। থাই ভ্যারাইটি, অলটাইম কাঁঠাল, পিন্চ কাঁঠাল এবং রেড কাটার সহ আরো অনেক প্রজাতির রয়েছে যেগুলো গাছে ছোট থাকতে কাঁঠাল পাওয়া যাচ্ছে। এই গাছগুলো গ্রাফটিং অনেক সুন্দর। টবে কাঁঠাল গাছ লাগানোর জন্য যেভাবে আদর্শ মাটি তৈরি করবেন। 

    কিছু মাটির মধ্যে একভাগ গার্ডেন সার, ভার্মি কম্পোস্ট সার, সাদা অথবা লাল বালি, সরিষার খালের গুড় এবং এক বছর পুরনো গবর মিস করে আদর্শ মাটি তৈরি করতে পারেন। টবে কাঁঠাল গাছ লাগানোর ক্ষেত্রে টপ নির্বাচন করতে হবে ১২ ইঞ্চির। 

    টবের যে ছোট ছোট ফুটোগুলো রয়েছে, ওইগুলো বন্ধ করার জন্য বালু আর ইটের প্লাস্টারের ভাঙ্গা তার উপরে ইটের ছোট ছোট খোয়া এবং তার উপরে বালু দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। এটা করার কারণ তাদের ভেতরে পানি আটকে থাকবে না।এরপর আস্তরণ গুলোর উপরে মাটি আস্তে আস্তে দিতে থাকুন। পাঁচ ছয় ধাপে মাটি দিবেন। 

    আর প্রত্যেক ধাপে মাটি দেওয়ার পরে ভালো করে মাটিগুলো বসিয়ে নিন। এরপরে টবের ভিতরে কাঁঠাল গাছটি লাগিয়ে চারপাশে মাটি দিয়ে দিন। প্রত্যেক এক থেকে দুই মাসের ভিতরে মিশ্র জৈব রাসায়নিক সার ব্যবহার করুন। 

    একটু ভার্মি কম্পোস্ট, সরিষার খোলের গুড়, সিং কচি, এক চামচ এস ওপি সালফেট অফ পটাশ নিবেন। এর পাশাপাশি পানি ভেজানো খোল সপ্তাহে অন্তত একবার দেবেন। এভাবে করে সারা বছর আপনি কাঁঠাল গাছ পরিচর্যা করতে পারেন। আর এতে করে আপনার কাঁঠাল গাছের ফলন ভালো হবে।

    কাঁঠাল কোন মাটিতে ভালো হয়

    কাঁঠাল অনেক সুস্বাদু যুক্ত খাবার। আমরা অনেকেই কাঁঠাল খেতে খুব পছন্দ করি। তবে আপনি কি জানেন কাঁঠাল কোন মাটিতে ভালো হয়। কাঁঠাল কিন্তু সব রকম মাটিতে হয় না। কাঁঠাল যেরকম বিভিন্ন জাতের হয়ে থাকে। ঠিক তেমনি ভাবে কাঁঠাল হওয়ার জন্য কিছু জাতের মাটি রয়েছে যেগুলো উপযুক্ত।

    কাঁঠালের জন্য যে সকল মাটি উপযুক্ত অথবা যে সকল মাটিতে ভালো হয় দোআঁশ মাটি, বেলে দোআঁশ মাটি,কাকুরে মাটি এবং লাল মাটিতে হয়। তাই যেই সকল স্থানে এই প্রজাতির মাটিগুলো রয়েছে, কেবলমাত্র ওই স্থানগুলোতে কাঁঠাল গাছ নিরূপণ করুন। 

    তাহলে দেখবেন আপনি ভালো কাঁঠাল পাচ্ছেন। তাই আপনারা কেউ যদি কাঠাল গাছ লাগানোতে উৎসাহিত হন। তাহলে এই প্রজাতির মাটিতে কাঠাল গাছ লাগান।

    কাঁঠাল কালো হয়ে ঝড়ে পড়ার কারণ

    প্রত্যেকটি পুরুষ কাঁঠাল কালো হয়ে ঝরে পড়ে যায়। আর মহিলা কাঁঠালগুলো আকৃতিতে বড় হয়। পুরুষ কাঁঠালগুলোতে ছত্রাকে আক্রমণের কারণে এর উপরের অংশ কালো হয়ে যায়। 

    আর ঠিক এই কারণে অনেক সময় মহিলা কাঁঠালগুলোতেও পুরুষ কাঁঠালগুলোর কারণে ছত্রাকে আক্রমণ করে। তাই অনেক সময় দেখা যায় পুরুষ ও মহিলা কাঁঠাল দুইটি কালো হয়ে ঝরে পড়ে যায়। কিন্তু পুরুষ কাঁঠাল গুলো কালো হয়ে ঝরে পড়বেই কারণ এটি প্রকৃতির নিয়ম। আপনি যতই ধরে রাখার চেষ্টা করেন না কেন লাভ নেই।

    কাঁঠাল কোন জেলায় বেশি হয়

    বাংলাদেশের প্রায় সব জেলাতেই কাঁঠাল হয়। কিন্তু এর মধ্যেও কিছু বিশেষ জেলা রয়েছে যেগুলো কাঠালের জন্যই বিখ্যাত তার মধ্যে যে জেলাগুলো পড়ে টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ত্রিশাল ও ভালুকাসহ আরো কিছু বেশ জেলা রয়েছে। সেগুলো কাঁঠালের জন্য অনেক বিখ্যাত। তবে এইসব জেলার মধ্যে থেকে ভালুকাতে সবথেকে বেশি কাঁঠাল হয়।

    কাঁঠাল গাছের ডাল ছাঁটাই

    প্রত্যেকটি কাঁঠাল গাছের ডালগুলো ছাঁটাই করা প্রয়োজন। কারণ ডাল গুলো ছাটাই না করলে কাঁঠালের সংখ্যা কমে আসবে। আগের বছর যে গাল গুলোতে কাঁঠাল হয়েছে। ওই ডালের মাথা গুলো কেটে দিন। এমন ভাবে কাটবেন যেন গাছের ছাল না উঠে যায়। 

    প্রত্যেক বছরই আপনারা এই কাজটি করবেন। কারণ গাছের ডাল ছাটাই না করলে পরবর্তী বছর আর সেই গাছ থেকে তেমন একটি ফলন হবে না।

    উপসংহার

    কাঁঠাল হচ্ছে আমাদের জাতীয় ফল। কিন্তু আমরা অনেকেই কাঁঠাল গাছের খুব একটা যত্ন নেয় না। মনে করা হয় বিনা যত্নেই কাঁঠাল গাছে ফল ধরে। আবার আমরা অনেকেই আছি যারা কোন মাটিতে কাঁঠাল গাছ লাগালে ভালো ফলন হবে। এই বিষয়গুলো সম্পর্কে খুব একটা জ্ঞান নেই। অবশ্যই কাঁঠাল গাছ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে তারপরে ফলন অথবা শখের বসে কাঁঠাল গাছ নিরূপণ করেন।

    শেষ কথা

    প্রিয় পাঠক আশা করি ভাল আছেন। আমরা ইতিমধ্যে জানিয়েছি কাঁঠাল কোন মাটিতে ভালো হয় সহ আরো অনেক বিষয়গুলো। আপনারা যদি ইতিমধ্য এই বিষয়গুলো পড়ে উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে আপনার বন্ধু এবং পরিবারের সকলকে বিষয়টি জানান। পুরো তথ্যটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। পরবর্তী পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে আমন্ত্রণ জানানো হলো।

    এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

    পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
    এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

    এসএইচ নিউজস্টোরের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

    comment url