ব্রিটিশদের সাম্প্রদায়িক বাটোয়ারা নীতি কি ছিল

আপনারা যদি ব্রিটিশদের সাম্প্রদায়িক বাটোয়ারা নীতি সম্পর্কে জানতে চান। এদিক ওদিক খোঁজাখুঁজি করছেন। খোঁজাখুঁজি বাদ দিয়ে এই পুরো তথ্যটি পড়ে জেনে নিতে পারেন। সাম্প্রদায়িক বাটোয়ারা সম্পর্কে।
ব্রিটিশদের সাম্প্রদায়িক বাটোয়ারা নীতি কি ছিল
পোস্ট সূচীপত্র 

ভূমিকা

ব্রিটিশ শাসন আমলে ভারতবর্ষে ১৯৩২ সালের আগস্ট মাসে র্যামসে ম্যাকডোনাল্ড সাম্প্রদায়িক এর বাটোয়ারা নীতি ঘোষণা করেন। এই নীতিটি ঘোষণা করার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে সাম্প্রদায়িক গুলোকে আলাদা করা। এ আলাদা করার মাধ্যমে ব্রিটিশ শাসনব্যবস্থা নিরাপদ এবং সুরক্ষিত থাকবে। নিম্ন হিন্দু, মুসলিম, ভারতের খ্রিস্টান এবং বৌদ্ধ এই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলোকে নির্বাচনের মাধ্যমে আলাদা করার চেষ্টা করেছিল।

সাম্প্রদায়িক বাটোয়ারা নীতি কাকে বলে

সম্প্রদায়গত বিভেদ সৃষ্টির মাধ্যমে যে পদ্ধতি অবলম্বন করেছিল। ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসন দীর্ঘস্থায়ী ও নিরাপদ করার প্রক্রিয়াকে সাম্প্রদায়িক বাটোয়ারা নীতি বলে। মানে মুসলিম, বৌদ্ধ, শিখ এবং ভারতের খ্রিস্টান সকল সম্প্রদায়কে নির্বাচনের মাধ্যমে ভাগ করে দেওয়া। এমন কারণ হচ্ছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় গুলোর মধ্যে ভেদাভেদ ও বিচ্ছেদ সৃষ্টি করা।

সাম্প্রদায়িক বাটোয়ারা নীতি কি

ব্রিটিশ শাসকদের বাটোয়ারা নীতি করার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ধর্মগত এবং জাতিগত ভেদাভেদ তৈরি করা। এই জাতিগত ভেদাভেদ মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ভারতীয়দের আন্দোলন। যাতে করে এই আন্দোলন জোরদার না হতে পারে। আর ব্রিটিশ শাসকরা ভারতে তাদের ক্ষমতাকে সুরক্ষিত রাখতে পারে। 

নিম্ন হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ এবং খ্রিস্টানদের মধ্যে নির্বাচনের ঘোষণা করেন। আর এই নির্বাচনটি ঘোষণা করেন তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী রমাসে ম্যাকডোনাল্ড। আর এই সাম্প্রদায়িক বাটোয়ারা নীতি ঘোষিত হয় ১৯৩২ সালের আগস্ট মাসে যা বাটোয়ারা নীতি নামে পরিচিত।
  • ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনগুলোকে দমিয়ে দেওয়া।
  • নির্বাচনের মাধ্যমে ধর্মীয় ভেদাভেদ তৈরি করা।
  • হিন্দু সম্প্রদায়ের মাঝে বিচ্ছেদ তৈরি করা।
  • সংখ্যালঘু সম্প্রদায় গুলোকে নির্বাচনের মাধ্যমে আলাদা করা।
  • নির্বাচনের মাধ্যমে সকল সম্প্রদায়কে শাসনের মধ্যে আনার প্রক্রিয়া।
  • মুসলিম, বৌদ্ধ, শিখ এবং ভারতের খৃষ্টান এই সাম্প্রদায় গুলোকে নির্বাচনের অধিকার প্রদান।
  • অস্পর্শ জাতিদের জন্য আলাদা নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। এরা হলো মুচি, চন্ডাল এবং মেথর এই জাতিগুলোর জন্য আলাদা নির্বাচন ব্যবস্থা করা।

সাম্প্রদায়িক বাটোয়ারা প্রতিক্রিয়া

সাম্প্রদায়িক বাটোয়ারা কিছু নীতি রয়েছে যেগুলো জেনে রাখা খুবই প্রয়োজন। কারণ এর মাধ্যমে অনেক কিছু প্রকাশ পায়। সে সময় পরিস্থিতি সম্পর্কে যা সাম্প্রদায়িক এই বাটোয়ারা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জানানো হলো।

১. মুসলিম লীগ বাটোয়ারা নীতিটি গ্রহণ করল। মুসলিম লীগ হলো সকল মুসলিম রাজনৈতিক নেতা দ্বারা গঠিত। কিন্তু কিছু মুসলিম এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করল। এরপর লাহোর অধিবেশনে ১৯৪০ সালে লাহোর প্রস্তাব উপস্থাপন করল মুসলিম লীগ এবং পৃথক পাকিস্তান রাষ্ট্রের দাবি উপস্থাপন করলো।

২. যখন গান্ধীজী শুনতে পেল ম্যাকডোনাল্ড সাম্প্রদায়িক বাটোয়ারা ১৯৩২ সালে আগস্ট মাসে ঘোষণা করে দিয়েছেন। তখন তিনি উত্তরপ্রদেশের জারবেদা জেলে বন্দী ছিলেন। শুনতে পেয়ে তিনি চুপ করে বসে না থেকে জেলে অনশন শুরু করে দিলেন।

৩. পুনা চুক্তিতে পৃথক নির্বাচন। অনুন্নত জাতির নেতার সাথে গান্ধীজীর চুক্তি হয়েছে পৃথক নির্বাচনের জন্য এই চুক্তিটি ও হয় ১৯৩২ সালে। কিন্তু অনুন্নত জাতির নেতার দাবি দ্বিগুণ আসন সংখ্যা।

সাম্প্রদায়িক বাটোয়ারা নীতি কে ঘোষণা করেন

সাম্প্রদায়িক বাটোয়ারা নীতি ঘোষণা করেন র্যামসে ম্যাকডোনাল্ড। তিনি এই ঘোষণাটি করেন ভারতের সম্প্রদায়িকগুলোকে পৃথক করার উদ্দেশ্যে। কারণ সে সময় ভারতের আন্দোলন অনেক জোরালো ছিল। যখন ব্রিটিশ বুঝতে পারল যে সম্প্রদায় গুলোকে ভাগ করে দিলে তাদের শাসনব্যবস্থা নিরাপদ থাকবে। তাই সেই সময় সাম্প্রদায়িক বাটোয়ারা এই নীতিটি র্যামসে ম্যাকডোনাল্ড ঘোষণা করেন।

সাম্প্রদায়িক বাটোয়ারা নীতি কবে ঘোষিত হয়

সাম্প্রদায়গুলোকে পৃথক করার উদ্দেশ্যে সাম্প্রদায়িক বাটোয়ারা নীতি ১৯৩২ সালের আগস্ট মাসে র্যামসে ম্যাকডোনাল্ড ঘোষণা করেন। যাতে করে ব্রিটিশ শাসন নিরাপদ এবং সুরক্ষিত থাকে। শাসন সুরক্ষিত করার জন্য সাম্প্রদায়িক বাটোয়ারা করা খুবই দরকার ছিল।

সাম্প্রদায়িক বাটোয়ারা নীতির আসল উদ্দেশ্য কি ছিল

ব্রিটিশ শাসন আমল টিকিয়ে রাখার জন্য এই উদ্দেশ্যটি ছিল। কারণ সম্প্রদায় গুলোকে যদি পৃথক করে ভাগ করা হয়। তারা তাদের সম্প্রদায় গুলোকে উন্নত করতে ব্যস্ত থাকবে। আর এরপেক্ষিতে তারা তাদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে পারবে। এটি ছিল বাটোয়ারা নীতির আসল উদ্দেশ্য।

শেষ কথা

আসসালামুয়ালাইকুম প্রিয় পাঠক। আপনি যদি এই তথ্যগুলো পড়ে উপকৃত হন এবং কিছু শিখতে পারেন। তাহলে আপনার বন্ধুদের সাথে তথ্যগুলো শেয়ার করুন। তাদেরকেও জানার সুযোগ করে দিন। পুরো তথ্যটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাল থাকবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এসএইচ নিউজস্টোরের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url