ছায়ায় হয় এমন ফল গাছ - ছায়াযুক্ত স্থানে সবজি চাষ

আপনি কি জানেন ছায়ায় হয় এমন ফল গাছগুলোর নাম। যদি আপনি এই বিষয়টি সম্পর্কে জানার জন্য আগ্রহী হয়ে থাকেন। তাহলে খোঁজাখুঁজি বন্ধ করে ছায়ায় হয় এমন ফল গাছ ও ছায়াযুক্ত স্থানে সবজি চাষ করা যায় এমন গাছের নাম জেনে নিতে পারেন। নিচে দেওয়া তথ্যগুলো পড়লে আপনি অনেক কিছু জানতে পারবেন।
ছায়ায় হয় এমন ফল গাছ - ছায়াযুক্ত স্থানে সবজি চাষ
নিচে এমন কিছু গাছের নাম উল্লেখ করা হয়েছে যেগুলোর নাম শুনলে আপনিও অবাক হয়ে যাবেন। যে এই গাছগুলো ছায়াযুক্ত স্থানে হওয়া সম্ভব। তাই নিম্নে নিচে দেওয়া তথ্যগুলো পড়ুন এবং সে অনুযায়ী এই গাছগুলো ছায়াযুক্ত স্থানে লাগান।
পোস্ট সূচিপত্রঃ 

    ছায়াযুক্ত স্থানে সবজি চাষ

    আমরা সকলেই জানি রোদ ছাড়া কোন গাছ বেঁচে থাকতে পারে না বা ফল দিতে সক্ষম নয়। কিন্তু আপনি কি জানেন ছায়াযুক্ত স্থানে সবজি চাষ হয় কথাটি সত্য। আপনার বাড়ির আশেপাশে যদি কোন ছায়াযুক্ত স্থান থাকে আপনি যদি সেখানে চাষাবাদের জন্য আগ্রহী থাকেন। তাহলে নিচে নিম্নে উল্লেখিত ছায়াযুক্ত স্থানে সবজি চাষ করা যায় এমন গাছের নাম জেনে নিন।
    • লেটুস পাতার গাছঃ এই পাতাটি খেতে অনেক সুস্বাদু। এটি সাধারণত সালাত হিসেবে খাওয়া হয়। যে সকল স্থানে রোদ পড়ে না ওই স্থানগুলোতে লেটুস পাতা চাষ করতে পারেন। চাষাবাদের পরে তেমন একটা যত্ন নিতে হয় না। আপনি যদি এই গাছগুলো ক্রয় করতে চান। তাহলে অনলাইন অথবা আশেপাশের কোন নার্সারি থেকে ক্রয় করতে পারেন।
    • গাজর গাছঃ গাজর নামক সবজিটি আমরা কমবেশি সবাই দেখেছি আবার অনেকে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করেছি। কিন্তু আপনি কি জানেন গাজর গাছ ছায়াযুক্ত স্থানে চাষ করা যায়। যেই সকল স্থানে খুব কম পরিমাণে রোদ পড়ে অথবা দিনে দুই ঘন্টার বেশি রোদ পড়ে না। ওই সকল স্থানে গাজর চাষ করা যায়। তাই আপনার যদি ইচ্ছে থাকে ছায়াযুক্ত স্থানে গাজর চাষ করবেন। তাহলে ছায়াযুক্ত স্থানে এই শব্দটি চাষ করতে পারেন।
    • ধনিয়া পাতার গাছঃ এই পাতাটি আমাদের তরকারিতে অথবা যে কোন জিনিস সুস্বাদু করার জন্য ব্যবহার হয়ে থাকে। অনেক সুস্বাদু এই পাতা ছায়াযুক্ত স্থানে চাষ করা যায়। এটি চাষ করতে খুব একটা পরিশ্রম করতে হয় না। এর বীজগুলো কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখার পরে খননকৃত মাটির উপরে ছিটিয়ে দিলেই কিছুদিন পরে গাছ হয়ে জন্মায়। তাই আপনিও যদি ধনিয়া পাতা পছন্দ করেন। তাহলে আপনার বাড়ির আঙিনায় চাষ করতে পারেন।
    • মিষ্টি কুমড়ার গাছঃ আমরা সকলেই মিষ্টি কুমড়া সম্পর্কে জানি। কেউ কখনো কখনো মিষ্টি কুমড়া খাদ্য হিসেবে খেয়েছি। আপনি যদি মিষ্টি কুমড়া খেতে পছন্দ করেন। তাহলে আপনার বাড়ির আঙ্গিনায় ছায়াযুক্ত স্থানে মিষ্টি কুমড়ার বীজ রোপন করতে পারেন। এর বীজ মাটিতে রোপন করার ৬০ দিনের মধ্যেই মিষ্টি কুমড়া গাছে ধরতে শুরু করে। এর বীজ যদি আপনি কোথাও না পেয়ে থাকেন। তাহলে আপনার পার্শ্ববর্তী কোন নার্সারি থেকে গাছটি ক্রয় করতে পারেন অথবা প্যাকেটসহ বীজ ক্রয় করা যায়।
    • মুলা গাছঃ আপনি যদি মুলা গাছ ছায়াযুক্ত স্থানে চাষ করার জন্য আগ্রহী হয়ে থাকেন। তাহলে মূলত চাষ করতে পারেন। কারণ মুলার বীজ মাটিতে রোপন করার ৬০ দিনের মাথায় মূলা খাওয়া যায় এবং আপনি যদি মুলার শাক খেতে চান তাহলে ১৫ দিনের মাথায় খেতে পারবেন। এর বীজ এবং গাছ যদি ক্রয় করতে চান তাহলে আপনার নিকটবর্তী কোন নার্সারিতে যোগাযোগ করতে পারেন।
    • পুঁইশাক চাষঃ আমাদের বাড়ির আশেপাশের অনেকেই দেখা যায় বাড়ির আঙিনায় পুঁইশাক চাষ করতে। আপনিও চাইলে পুঁইশাক চাষ করতে পারেন। পুঁইশাক কিন্তু ছায়াযুক্ত স্থান ও রোদ পরে এমন স্থানে চাষ করা যায়। আপনি পুঁইশাক থেকে পুঁই মুচরি খেতে পারবেন যেটি খেতে অনেক সুস্বাদু। তাই আপনি যদি কোথাও পুঁইশাক এর গাছ না পেয়ে থাকেন। তাহলে আপনার নিকটস্থ কোনো নার্সারির সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
    • লাল শাক চাষঃ লাল শাক পছন্দ করে না এমন ব্যক্তি খুবই কমই রয়েছে। কারণ লাল শাকের মধ্যে যে ভিটামিন রয়েছে এবং এটি খেতে অনেক সুস্বাদু। এই জন্য সকলে এটি পছন্দ করে। আপনারাও পছন্দের তালিকায় যদি লাল শাক থাকে। তাহলে আপনার বাড়ির আঙ্গিনায় ছায়াযুক্ত স্থানে এটি চাষ করতে পারেন। এটি চাষাবাদের পরে খুব একটা যত্ন করতে হয় না। শুধু নিয়মিত পানি দিলেই হয়।

    ছায়ায় হয় এমন ফল গাছ

    আমরা অনেকেই জানি যে একমাত্র রোদ ছাড়া কোন গাছ বাঁচতে পারে না। হ্যাঁ এই কথাটি যেমন সত্য। ঠিক তেমনি ভাবে ছায়ায় হয় এমন ফল গাছ রয়েছে এই কথাটি ও সত্য। তাই আপনার বাসার ছাদে অথবা বেলকুনিতে জায়গা থাকে তাহলে আপনিও ফল গাছ লাগাতে পারেন।

    বড়ই গাছঃ বাংলাদেশে বসবাস করে বড়ই খাইনি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবেনা। আপনি যদি বড়ই পছন্দ করেন এবং বড় এর উপকারিতা আপনার ভালো লাগে। তাহলে আপনার বাড়ির ছাদে অথবা বাড়ির আঙিনায় যে কোন স্থানে গাছটি লাগাতে পারেন। কিন্তু অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে ওই স্থানটিতে দিনে কমপক্ষে দুই থেকে তিন ঘন্টা রোদ পড়তে হবে। তাহলে আপনি ওই স্থানে বরই গাছটি রোপণ করতে পারেন।

    লটকন ফল গাছঃ এই ফল গাছটি অনেকেরই অপরিচিত মনে হতে পারে। কিন্তু বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে এর পরিচিতি দিন দিন বেড়ে চলেছে। এর স্বাদ কিছুটা টক এবং মিষ্টি। এটি সম্পূর্ণ ছায়াযুক্ত স্থানে না হলেও দিনে দুই থেকে তিন ঘন্টা রোদ্রের আলো পড়লে গাছটি হয়। আপনি চাইলে গাছটি বাড়ির ছাদেও লাগাতে পারেন। এই গাছটি বিভিন্ন প্রকারের নার্সারিতে পাওয়া যায়। সেখান থেকে সংগ্রহ করতে পারেন।
    কলা গাছঃ এই গাছটির নাম শুনে কিছুটা অবাক হচ্ছেন। মনে করছেন কিভাবে কলা গাছ ছায়াযুক্ত স্থানে হতে পারে। কিন্তু কথাটি সত্য ছায়াযুক্ত স্থানে গাছটির লাগানো যায়। আপনার বাড়ির যে কোন স্থানে এই গাছটি লাগাতে পারেন। এখন গাছটি পাবেন কোথায়। গাছটি নার্সারিতে পাওয়া যায় না। বিভিন্ন ধরনের কলা বাগান রয়েছে সেখান থেকে ছোট ছোট চারা সংগ্রহ করতে হবে।

    সাজিনা গাছঃ আমাদের অতি পরিচিত একটি গাছ হচ্ছে সাজিনা। এমনকি এটি খেতে অনেক সুস্বাদু। বাঙ্গালীদের কাছে এটি এতটাই পরিচিত প্রায় অনেক বাড়িতে গাছটি দেখা যায়। কিন্তু আপনি কি জানেন এই গাছটি ছাইযুক্ত স্থানে হয়।

    কিন্তু অবশ্যই সেটি বারোমাসি বারোমাসি সাজিনা গাছ হতে হবে। এই গাছটি আপনি কোন ধরনের নার্সারিতে পাবেন না। এটির ওপেন করার জন্য সাজনা গাছের ডালের প্রয়োজন হয় এবং এর ডাল লাগানোর জন্য খুবই উপযোগী। আপনি চাইলে এর বীজ রোপন করে সাজনা গাছের ডাটা খেতে পারেন। বাড়ির যে কোন জায়গায় গাছটি হয়।

    আনারস চাষঃ এটি এমন একটি ফল যা শুধুমাত্র ছায়াযুক্ত স্থানে জন্মায়। এই ঝাঁঝালো স্বাদযুক্ত ফলটি যদি চাষ করার জন্য আগ্রহী হয়ে থাকেন। আর যদি আপনার বাসার পাশে কোন ছায়াযুক্ত স্থান থাকে। তাহলে আপনি চাষ করতে পারেন। আনারস চাষের জন্য যত্নশীল হতে হয়।

    পাতিলেবু গাছঃ লেবু জিনিসটি সকলেই পছন্দ করে। বিশেষ করে শরবত খাওয়ার জন্য লেবুর প্রয়োজনীয়তার কোন বিকল্প নেই। এই পাতিলেবু গাছটি বাড়ি যেকোনো ছায়াযুক্ত স্থানে লাগাতে পারেন।বাড়ির ছাদেও লাগাতে পারেন। এই গাছটি বাড়িতে লাগাতে চান। তাহলে অনলাইনে ক্রয় অথবা আপনার পার্শ্ববর্তী কোন নার্সারি থেকে এটি ক্রয় করতে পারেন। কিন্তু অবশ্যই দেখে নিবেন এটি পাতি লেবুর গাছ কিনা।
    জামরুল গাছঃ এই গাছটির নাম শুনেনি এমন মানুষ হয়তো পাওয়া যাবে না। আপনারা যেকোনো ধরনের অথবা কালারের ছায়াযুক্ত স্থানে জামরুল গাছ লাগাতে পারেন। কিন্তু ওই স্থানটিতে দিনে কমপক্ষে দুই থেকে তিন ঘন্টা রোদের আলো পড়তে হবে।

    আবার অতিরিক্ত রোদের তা পড়লেও গাছটির পাতা জ্বলে যেতে পারে। আপনি যদি বাড়ির ছাদে গাছটি লাগান তাহলে এই বিষয়টির উপরে লক্ষ্য রাখবেন। এই গাছটি আপনি যেকোন নার্সারিতে পেতে পারেন।

    বেল গাছঃ আপনারা কেউ কি বেলের শরবত খেতে পছন্দ করেন। বেল অনেক সুস্বাদু একটি ফল। আপনি চাইলে এটি ছায়াযুক্ত স্থানে লাগাতে পারেন। কিন্তু অবশ্যই সেই স্থানটিতে অন্তত পক্ষে দিনে ২ ঘণ্টার রোদ পড়তে হবে। এমন স্থানে লাগাবেন সেটি ছাদযুক্ত স্থান অথবা বাড়ির আশেপাশে ওই স্থানে অন্ততপক্ষে কিছুক্ষণ যেন রোদ পড়ে।

    কামরাঙ্গার গাছঃ টক ও মিষ্টি যুক্ত এই ফল গাছটি। আপনার বাড়ির ছাদে অথবা বাড়ির আশেপাশে লাগাতে পারেন। যেই সকল স্থানে কমপক্ষে দুই থেকে তিন ঘন্টা রোদ পড়ে। যে সকল স্থানে একদমই রোদ করে না ওই স্থানগুলোতে লাগাবেন না। কারণ ওই স্থানগুলোতে কামরাঙ্গা গাছ নাও হতে পারে।

    বাতাবি লেবু গাছঃ যারা বাতাবি লেবুর ঝালানি খেতে ভালো লাগে অথবা যারা বাতাবি লেবু খেতে পছন্দ করেন। তাদের জন্য বলছি যে সকল স্থানে দিনে অন্ততপক্ষে তিন ঘন্টার মতো রোদ পড়ে। ওই সকল স্থানে বাতাবি লেবু লাগাতে পারেন। এমনকি আপনি চাইলে আপনার বাসায় যদি ছাদ থাকে তাহলে সেখানেও টবের ভেতরে লাগাতে পারেন।

    ছায়ায় হয় এমন ফুল গাছ

    আপনাদের মধ্যে অনেকেই জানতে চেয়েছেন ছায়ায় হয় এমন ফুল গাছ সম্পর্কে। উল্লেখিত গাছগুলোতে দিনে সামান্য পরিমাণ হলেও রোদের ছোঁয়া লাগতে হবে।। এমনকি গাছগুলো আপনাকে বারোমাসি ফুল দিবে। এখানে যে গাছগুলো উল্লিখিত রয়েছে তার সবগুলো গাছ আপনি বারান্দায় অথবা ছাদে টবের ভেতরে লাগাতে পারবেন।
    • অপরাজিতা ফুল তিন ঘন্টা রোদ পেলেই গাছটি বেড়ে ওঠে। আপনি গাছটি ছাদে অথবা বেলকুনিতে টবের ভেতরে লাগাতে পারেন।
    • নয়নতারা ফুল গাছটি যদি হাইব্রিড হয় তাহলে দুই ঘন্টা রোদ হলে যথেষ্ট। আর যদি দেশীয় গাছ হয় এক ঘন্টা রোদ পড়লেই যথেষ্ট।
    • সন্ধ্যা মালতী ফুল গাছটি দুই থেকে তিন ঘন্টা রোদ পেলেই এরা সারা বছর ফুল দেয়। অসম্ভব দেখতে এই ফুল গাছটি বিকেলে ফোটে পরের দিন সকালে ফুল শুকিয়ে যায়।
    • পার্পেল হার্ট ফুল গাছটি তিন ঘন্টার মত যে স্থানগুলোতে রোদ পরে সেই স্থানে লাগাতে পারেন। ফুলটি দেখতে অনেক সুন্দর আপনার বেলকুনিতে অথবা ছাদে লাগাতে পারেন।
    • রঙ্গন ফুল গাছটি বাঁচাতে হলে কমপক্ষে ছয় ঘণ্টার মতো রোদ পড়তে হবে। এই গাছটি একেবারে ছায়াযুক্ত স্থানে হয় না।
    • কাটা মুকুট ফুল গাছটি অসাধারণ সুন্দর। এই গাছের চারিপাশে কাঁটাযুক্ত এজন্য এটির নাম কাটা মুকুট।

    উপসংহার

    পরিশেষে বলা যায় যে উপরে যে গাছগুলোর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এই সবগুলো গাছ বাংলাদেশের যে কোন স্থানে পাবেন। চাইলে আপনি অনলাইনের মাধ্যমে অর্ডার দিতে পারেন আবার বাংলাদেশের প্রায় সব নার্সারিতে গাছগুলো পাওয়া সম্ভব। এখানে যতগুলো গাছের নাম উল্লেখ করা হয়েছে সবগুলো গাছ ছায়াযুক্ত স্থানে হয়। আবার আপনি চাইলে কয়েকটি গাছ বাদে প্রায় সব গাছেই রোদ যুক্ত স্থানে লাগাতে পারেন।

    শেষ কথা

    প্রিয় পাঠক আশা করি ভাল আছেন। আপনারা ইতিমধ্যে ছায়ায় হয় এমন ফল গাছ এবং ছায়াযুক্ত স্থানে সবজি চাষ সম্পর্কে জেনে আশা করা যায় উপকৃত হয়েছেন। যদি এই বিষয়গুলো সম্পর্কে জেনে উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে আপনার পরিবার ও বন্ধুদের কে বিষয়টি জানান। পুরো তথ্যটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

    এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

    পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
    এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

    এসএইচ নিউজস্টোরের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

    comment url