চোখ গর্তে চলে গেলে করণীয় - চোখের নিচে গর্ত হয় কেন

আপনি কি চোখ গর্তে চলে গেলে করণীয় গুলো জানার জন্য এদিক-ওদিক খোঁজাখুঁজি করছেন। তাহলে এখনি খোঁজাখুঁজি বন্ধ করে চোখ গর্তে চলে গেলে করণীয় এই বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন। কারণ চোখ হলো শরীরের গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ হওয়ার কারণে চোখের নিচে গর্ত হয় কেন এই তথ্যটিও জানার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
চোখ গর্তে চলে গেলে করণীয় - চোখের নিচে গর্ত হয় কেন
আমাদের সকলের চোখ নিয়ে কখনো না কখনো সমস্যায় পড়তে হয়েছে। কখনো চোখের চুলকানি জনিত সমস্যা আবার এলার্জি জনিত সমস্যা। কিন্তু চোখের নিচে গর্ত হয় কেন এই বিষয়ের সাথে সম্পৃক্ত সমস্যায় পড়েছেন তাদের জন্যই তথ্যগুলো।
পোস্ট সূচীপত্রঃ 

    ভূমিকা

    চোখ মানুষের অনেক মূল্যবান একটি শারীরিক উপাদান। তাইতো চোখ নিয়ে মানুষ একটু বেশি সচেতন। আর এই জন্যই হয়তো চোখ গর্তে চলে গেলে করণীয় গুলো জানার জন্য এখানে উপস্থিত হয়েছেন। বাংলাদেশে ১৫ থেকে ২০ বছর আগেও মানুষের চোখের এতটা সমস্যা ছিল না। কিন্তু বর্তমান সময়ে দেখা যায় যে প্রায় মানুষের চোখের সমস্যা রয়েছে। 
    এর বড় কারণ হচ্ছে নিজেকে নিয়ম শৃংখলার বাইরে পরিচালনা করা। আজকাল যুবকদের অধিকাংশই রাত জাগার অভ্যাস রয়েছে। আর ঠিক এই কারণেই দেখা যায় অধিকাংশ যুবকদের চোখ গর্তের নিচে চলে যায় নয়তো চোখের নিচে কালো দাগ পরে। কারো কারো অল্প বয়সেই চোখের নিচে বয়স্কদের মতো ভাজ পড়ে যায়। এই সকল সমস্যার সমাধান নিয়েই আজকে আলোচনা করা হবে।

    চোখের নিচে গর্ত হয় কেন

    আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যাদের চোখের নিচে গর্ত হয় এবং চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে যায়। একদিন জান্নাতুল শিক্ষা সফরের যাবে তার বন্ধুদের সাথে। সে দেখতে অনেক সুন্দর। কিন্তু ইদানিং তার চোখের নিচে গর্ত এবং কালো দাগ দেখা যাচ্ছে।
    সে বিষয়টি নিয়ে খুবই চিন্তিত, সে জানার চেষ্টা করে চোখের নিচে গর্ত হয় কেন। সে তার এই সমস্যার সমাধানও পেয়ে যায়। আপনারাও যদি এই সমস্যায় পড়ে থাকেন যে চোখের নিচে গর্ত হয় কেন তাহলে নিচে তুলে ধরা পুরো তথ্যটি আপনাদের জন্য উপকারে আসবে।
    • অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার কারণে চোখের নিচের আস্তরণ ভেতরের দিকে ঢুকে যেতে পারে।
    • পর্যাপ্ত পরিমাণে না ঘুমানোর কারণে এই সমস্যাটি দেখা দেয়।
    • অনেকের বংশগত কারণেও চোখের নিচে গর্ত ও কালো দাগ দেখা দেয়।
    • ধূমপানের কারণেও চোখের নিচে গর্ত দেখা দিতে পারে।
    • যে সকল ব্যক্তি অতিরিক্ত অ্যালকোহল পান করেন তারা এই সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে।
    • শরীরে আয়রনের ঘাটতি দেখা দিলে চোখের নিচে গর্ত এবং কালো দাগ দেখা দেয়।
    • মেয়েদের পিরিয়ডের হওয়ার পর চোখের নিচে গর্ত ও কালো দাগ দেখা দেয়।
    • পর্যাপ্ত পরিমাণে শরীরে পানি না থাকলে সমস্যাটি সম্মুখীন হতে পারেন।
    • থাইরয়েড সমস্যা জনিত কারণে চোখের নিচে গর্ত দেখা দিতে পারে।
    • অতিরিক্ত মোবাইল অথবা কম্পিউটার ব্যবহারের কারণে সমস্যাটি হতে পারে।
    • অতিরিক্ত হস্তমৈথুন করলে চোখ গর্তে এবং নিচে কালো দাগ সার্কেল দেখা দিতে পারে।
    • শারীরিক দুর্বলতার কারণেও চোখের নিচে কালো দাগ দেখা দেয়।
    • সূর্যের অতিরিক্ত রোধের তাপ যদি চোখে পড়ে সেক্ষেত্রে চোখের নিচে কালো দাগ পড়তে পারে।
    • যেকোনো ডিজিটাল ডিভাইস অতিরিক্ত ব্রাইটনেস দিয়ে ব্যবহার করলে চোখের নিচে কালো দাগ পড়তে পারে।

    চোখের নিচের ভাজ দূর করার উপায়

    বর্তমান সময়ে প্রায় অনেক মানুষেরই একটি বড় সমস্যা হচ্ছে চোখের নিচের কালো দাগ অথবা চোখের নিচে ভাঁজ পড়ে যাওয়া আবার অনেকের চোখের নিচে গর্তের সৃষ্টি হয়। এই সকল সমস্যার বড় একটি কারণ হচ্ছে অতিরিক্ত রাত জাগা। তাই নিচে নিম্নে চোখের নিচের ভাঁজ দূর করার উপায় গুলো তুলে ধরা হলো। যে নিয়মগুলো মেনে ও ব্যবহার এর মাধ্যমে উপকৃত হবেন আশা করা যায়।
    ক্যাস্টর অয়েলঃ চোখের নিচের কুঁচকানো ভাজ দূর করার জন্য ক্যাস্টর অয়েল খুবই উপযোগী একটি তেল। এটি আপনার চোখের ভাজ দূর করার পাশাপাশি খুবই মসৃণ সুন্দর করে তুলবে। চোখের আশেপাশে ত্বকগুলো সব সময় সুস্থ রাখবে।

    ক্যাস্টর অয়েল দেওয়ার উপযুক্ত সময় হচ্ছে রাতের সময়টা। বিশেষ করে সবচেয়ে ভালো হয় আপনি যদি রাতে ঘুমানোর কিছুক্ষণ আগে ভাজকৃত স্থানে দিতে পারেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে ভালো করে মুখটি ধুয়ে ফেলুন।

    শসাঃ চোখের নিচের ভাঁজ দূর করার জন্য খুবই উপযোগী একটি উপাদান। শসা ছিলে গোল গোল করে কেটে সকালে গোসল করার আগে ১৫ থেকে ২০ মিনিট চোখের উপরে দিয়ে রাখলে। এভাবে করে যদি টানা ৩০ দিন ব্যবহার করা যায়। তাহলে আপনার চোখের নিচের ভাজ ও কালো দাগ দূরীকরণে সাহায্য করবে।

    অলিভ অয়েলঃ চোখের নিচের ভাজ ও কালো দাগ দূর করার জন্য এই তেলটি খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে। নিয়মিত দিনের যেকোনো সময় ভাজকৃত স্থানে ২০ থেকে ২৫ মিনিট দিয়ে রাখতে হবে। অতঃপর নির্দিষ্ট সময় পরে ভালো করে পানি দিয়ে চোখ ধুয়ে ফেলতে হবে। এভাবে করে কেউ যদি টানা ৩০ দিন ব্যবহার করে। তাহলে ইনশাআল্লাহ তার চোখের নিচের ভাঁজ দূর হয়ে যাবে।

    আলুঃ আপনার হয়তো অনেকেই মনে করবে আলো তো শুধু খাওয়ার কাজে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু আপনি জানলে অবাক হবেন আলুর রূপচর্চার কাজেও ব্যবহার করা হয়। আপনার চোখের নিচের কালো ভাঁজ দূর করতে আলুর মধ্যে রয়েছে উপকারিতা।

    কেউ যদি দিনে একবার ২০ থেকে ২৫ মিনিট আলু গোল গোল করে কেটে চোখের উপরে দিয়ে রাখতে পারে। কিন্তু অবশ্যই একটানা ৩০ দিন ব্যবহার করতে হবে। অবশ্যই সেটি কাঁচা আলু হতে হবে। তাহলে দেখবেন ইনশাআল্লাহ আপনার চোখের নিচের কালো ভাঁজ অথবা চোখের নিচের কালো দাগ দূর হয়ে যাবে।
    ঘুমঃ একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের কমপক্ষে ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানোর প্রয়োজন রয়েছে। চোখের নিচের কালো দাগ, চোখ গর্তে চলে যাওয়া, চোখের নিচে ভাঁজ পড়ে যাওয়া এই সকল সমস্যার সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে অপর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম। তাই আপনি পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমিয়ে চোখের নিচের এই সমস্যাগুলো ভালো করতে পারেন।

    চোখ গর্তে চলে গেলে করণীয়

    এদের মধ্যে অনেকে আছে যাদের চোখ গর্তে চলে গেছে অথবা চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে গেছে। এই দুটি সমস্যার সমাধানে করণীয় প্রায় একই। বর্তমানে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এই সমস্যাটি অনেক বেশি দেখা যাচ্ছে। এর একটি বড় কারণ হচ্ছে অনিয়মিত ঘুম ও অনিয়মিত চলাফেরা।
    নিজেকে নিয়ম শৃংখলার ভিতরে আনতে পারলে সমস্যাটি থেকে নিজেকে উদ্ধার করা যাবে। তাই আপনাদের সুবিধার্থে চোখ গর্তে চলে গেলে করণীয় গুলো কি কি রয়েছে তার নিচে নিম্নে তুলে ধরা হলো।
    • রাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে কমপক্ষে রাতে আট ঘণ্টার মতো সময় ঘুমানো সবচেয়ে ভালো।
    • ২৪ ঘন্টার মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খেতে হবে। একজন প্রাপ্তবয়স্ক ও স্বাভাবিক মানুষের দিনে কমপক্ষে ৩ লিটারের মতো পানি খাওয়া উচিত।
    • অতিরিক্ত চিন্তা, মানসিক চাপ এগুলো থেকে দূরে থাকতে হবে। সব সময় হাসিখুশি থাকার চেষ্টা করতে হবে।
    • পর্নোগ্রাফিতে অভ্যস্ত হয়ে থাকলে এগুলো দেখা থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে।
    • অতিরিক্ত ফোন অথবা বিনা প্রয়োজনে মোবাইল ফোন এর ব্যবহার কমিয়ে আনতে হবে।
    • আপনার মোবাইল ফোন ও কম্পিউটারে অতিরিক্ত আলো ব্যবহার করলে তা কমিয়ে নিম্ন পর্যায়ে এনে ব্যবহার করতে হবে।
    • ধুমপান ও অ্যালকোহল জাতীয় দ্রব্য সেবন করা যাবে না।
    • প্রতিদিন নিয়মিত শাকসবজি খেতে হবে। যাতে আপনার শারীরিক গঠন ভালো থাকে।
    • নিয়মিত শসা গোল করে কেটে চোখের উপরে ২০ থেকে ২৫ মিনিট দিয়ে রাখুন। একটানা এক মাস ব্যবহার করুন।
    • চোখের নিচে গর্ত দূর করার জন্য আলু ব্যবহার করতে পারেন। ঠিক শসা যে নিয়মে ব্যবহার করছেন।
    • ঠান্ডা দুধ নরম তুলার মাধ্যমে চোখের নিচে নিয়মিত দিতে থাকুন। কিন্তু অবশ্যই ১২ থেকে ১৫ মিনিট পর পর ধুয়ে ফেলবেন।
    • চোখের নিচের গর্ত দূর করার জন্য টি ব্যাগ ব্যবহার করুন। অবশ্যই রাতের সময়টা টি ব্যাগ ব্যবহার করবেন।
    • চোখের নিচের গর্ত দূর করার আরেকটি উপায় হচ্ছে বাদামের তেলের ব্যবহার। এই তেলটি চোখের নিচে দিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। অতঃপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
    • আপনি যদি একজন মুসলিম হয়ে থাকেন তাহলে নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ুন।

    চোখ মুখ বসে যাওয়ার কারণ

    আপনারা অনেকেই জানতে চেয়েছেন যে চোখমুখ বসে যাওয়ার কারণ কি হতে পারে। এই কথার উপর ভিত্তি করে বলা যায় যে আপনি শারীরিকভাবে অনেক দুর্বল। মানসিক চাপ ও টেনশন করার জন্য চোখ মুখ বসে যায়। এই মানসিক চাপের কারণে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম হয় না যার কারণে শারীরিক ঘাটতি দেখা দেয়। অশৃংখল ভাবে চলাফেরা যেমন ধূমপান ও অ্যালকোহল পান করা।
    শারীরিক পরিশ্রম না করা। নিজেকে নিয়ে বেশি বেশি চিন্তা করা। নিজেকে সব সময় বদ অভ্যাসগুলোতে মাতিয়ে রাখা। এগুলো থেকে উত্থান পেতে হলে সঠিক পরিমাণে শাকসবজি সহ পুষ্টিকর যে সকল খাদ্য রয়েছে সেগুলো খেতে হবে। বদভ্যাসগুলো বাদ দিয়ে ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী নিজেকে পরিচালনা করতে হবে। সঠিক পরিমাণে ঘুমাতে হবে এবং শরীরের ক্ষতি করে এমন খাবার খাওয়া থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হবে।

    উপসংহার

    পরিশেষে বলা যায় যে মানুষের শরীরের মধ্যে যতগুলো গুরুত্বপূর্ণ অংশ রয়েছে তার মধ্যে চোখ হচ্ছে অন্যতম। কারণ বিনা চোখে পুরো পৃথিবীটাই অন্ধকার। তাই আমাদের সকলেরই উচিত চোখের বিষয়টি নিয়ে সচেতনতা অবলম্বন করা। আপনি যদি একজন প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে থাকেন আর এই সময় যদি আপনার চোখের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।

    সেগুলো সমাধানের জন্য কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করেন। তাহলে বৃদ্ধ সময়ে গিয়ে আপনার চোখে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিবে এমনকি আপনি চোখে কম দেখতে পারেন। তাই সময় থাকতে চোখের এবং নিজের যত্ন নিন। কারণ শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা সকল উৎসের মূল কারিগর। তাই নিজের বিষয়ে সচেতনতা অবলম্বন করুন এবং যত্নশীল হন।

    শেষ কথা

    প্রিয় পাঠক আশা করি ভাল আছেন। আপনারা ইতিমধ্যে চোখ গর্তে চলে গেলে করণীয় এর সাথে জড়িত আরো অনেক যে বিষয়গুলো রয়েছে সেগুলো জেনে উপকৃত হয়েছে। আর যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে আরো যাদের এই সকল বিষয়ে সমস্যা রয়েছে তাদের সাথে তথ্যটি শেয়ার করুন। তাদেরকেও এই বিষয়টি সম্পর্কে জানার সুযোগ করে দিন।

    এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

    পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
    এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

    এসএইচ নিউজস্টোরের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

    comment url