টিয়া পাখির উপকারিতা - টিয়া পাখির বাসার ধরন
বুদ্ধিমান টিয়া পাখির উপকারিতা সম্পর্কে আমরা অনেকেই অবগত নয়। আপনারা যদি টিয়া পাখির সম্পর্কে জানার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেন। যদি বিষয়টি নিয়ে খোঁজাখুঁজি করে থাকেন। তাহলে আর দেরি না করে টিয়া পাখির উপকারিতা ও টিয়া পাখির বাসার ধরন গুলো কেমন এই সম্পর্কে তথ্যগুলো জেনে নিতে পারেন।
টিয়া পাখির বুদ্ধির কাছে অন্যান্য সকল পাখি হার মানতে পারে। এই পাখিটির বিশেষ একটি গুণ রয়েছে সেটি হচ্ছে পাখিটি কথা বলতে পারে। তাই আপনারা যদি টিয়া পাখি সম্পর্কে জানার আগ্রহ থাকে। তাহলে এই পুরো তথ্যটি আপনার জন্য।
পোস্ট সূচীপত্রঃ
টিয়া পাখি কাকে বলে
এই সুন্দরতম ও মুগ্ধতা সম্পূর্ণ পাখিটি বুদ্ধি সম্পন্ন হয়ে থাকে। এই পাখিদের আচার-আচরণ অন্যান্য পাখিদের থেকে ভিন্ন হয়। বাংলাদেশে ছয় প্রজাতি টিয়া পাখি পাওয়া যায়। আপনি জানেন টিয়া পাখির উপকারিতা ও বৈশিষ্ট্য অন্যান্য সকল পাখিদের থেকে ভিন্ন হয়।
এরা মানুষের সাথে কথা বলতে পছন্দ করে। পুরো পৃথিবীতে এত সুন্দর পাখি খুব কম সংখ্যায় রয়েছে। তাইতো এ পাখিটি সকলের পছন্দের তালিকায় রয়েছে। তাই আপনারা যারা টিয়া পাখি পছন্দ করেন। তারা পাখিটি খাচায় রেখে পোষ মানাতে পারেন।
টিয়া পাখির বাসার ধরন
আমরা সকলেই টিয়া পাখি দেখেছি এবং জানি টিয়া পাখি কথা বলতে পারে। এই সুন্দর পাখির বাসার ধরন পরিবেশের সাথে পরিবর্তন হয়। আপনি যদি বাড়িতে লালন পালন করতে চান তাহলে খাচায় পোষ মানাতে পারেন। এর জন্য ১২ থেকে ১৫ ইঞ্চির খাঁচার প্রয়োজন হবে।
আরো পড়ূনঃ তোকমা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
এক জোড়া টিয়া পাখির জন্য। পাখিটি পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারে। যখন যেমন পরিবেশে থাকে তার সাথে মানিয়ে চলার চেষ্টা করে। যেমন তারা যখন খাঁচার বাহিরে থাকে।
তখন কোন জঙ্গলে বাসা বাঁধে, গাছের ভেতরে বাসা বাঁধে, পাহাড়ের উপরে কোন এক কোনায় ইত্যাদি জায়গায় বাসা বাঁধতে পারে। তবে সব প্রজাতির পাখি সব জায়গায় বসবাস করতে পারেনা। কিছুটা প্রজাতি ভেদে বাসার ধরন পরিবর্তন হয়। এরা যখন পরিবার গঠন করে, তাদের বড় বাসার প্রয়োজন হয়।
টিয়া পাখির বৈশিষ্ট্য
পৃথিবীতে বহু প্রজাতির পাখি রয়েছে। যার মধ্যে একটি প্রজাতি হচ্ছে টিয়া পাখি। এই পাখিটির বৈশিষ্ট্যের কারণে অনেক পরিচিতি লাভ করেছে। তাই টিয়া পাখির বৈশিষ্ট্য মুগ্ধ করেছে পাখি প্রেমীদের। তাই আর দেরি না করে পাখিটির বৈশিষ্ট্য ও আচার-আচরণ সম্পর্কে জেনে নিন।
আরো পড়ূনঃ বরই পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
- টিয়া পাখি অন্যান্য সকল পাখিদের থেকে বুদ্ধিমান হয়ে থাকে।
- এই পাখিটির ঠোঁট লাল রংয়ের ও সূক্ষ্ম হয়।
- এই পাখিদের গলায় গোল করে লাল দাগ কাটা থাকে।
- পৃথিবীতে যত সুন্দর পাখি রয়েছে তাদের মধ্যে টিয়া পাখি অন্যতম।
- পাখিটি বিভিন্ন কালারের হয়ে থাকে সবুজ, লাল ও হলুদ সহ আরো বিভিন্ন রঙের।
- টিয়া পাখি মানুষের সাথে কথা বলতে পারে।
- টিয়া পাখির আয়ুষ্কাল প্রধানত ৬০ বছর পর্যন্ত হতে পারে।
- সাধারণত পাখিটি ধান ও শস্য ইত্যাদি খেয়ে বেঁচে থাকে।
- অন্যান্য সকল পাখির মত টিয়া পাখি ও পোষা প্রাণী হিসেবে পরিচিত।
- টিয়া পাখি অনেক শান্ত স্বভাবের হয়ে থাকে।
আরো পড়ূনঃ গাঁজা খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা
টিয়া পাখির উপকারিতা
আমরা টিয়া পাখির সৌন্দর্যের প্রেমে পড়ে যায়। প্রত্যেকটি টিয়া পাখির কিছু ভালো দিক রয়েছে। পৃথিবীতে টিয়া পাখির উপকারিতার সম্পর্কে ধর্ম অনুযায়ী ব্যাখ্যায় ভিন্নতা রয়েছে। কেউ কেউ বিশ্বাস করে বাড়িতে টিয়া পাখি থাকলে সুখ শান্তি ঘরে নিয়ে আসে ও পরিবারের উন্নতির চাকা ঘুরতে শুরু করে। কিন্তু ইসলাম ধর্মে এই সকল কথা বিশ্বাস করে না। কারণ এই সকল কথা বিশ্বাস করলে শিরক করা হবে। তবুও টিয়া পাখির কিছু ভালো দিক রয়েছে সেগুলো তুলে ধরা হলো।
- টিয়া পাখির সাথে কথা বললে মন ভালো হয়ে যায়।
- টিয়া পাখির সৌন্দর্যতার দিকে তাকালে চোখ মুগ্ধতায় ভরে যায়।
- টিয়া পাখি বাড়িতে আসা অন্য সকল অতীতের স্বাগতম জানায়।
- টিয়া পাখি ঘরে থাকলে তার আনাগোনা সব সময় বাড়িতে অন্যরকম পরিবেশ বজায় থাকে।
- এই পাখিটি খাঁচায় রেখে পোষা যায়।
আপনারা যারা টিয়া পাখি পছন্দ করেন ও পাখিটি সৌন্দর্য তাই মুগ্ধ তারা পাখিটি খাঁচায় রেখে লালন পালন করতে পারেন। এতে করে বাড়ির সৌন্দর্যতা বৃদ্ধি করবে। তার মধুর কন্ঠে পরিবারের সকল সদস্যদের মনকে প্রফুল্ল করে তুলবে। টিয়া পাখি অনেক প্রজাতির হয়। কিন্তু বাংলাদেশে কয়েকটি প্রজাতির পাওয়া যায়।
আরো পড়ূনঃ
টিয়া পাখির খাবার
প্রত্যেকটি প্রাণীর খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তবে সকল প্রাণী একই ধরনের খাদ্য পছন্দ করে না। প্রাণীর প্রজাতিভেদে তাদের খাদ্য তালিকা হয়ে থাকে। ঠিক তেমনি ভাবে টিয়া পাখির খাবার তালিকার রয়েছে। টিয়া পাখির খাবার তালিকার লিস্টটা অনেক বড় হয়।
পাখিটি সাধারণত দানাদার খাদ্য বেশি পছন্দ করে এবং এদের জন্য দানাদার খাদ্য সবচেয়ে উপযোগী। দানাদার খাদ্যের মধ্যে রয়েছে ধান, সূর্যমুখী বীজ, মটর দানা, নরম ছোলা, বাজরা, কেনারি ও বাদাম এই খাবারগুলো টিয়া পাখি অনেক পছন্দ করে।
আরো পড়ূনঃ টুনা মাছের উপকারিতা
তাইতো নিয়মিত পাখির খাদ্যের তালিকায় এই খাদ্যগুলো রাখেন। ফল জাতীয় খাদ্য টিয়া পাখিকে দিতে পারেন। যেমন ডালিম, আঙ্গুর, জাম, গোলমরিচ, পেয়ার, আপেল, আম, পাকা পেঁপে, গাজর, শসা, বাদাম, মিষ্টি কুমড়ার বীজ ও তরমুজ খাওয়াতে পারেন। কিন্তু টিয়া পাখিকে তরকারি, ভাত, চিপস এই সকল জাতীয় খাদ্য খাওয়াবেন না। এতে করে টিয়া পাখির স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে।
টিয়া পাখির প্রজনন কাল
সব ধরনের পাখিদের প্রজনন কালের নির্দিষ্ট সময় থাকে। তারা ঠিক ওই সময় প্রজনন সম্পূর্ণ করে থাকে। আর এমনই ভাবে টিয়া পাখিরও প্রজনন কাল রয়েছে। তারা ওই সময় প্রজনন ঘটিয়ে থাকে। সাধারণত জানুয়ারির পর থেকে ছয় মাসের মধ্যে এদের প্রজনন কাল চলে। এই সময় তারা বাসস্থান খুঁজে বেড়ায়। কারণ দেখা যায়, বিভিন্ন কারণে তাদের বাসস্থান বিক্ষিপ্ত হয়ে যায়।
তাই এই পাখিরা বিভিন্ন ধরনের পাখিদের বাসার দখল করে। তারপরে সেই স্থানে তারা প্রজনন সম্পন্ন করে। প্রজননের সময় টিয়া পাখিরা ৫ টা পর্যন্ত ডিম দিয়ে থাকে। অনেক সময় সকল ডিম থেকে বাচ্চা ফুটতে পারে। আবার দেখা যায় কিছু ডিম নষ্ট হয়ে যায়। টিয়া পাখিরা প্রজনন কালে খুব সতর্কতা অবলম্বন করে।
সবুজ টিয়া পাখি কত বছর বাঁচে
প্রত্যেকটি প্রাণীকে মৃত্যুবরণ করতে হবে এটা প্রকৃতির নিয়ম। আর এই নিয়মের বাহিরে কোন প্রাণীর যাওয়া সম্ভব নয়। আর তাইতো টিয়া পাখিরও একদিন মৃত্যুবরণ করতে হবে। টিয়া পাখি কত বছর বাঁচতে পারে। একটি টিয়া পাখি সাধারণত ৫০ থেকে ৬০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে বলে জানা যায়।
টিয়া পাখি কত বছর বয়সে ডিম দেয়
আপনারা অনেকেই জানতে চেয়েছেন টিয়া পাখি কত বছর বয়সে ডিম অথবা বাচ্চা দেয়। সাধারণত জন্মের পর থেকে নয় মাসের মধ্যে টিয়া পাখি ডিম দিয়ে থাকে। ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই মাসের মধ্যে বাচ্চা দিয়ে থাকে। এরা বছরে তিন থেকে পাঁচটা পর্যন্ত বাচ্চা দেওয়ার সক্ষমতা রাখে।
টিয়া পাখির স্বভাব
অন্যান্য পাখির মত টিয়া পাখিরও স্বভাব ভিন্ন হয়ে থাকে। টিয়া পাখি অনেক চঞ্চল প্রকৃতির হয়। এরা মানুষের সংস্পর্শে আসতে পছন্দ করে। টিয়া পাখি কথা বলতে বেশি পছন্দ করে। এরা যেকোন পরিবেশের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে।
তারা বিপরীত লিঙ্গের সংস্পর্শ ছাড়া বেশি দিন বাঁচতে পারে না। বিশেষ করে প্রজননের সময় এরা একা থাকতে পারে না। টিয়া পাখির বুদ্ধি অন্যান্য সকল পাখিদের থেকে একটু বেশি। তাদের আচার-আচরণ দ্বারা বুঝিয়ে থাকে তারা কখন কি চায়।
উপসংহার
আমরা টিয়া পাখির সম্পর্কে অনেক কিছু জেনেছি। টিয়া পাখির আচার-আচরণ সহ আরও অনেক বিষয়। যারা টিয়া পাখির আচার-আচরণে মুগ্ধ এবং পাখি প্রজাতিকে অনেক ভালোবাসেন। যদি আপনারা পাখি পালনে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে এই পাখিটি লালন পালন করতে পারেন। আর যারা ইতিমধ্যে পাখিটি খাচায় পালন করছেন। তারা এই সকল পদ্ধতি গুলো অবলম্বন করুন এবং পাখিটিকে অনেক স্নেহের সাথে পালন করুন।
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক আশা করি ভাল আছেন। আপনারা ইতিমধ্যে টিয়া পাখির উপকারিতা ও তার বাসস্থানের ধরন সম্পর্কে জেনে উপকৃত হয়েছেন। আর যদি আপনারা উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে আপনার বন্ধু ও পরিবারের সকলকে টিয়া পাখির বৈশিষ্ট্য সহ আরো যে সকল বিষয় রয়েছে জানিয়ে দিন। পুরো তথ্যটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
এসএইচ নিউজস্টোরের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url