চিড়া খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন

আপনি নিশ্চয়ই চিড়া খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানার জন্য খোঁজাখুঁজি করছেন। তাহলে খুঁজাখুঁজি বন্ধ করে চিড়া খাওয়ার উপকারিতা ও চিড়া খাওয়ার অপকারিতা গুলো জেনে নিতে পারেন। চিড়া খাওয়ার নিয়ম গুলো জানলে চিড়া খাওয়ার উপকার ও পুষ্টি গুনাগুন পাবেন। তাহলে গুরুত্বপূর্ণ কিছু চিড়া খাওয়ার উপকারিতা জেনে নিতে পারেন।
চিড়া খাওয়ার উপকারিতা, অপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম গুলো জেনে নিন
দই ও চিড়া খেতে যেমন সুস্বাদু ঠিক তেমনি এর উপকারিতা। তাইতো আমরা অনেকেই নিয়মিত চিড়া খেতে পছন্দ করি। কিন্তু হয়তো আমরা অনেকেই চিড়া খাওয়ার নিয়ম গুলো জানিনা। যার কারণে সঠিক উপকার পাওয়া সম্ভব হয় না।
পোস্ট সূচীপত্রঃ 

    সারসংক্ষেপ

    বাঙালির শত বছরের ইতিহাস হচ্ছে চিড়া। বাংলাদেশের মানুষ যেমন ভাত খেতে অনেক পছন্দ করে ঠিক তেমনি চিড়া খেতেও পছন্দ করে। আমাদের পূর্বপুরুষেরা যুগ যুগ ধরে চিড়া খেয়ে আসছে। তারা মনে করতেন চিড়া খাওয়ার মধ্যে শরীরের জন্য অনেক উপকার রয়েছে।

    আর বর্তমান সময়ে এটি প্রমাণিত হয়েছে যে চিড়া খাওয়ার মধ্যে আসলেই অনেক উপকার রয়েছে। নিয়মিত চিড়া খাওয়ার মাধ্যমে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি শরীরের শক্তি যোগায় ও পেট ঠান্ডা রাখতে সহায়তা করে। আরো অনেক প্রকারের উপকার আছে এই চিড়া খাওয়ার মধ্যে। কিন্তু বর্তমান সময়ে আমরা এটিকে তুচ্ছ খাবার মনে করি।
    আমরা সকালে ঘুম থেকে উঠে জ্যাম পাউরুটি, ভাত, রুটি ও চা বিস্কুটের মত অতিরিক্ত গ্যালারিযুক্ত খাবার খায়। কিন্তু সকালে ঘুম থেকে উঠে চিড়া খেলে অনেক ধরনের উপকার পাবেন। শুধুমাত্র সকালেই না দিনের যেকোনো সময় চিড়া খেতে পারেন। কারণ চিড়ার মধ্যে রয়েছে কম পরিমাণে ফ্যাট ও ভালো কোলেস্টেরল যা শরীরকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।

    কিন্তু চিড়া খাওয়ার কিছু নিয়ম রয়েছে সেগুলো না মেনে খেলে শরীরে নানান ধরনের ক্ষতি দেখা দিতে পারে। তাহলে আর দেরি না করে চিড়া খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন। চিড়া খাওয়ার আগে অবশ্যই এই সম্পর্কে আমাদের সকলেরই জানা প্রয়োজন।

    চিড়া খেলে কি হয়

    আমরা অনেকেই আছি যারা চিড়া খেতে পছন্দ করি না। কিন্তু আপনি কি জানেন চিড়া খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে। বর্তমান সময়ে চিড়া খাওয়ার আগ্রহ মানুষের মধ্যে কমে গেছে। এর বড় একটি কারণ হচ্ছে সকলেই মনে করে এটি একটি তুচ্ছ খাবার। কিন্তু এই ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল। কারণ চিড়ার মধ্যে রয়েছে প্রোটিন, খনিজ ও ফাইবার সহ আরো অনেক উপকরণ।
    যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, পেট ঠান্ডা রাখতে দারুন উপকার, কিডনি সুস্থ রাখা সহ আরো অনেক উপকারিতা রয়েছে। তাইতো আমাদের সকলেরই প্রয়োজন প্রতিদিন নিয়মিত চিড়া খাওয়া। শুধু চিড়া খেলে উপকারিতা মিলবে এমনটি নয়। এই খাবারটি খাওয়ার মধ্যে অপকারিতাও রয়েছে। তাইতো চিড়া খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে তথ্যগুলো জেনে নিতে পারেন।

    চিড়া খাওয়ার উপকারিতা

    ১। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য দারুন উপকারী। প্রতিদিন সকালে চিড়া খাওয়ার মাধ্যমে এই উপকারটি পেতে পারেন। যাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাই বাসা বাঁধে তারা ভেজানো চিড়া খাবেন। কারণ চিড়ার মধ্যে আছে অনেক পুষ্টিকর উপকরণ যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। শরীরের মধ্যে তৎক্ষণাৎ যথেষ্ট পরিমাণে শক্তি যোগায়।

    ২। পেটের জন্য উপকারঃ যাদের পেটে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা লেগেই থাকে তাদের জন্য রয়েছে চিড়া। ডায়রিয়া, হজমের সমস্যা, পেট ব্যথা ও পেটে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার সমাধানে দারুন ভূমিকা পালন করে থাকে। কারণ অন্যান্য আঁশযুক্ত খাবারের থেকে চিড়ায় আঁশের পরিমাণ কম থাকে। যা পেটের সমস্যা দূর করতে সহযোগিতা করে থাকে। তাই তো অন্যান্য পুষ্টিকর খাবারের পাশাপাশি ভেজানো চিড়া খেতে থাকুন।

    ৩। কিডনির জন্য উপকারঃ আমাদের মধ্যে অনেকেই আছি যারা দীর্ঘদিন কিডনি সমস্যায় ভোগান্তি পোহাচ্ছি। তারা নিয়মিত চিড়া খাওয়ার মাধ্যমে কিডনির সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। কারণ চিড়ার মধ্যে পটাশিয়াম ও সোডিয়ামের পরিমাণ কম থাকায় কিডনি ভালো রাখতে সাহায্য করে। তাই আজ থেকে চিড়া খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

    ৪। অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য উপকারঃ যারা অতিরিক্ত ওজন নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন। এই ওজন কিভাবে কমাবেন তা বুঝতে পারছেন না। তারা ডায়েটের খাবার তালিকায় চিড়াযুক্ত করতে পারেন। কারণ চিড়াই ফ্যাটের পরিমাণ কম রয়েছে।
    আপনার যখন খিদা লাগবে তখন অন্যান্য ফ্যাট যুক্ত খাবার না খেয়ে চিড়া খেতে পারেন। এই খাবার আপনাকে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত শক্তিযোগায় ও পেট ভরা রাখতে সহযোগিতা করে। তবে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ভেজানো চিড়া খাওয়ার মধ্যে ওজন নিয়ন্ত্রণে বেশি উপকার পাওয়া যায়।

    ৫। উচ্চ রক্তচাপঃ বর্তমানে অনেক মানুষের মধ্যেই উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা দেখা যায়। নিয়মিত চিড়া খেলে রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। চিকিৎসকের মতামত অনুযায়ী চিড়া খেলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। তাই নিয়মিত খাদ্য তালিকায় চিড়া রাখতে পারেন।

    ৬। দাঁতের জন্য উপকারঃ যাদের দাঁতের মাড়ি দুর্বল ও ঠান্ডা খেলে দাঁত শিরশির করে তারা চিড়া খেতে পারেন। চিড়া দাঁতের গোড়ালি মজবুত করে এবং দাঁতের শিরশির ভাব দূরীভূত করতে সাহায্য করে। ভেজানো চিড়ার সাথে চিনি ও গুড় বাদে কলা বা আম দিয়ে খেতে পারেন। এতে করে দাঁতের জন্য অনেক উপকার মিলবে।

    ৭। ডায়াবেটিসের জন্য উপকারঃ আপনারা অনেকেই বলতে পারেন চিড়া আবার ডায়াবেটিসের জন্য কিভাবে উপকার। চিড়া খাওয়ার মধ্যে ডায়াবেটিসের জন্য উপকার রয়েছে। নিয়মিত চিড়া খাওয়ার ফলে রক্তের শর্করার মাত্রা কমাতে ও নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। তবে শুধু চিড়া খাওয়ার মাধ্যমেই এই উপকারিতাটি বেশি মিলবে। আপনি চাইলে খালি পেটে অথবা দিনের যেকোনো সময় খেতে পারেন।

    ৮। পেট ঠান্ডার জন্য উপকারঃ আমরা অনেকেই শারীরিক পরিশ্রম করি যার ফলে দেখা যায় শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ে। আর কাজ করতে ইচ্ছে করেনা। এই কাজের ইচ্ছে শক্তিকে বাড়ানোর জন্য ভেজানো চিড়ার সাথে কলা খেতে পারেন। এটি আপনাকে তৎক্ষণাৎ শক্তি বাড়াতে ও ক্লান্তি ভাব দূর করতে সহায়তা করবে। আর পেট ঠান্ডা রাখতেও সাহায্য করবে।

    ৯। গর্ভবতী মায়ের জন্য উপকারঃ গর্ভাবস্থায় মায়েদের অনেক পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার প্রয়োজন পড়ে। ওই পুষ্টিকর খাবার গুলোর পাশাপাশি চিড়া খাওয়াতে পারেন। চিড়া শরীরের রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে। আর গর্ভাবস্থায় মায়েদের রক্তস্বল্পতা দেখা দিতে পারে। তাই নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে চিড়া খাওয়াতে পারেন। এতে করে অনেক উপকারিতা ও পুষ্টি গুনাগুন মিলবে।
    ১০। ত্বকের জন্য উপকারঃ চিরা খাওয়ার মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে ত্বকের জন্য উপকারিতা ও পুষ্টি গুনাগুন। যা আপনার ত্বকের কোষ গুলোকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। ত্বকের কোষের মধ্যে থেকে খারাপ কোষগুলোকে দূর করতে সহায়তা করে। তাই খালি পেটে ভেজানো চিড়া খেতে পারেন।

    চিড়া খাওয়ার অপকারিতা

    আমরা ইতিমধ্যে চিড়া খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনেছি। এই পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাবারটির অপকারিতা রয়েছে। তাইতো প্রত্যেকটি খাবার খাওয়ার আগে এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া প্রয়োজন। তবে চিড়া খাওয়ার অপকারিতা নেই বললেই চলে। কারণ একটু নিয়ম মেনে খেলেই এর উপকারিতা পাওয়া যায়। তাহলে আর দেরি না করে চিড়া খাওয়ার অপকারিতা জেনে নেয়া যাক।
    • অতিরিক্ত চিড়া খেলে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতে থাকে।
    • একটানা বেশিদিন চিড়া খাওয়া যাবে না খেলে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতে শুরু করবে। মাঝখানে চিড়া খাওয়ার বিরতি দিয়ে আবার খাওয়া শুরু করতে হবে।
    • অতিরিক্ত পরিমাণে চিড়া খাওয়ার ফলে হৃদরোগের সমস্যা হতে পারে। আবার নিয়মিত অথবা একটানা বেশিদিন চিড়া খাওয়া যাবে না। এভাবে খেলেও হৃদরোগের সমস্যা হতে পারে।
    • চিড়া বেশিক্ষণ ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে।
    • যাদের ডায়বেটিস রয়েছে চিড়া খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ চিড়াতে শর্করার পরিমাণ বেশি রয়েছে।

    চিড়া খাওয়ার নিয়ম

    চিড়া খাওয়ার নির্দিষ্ট কোন নিয়ম নেই। তবে কিছু নিয়ম আছে যেগুলো মেনে খেলে উপকার একটু বেশি পাওয়া যায়। এই পুষ্টি ও গুনাগুন সম্পূর্ণ খাদ্যটি খেতে অনেক সুস্বাদু। এ খাদ্যটির সাথে আপনি অনেক রকমের ভ্যারাইটি মিশিয়ে করে খেতে পারবেন। তবে মনে রাখবেন অতিরিক্ত কোন জিনিস ভালো নয়। অতিরিক্ত খেলে খাওয়ার নিয়ম ভঙ্গ হবে।

    এর ফলে দেখা যাবে নানান ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া শরীরে দেখা দিচ্ছে। আবার নিয়মিত খাওয়া যাবেনা মাঝখানে কিছু দিনের বিরতি রাখতে হবে। তাহলে ছেঁড়া খাওয়ার মাধ্যমে অপকারিতার থেকে উপকারিতায় বেশি পাবেন। এখন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে অথবা কোন নিয়মগুলো মেনে চিড়া খাওয়া যায়।
    • সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে পরিমাণ মতো ভেজানো চিড়া খাওয়া যায়। এর সাথে কলা অথবা হালকা পরিমাণে চিনি মিশিয়ে করে খেতে পারেন। অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে প্রত্যেকটি জিনিস যেন পরিমাণ মত হয়।
    • আবার রাতে ঘুমানোর দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা আগে ভেজানো চিড়া খেয়ে নিতে পারেন।
    • সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১৫ মিনিট চিড়া ভিজিয়ে রেখে ভালো করে পানি ছেঁকে পাকা আম দিয়ে মাখিয়ে খেতে পারেন।
    • চিড়ার সাথে কলা, দুধ, আম, মধু, চিনি, নুন মিশিয়ে খেতে পারেন। যেভাবেই খান না কেন উপকারিতা পাওয়া যাবে। কিন্তু চিনি দিয়ে খেলে উপকার একটু কম পাওয়া যায়।
    পরিশেষে বলা যায় প্রত্যেকটি খাদ্যের নির্দিষ্ট কিছু উপকারিতা রয়েছে। যদি তার নিয়মগুলো ভঙ্গ না করা হয়। আর অতিরিক্ত পরিমাণে যে কোন জিনিস খেলে তার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। আবার নিয়মিত বেশি দিন খেলে এর অপকারিতা দেখা দিতে পারে। সুতরাং এমন ভাবে খেতে হবে যেন এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো শরীরের দেখা না দেয়।

    দই চিড়া খাওয়ার উপকারিতা

    বাঙ্গালীদের প্রিয় খাবারের মধ্যে একটি হচ্ছে দই ও চিড়া। দইয়ের মধ্যেও রয়েছে পুষ্টি গুণের ভরপুরতা। কিন্তু মিষ্টি দইয়ের থেকে টক দই এর মধ্যে বেশি উপকারিতা রয়েছে।
    আবার চিড়ার মধ্যেও রয়েছে পুষ্টিগুণের ভরপুরতা। এই দুটি পুষ্টি ও গুনাগুন সম্পূর্ণ খাবার একসাথে খেলে উপকারিতা দ্বিগুণ হয়ে যায়। তবে আপনি কি জানেন দই চিড়া খাওয়ার উপকারিতা কোনগুলো। আমি জানি আপনি জানেন না এই জন্যই আপনাদেরকে জানিয়ে দেবো দই চিড়া খাওয়ার উপকারিতা কোনগুলো।
    • দই চিড়া খাওয়ার ফলে কিডনি ভালো থাকে।
    • পরিমাণ মতো নিয়মিত দই চিড়া খাওয়ার ফলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূরীভূত করতে সহযোগিতা করে।
    • খাওয়ার নিয়ম মেনে নিয়মিত খেলে শরীরে পানি শূন্যতার ঘাটতি পূরণে সহযোগিতা করে।
    • নিয়মিত ডায়েটের মধ্যে দই চিড়া খেলে অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করে।
    • দই চিড়া খাওয়ার ফলে শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সহায়তা করে।
    • শোনা যায় দই চিড়া খাওয়ার ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে দারুন ভূমিকা পালন করে।

    রাতে চিড়া খাওয়ার উপকারিতা

    চিড়া খাওয়ার কোন নির্দিষ্ট সময় বাধা নেই। আপনি যেকোনো সময় চিড়া খেতে পারেন। তবে হ্যাঁ রাতে চিড়া খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে। তবে ঘুমানোর দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা আগে খাওয়া উচিত। তাহলে ঘুমের কোন সমস্যা হবে না। আর যদি ঘুমের সমস্যা হয় তাহলে রাতে চিড়া খাওয়া বাদ দিয়ে দিন।
    রাতে চিড়া খাওয়ার মধ্যে যে সকল উপকারিতা লুকিয়ে রয়েছে শরীরের শক্তি যোগায়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, কিডনির সমস্যা দূরীভূত করতে সহযোগিতা করে, পেটের গ্যাস ও পেট ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে আরো অনেক উপকারিতা রয়েছে রাতে চিড়া খাওয়ার মধ্যে। যদি রাতে চিড়া খাওয়ার পরে কোন ধরনের সমস্যা হয়। তাহলে রাতে চিড়া খাওয়া বাদ দিয়ে দিন।

    খালি পেটে চিড়া খাওয়ার উপকারিতা

    আপনার পেটে যদি বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থাকে তাহলে সকালে খালি পেটে চিড়া খাওয়ার মধ্যে উপকারিতা লুকিয়ে রয়েছে। এছাড়াও আরো অনেক ধরনের উপকারিতা পাওয়া যায় সকালে খালি পেটে চিড়া খাওয়ার মাধ্যমে। ভিজিয়ে রাখা চিড়ার মধ্যে দই অথবা কলা মিশিয়ে খেতে পারেন।

    আমরা সকালে ঘুম থেকে উঠে চা-বিস্কুট অথবা অনেক ধরনের খাবার খেয়ে থাকি। কিন্তু এই সকল খাবারের থেকে অনেক উপকার মিলবে সকালে খালি পেটে চিড়া খাওয়ার মাধ্যমে। কারণ চিড়ার মধ্যে ফাইবারের পরিমাণ কম রয়েছে।
    যা আপনার শরীরের জন্য খুবই উপকারী বলে বিবেচনা করা হয়। তাই নিয়মিত সকালে খালি পেটে চিড়া খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এতে করে পেট ঠান্ডা ও শরীরের শক্তি যোগানোর পাশাপাশি আরো অনেক উপকারিতা মিলবে। যে উপকার ও পুষ্টি গুনাগুন গুলো অন্যান্য খাবারে পেতেন না।

    চিড়া খেলে কি মোটা হয়

    আসলেই কি চিড়া খেলে মানুষ মোটা হয়ে যায়। চলুন এ বিষয়ে জেনে নেয়া যাক। চিরা খাওয়ার মধ্যে অনেক উপকারিতা লুকিয়ে রয়েছে। কিন্তু সেটা নিয়ম মেনে খাওয়ার মাধ্যমে ঠিক তেমনি ভাবে চিড়া নিয়ম মেনে খেতে পারেন। তাহলে ওজন বাড়বে না বরং কমতে শুরু করবে।

    চিড়াতে অন্যান্য খাবারের তুলনায় কম পরিমাণে ক্যালরি রয়েছে।যা আস্তে আস্তে মেদ অথবা ভুড়ি কমাতে সাহায্য করে থাকে। কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণে চিড়া খাওয়া যাবেনা। আবার নিয়মিত খেলেও মাঝে কিছু দিনের বিরোধী রাখতে হবে। আর তা না হলে ফলাফল বিপরীত প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে। এই খাবারটিতে আশঁ এর পরিমাণ কম রয়েছে। যার ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতা করে থাকে।
    অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেট ঠান্ডা ও পেট ভরিয়ে রাখতে সহায়তা করে। আবার ডায়েট এর মধ্যেও চিড়া রাখতে পারেন। এতে করে আরো বেশি উপকার পাওয়া যায়। অনেকেই মনে করেন ডায়েটে চিড়া রাখা উচিত নয়। এটি সম্পূর্ণরূপে একটি ভুল ধারণা। একবার ডায়েটের খাবারের তালিকায় চিড়া রেখে দেখতে পারেন। তাই নিয়মিত চিড়া খাওয়ার মাধ্যমে অতিরিক্ত ওজন কমানো সহ আরো অনেক উপকার পেতে পারেন।

    চিড়ার সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর

    ১। চিড়াতে কত ক্যালরি আছে?
    উত্তরঃ ৫০০ গ্রাম চিড়ার মধ্যে ১৭২৬ ক্যালরি আছে।

    ২। চিড়াতে কত গ্রাম আমিষ আছে?
    উত্তরঃ ৫০০ গ্রাম চিড়ার মধ্যে ৩৩ গ্রাম আমিষ আছে।

    ৩। চিড়াতে কত গ্রাম শর্করা আছে?
    উত্তরঃ ২০০ গ্রাম চিড়াতে ১৫৪.৬ গ্রাম শর্করা আছে।

    ৪। ১ কেজি চিড়ার দাম কত?
    উত্তরঃ প্রতি কেজি চিড়ার দাম ১০০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। তবে পরিস্থিতির উপর বিবেচনা করে এর দাম ওঠানামা করতে পারে।

    ৫। চিড়া কোথায় কিনতে পাওয়া যায়?
    উত্তরঃ চিড়া কিনার জন্য আপনাকে বাজারে যেতে হবে। বাজারের বিভিন্ন দোকানে চিড়া কিনতে পাওয়া যায়। তবে চিড়ার মধ্যে অনেকগুলো ভাগ রয়েছে। এরা মান ভেদে আলাদা হয়ে থাকে। অবশ্যই এই সম্পর্কে সঠিক তথ্য নিয়ে চিড়া কিনতে যাবেন।

    শেষ কথা

    প্রিয় পাঠক ইতিমধ্যে চিড়া খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা পাশাপাশি এর খাওয়ার নিয়ম গুলো সম্পর্কে জেনেছেন। আপনি যদি চিড়া খাওয়ার উপকারসহ আরো যে সকল তথ্য রয়েছে সেগুলো জেনে যদি উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে আপনার পরিবার ও বন্ধুদের সাথে তথ্যটি শেয়ার করুন। তাদেরকেও এই তথ্যগুলো পড়ার সুযোগ করে দিন। যাতে করে তারাও চিড়া খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারে। পুরো তথ্যটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

    এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

    পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
    এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

    এসএইচ নিউজস্টোরের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

    comment url