তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ১০ টি ব্যবহার জেনে নিন
আপনি নিশ্চয়ই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ১০ টি ব্যবহার ও তার ভালো দিকগুলো সম্পর্কে জানার জন্য খোঁজাখুঁজি করছেন। কিছুক্ষণের জন্য খোঁজাখুঁজি বন্ধ করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কিছু ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিতে পারেন। পাশাপাশি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ভালো দিকগুলো জেনে নিতে পারবেন। আবার প্রযুক্তির কিছু খারাপ দিকও জানতে পারবেন।
আমরা তো সকলেই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করি কিন্তু তার ভালো দিক ও খারাপ দিক সম্পর্কে আমরা অবগত না। যার ফলে দেখা যায় প্রযুক্তির অবাধ ব্যবহারের কারণে মানুষ প্রযুক্তির খারাপ দিকগুলোর প্রতি আসক্ত হয়ে পরে।
পোস্ট সূচীপত্রঃ
ভূমিকা
পৃথিবীতে আমরা সকলেই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ওপর নির্ভর। আমরা একটি দিনও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ছাড়া চলতে পারি না। যেখানেই বা যেই কাজেই যায় না কেন তথ্য ও প্রযুক্তির ছোঁয়া থাকবেই। আর এই জন্যই বলা হয়, আমরা চারিদিক থেকে তথ্য ও প্রযুক্তি দিয়ে ঘেরাও। আর এরই ওপর ভিত্তি করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ১০ টি ব্যবহার সম্পর্কে জেনে নিতে পারেন।
শুধু কি তাই তথ্য ও প্রযুক্তির কিছু ভালো দিক ও খারাপ দিকও জানতে পারবেন। যেগুলো আমাদের দৈনন্দিন জীবনে চলার পথের জন্য প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আপনি জেনে অবাকও হতে পারেন যে আপনি নিজেও হয়তো তথ্য ও প্রযুক্তি ছাড়া একটি দিনও চলতে পারবেন না। তাইতো সময়ের সাথে নিজেকে বদলাতে হলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ১০ টি ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কাকে বলে
কম্পিউটারের সাহায্যে যেকোনো তথ্য সংগ্রহ করে সংরক্ষণের মাধ্যমে একত্রিত ও প্রক্রিয়াকরণ করাকে তথ্য ও প্রযুক্তি বলে। আর এই সংরক্ষিত তথ্যগুলোকে কোন কম্পিউটার অথবা ফোনের মাধ্যমে যথা স্থানে পাঠানোর প্রক্রিয়াকে যোগাযোগ ব্যবস্থা বলে। আর মূলত কোন তথ্য সংগ্রহের পর সেগুলোকে সংরক্ষণ করে প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে তথ্যগুলোকে যথাস্থানে পৌঁছে দেওয়াকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বলে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ১০ টি ব্যবহার
১। চিকিৎসা খাতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির দারুন ব্যবহারঃ চিকিৎসা হচ্ছে মানব জীবনের একটি অপরিহার্য উপাদান। যা মানুষের চলার পথে দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কারণ মানুষ অসুস্থ হওয়ার পরে তার সুস্থতার অধিকার রয়েছে। তারই উপর ভিত্তি করে মানুষের চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে। যুগে যুগে মানুষ চিকিৎসা শাস্ত্রকে উন্নত থেকে উন্নত করে চলেছে।
প্রাচীন যুগে চিকিৎসার জন্য মানুষকে বিভিন্ন ধরনের আয়ুর্বেদিক এর সাহায্য নিতে হতো। আরো কিছু পদ্ধতি রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে চিকিৎসকরা সেবা প্রদান করত। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে মানুষ তার জীবন যাত্রার মানকে উন্নত করেছে। তাইতো বর্তমান সময়ে মানুষ চিকিৎসাকে তার হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছে। শুনে হয়তো অবাক লাগছে চিকিৎসাকে আবার হাতের মুঠোয় কিভাবে আনা যায়।
আরো পড়ূনঃ ডিজিটাল বাংলাদেশ সম্পর্কে ১০ টি বাক্য
চলেন এই বিষয়ে জেনে নেই। একটা সময় ছিল চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হতো। বর্তমানেও চিকিৎসার ক্ষেত্রে মানুষকে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হয়। কিন্তু সেটা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে। ভাবুন তো কেমন হয় যদি আপনি ঘরে বসেই চিকিৎসকের চিকিৎসা বিষয়ক পরামর্শ নিতে পারেন।
হ্যাঁ বর্তমান সময়ে আমরা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সাহায্যে অনেক ধরনের চিকিৎসা রয়েছে যেগুলো ঘরে বসেই নেওয়া যায়। এখন কিভাবে ঘরে বসে চিকিৎসা নেবেন। তার জন্য রয়েছে ভিডিও কনফারেন্স। আপনি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পৃথিবীর যেকোন প্রান্তে বসে থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে পারবেন এমনকি চিকিৎসা নিতে পারবেন।
আবার আপনার কোনো ঔষধের প্রয়োজন হইলো এমনকি তৎক্ষণাৎ সেই ওষুধটির প্রয়োজন। চিন্তার কোন কারণ নেই আপনি কিছুক্ষনের মধ্যেই ঔষধটি আপনার বাড়িতে পেয়ে যাবেন। শুধুমাত্র তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে বলে দিবেন এই ওষুধটির প্রয়োজন। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই আপনি পেয়ে যাবেন আপনার কাঙ্ক্ষিত ঔষধ।
২। বিনোদন জগতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহারঃ আমাদের পূর্বপুরুষেরা বিনোদনের জন্য কত কিছুই না করত। তারা বিভিন্ন ধরনের বিনোদনের আয়োজন করত। যেমন যাত্রাপালা, মঞ্চে নাটক, বাইস্কোপ ও বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করত। যে আয়োজনের মাধ্যমেই তারা তাদের বিনোদনের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করত।
শুধু পূর্বপুরুষেরাই এর অংশীদারিত্ব ছিল না বরং আমাদের মেয়েরাও বিনোদন উপভোগ করতো। কিন্তু যুগ বদলেছে মানুষের চাহিদা বদলিয়েছে। সব মিলিয়ে মানুষের আকাঙ্কার বিচারে তাদের বিনোদনের মাধ্যমগুলো বদলে গেছে।
তাইতো আধুনিক যুগে বসে থেকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে আমরা বিনোদনের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করি। যেমন ইউটিউব, ফেসবুক, টিক টক, শর্ট ভিডিও, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিভিশন আরো অনেক বিনোদনের মাধ্যম রয়েছে। যেগুলোর মাধ্যমে আমরা প্রতিনিয়ত বিনোদন গ্রহণ করে চলেছি।
আর বর্তমান সময়ে ঘরে বসেই আমরা এই সকল বিনোদন গ্রহণ করতে পারি। একটি মোবাইল ফোন অথবা কম্পিউটারের মাধ্যমে এই সকল বিনোদন গ্রহণ করা যায়। তাই কষ্ট করে আর বাহিরে যাওয়া লাগে না বিনোদনের আকাঙ্ক্ষা পূরণের করার জন্য।
আরো পড়ূনঃ মোবাইল ফোনের উপকারিতা বিতর্ক প্রতিযোগিতা
৩। যোগাযোগ রক্ষার জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহারঃ এক সময় মানুষের যোগাযোগ রক্ষা করার ক্ষেত্রে চিঠি ব্যবহার করা হতো। সেই চিঠি এক গ্রাম বা শহর থেকে অন্য গ্রামে অথবা শহরে পৌঁছাতে অনেক সময় লাগতো। কিন্তু বর্তমান সময়ে আপনি ঘরে বসে থেকে কাঙ্ক্ষিত স্থানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে ইমেইল পাঠাতে পারবেন।
তাও আবার মুহূর্তের মধ্যে সেই স্থানে পৌঁছে যাবে। সাথে সাথে সেই ব্যক্তিটি পড়তেও পারবে। শুধু তাই আপনি কষ্ট করে ইমেইল না লিখে ফোনে সরাসরি কথা বলতে পারবেন। আবার যদি মনে হয় যার সাথে কথা বলছেন তার চেহারাটা দেখা উচিত। তাহলে ভিডিও কলের মাধ্যমে তার সাথে সরাসরি কথা বলতে পারবেন।
এই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আমাদের জীবন যাত্রার মানকে কতই না সহজ করে দিয়েছে। ঘরে বসে থেকে পৃথিবীর যেকোন স্থানে থাকা ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা যায়। মুহূর্তের মধ্যে যেকোনো বিষয় সম্পর্কে জানা যায়। ভিডিও এবং অডিও কলে কথা বলার জন্য রয়েছে ইমু, হোয়াটসঅ্যাপ,মেসেঞ্জার ও জুম অ্যাপ এর মত আরো সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যম রয়েছে।
৪। শিক্ষার জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহারঃ প্রাচীন যুগে মানুষ জ্ঞান অর্জনের জন্য কত কিছুই না করেছে। তারা এক শহর থেকে আরেক শহরে গিয়েছে লাইব্রেরী থেকে বই আনতে। অনেক সময় নিজের প্রয়োজনের বইটা পাওয়া যায় না সেই লাইব্রেরীতে। আবার বিভিন্ন ধরনের লাইব্রেরীতে খুঁজে খুঁজে সেই বইটা বের করতে হয়।
এর মাধ্যমে সেই সময় মানুষ জ্ঞান অর্জনের জন্য কতই না কষ্ট করেছে। শুধু কষ্ট তাদের অনেক সময়ও নষ্ট হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বর্তমান সময়ে আপনি ঘরে বসে থেকে সবকিছু পাবেন কতই না সহজ হয়ে গিয়েছে। এই আধুনিক যুগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলেই এটা সম্ভব হয়েছে।
আপনি ঘরে বসে থেকে পৃথিবীর যেকোনো স্থানের লাইব্রেরী থেকে বই নিয়ে পড়তে পারবেন। আপনার চাহিদা অনুযায়ী সেই বইটি পাওয়ার জন্য তেমন খোঁজাখুঁজি করতে হবে না। ঘরে বসে থেকে অনলাইনে এর মাধ্যমে পিডিএফ বুক ডাউনলোড করে পড়তে পারবেন। একটা সময় জ্ঞান অর্জনের জন্য এক জায়গায় থেকে আরেক জায়গায় যেতে হতো।
কিন্তু বর্তমানে আপনি ঘরে বসে থেকেই আপনার পছন্দের শিক্ষকের কাছে থেকে জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন। শুধু তাই ঘরে বসে থেকে আপনি পৃথিবীর যেকোনো স্থানের ক্লাসগুলোতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। শুধুমাত্র প্রয়োজন একটি মোবাইল ফোন অথবা কম্পিউটার আর দরকার ইন্টারনেট সংযোগ।
৫। পরিবহনের ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহারঃ আগে ট্রেন, বাস অথবা প্লেনের টিকিট কাটার জন্য কাউন্টারে যেতে হতো। এতে করে সময় ও পরিবহন খরচ বেড়ে যেত। কিন্তু বর্তমান সময়ের কথা ভাবেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উপর নির্ভর করে অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে বসে থেকে যেকোনো পরিবহনের টিকিট কাটতে পারবেন।
তাহলে আপনার সময় ও পরিবহনের খরচ কমে যাচ্ছে। এমনকি কাছাকাছি কোন স্থানে যাওয়ার জন্য অনলাইনের মাধ্যমে পরিবহন রিজার্ভ করতে পারবেন। এর জন্য রয়েছে উবার ও পাঠাও আপনি এগুলো ব্যবহার করে সহজেই পরিবহন করতে পারবেন।
৬। খেলাধুলার ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহারঃ একটা সময় ছিল মানুষ খেলাধুলার মাঠকে বেশি প্রাধান্য দিতো। কিন্তু বর্তমান সময়ে মানুষ খেলাধুলার জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে। কারণ সকলেই এখন অনলাইন গেম এর উপরে বেশি মনোযোগী। সেটি হোক ক্রিকেট অথবা ফুটবল যেকোনো ধরনের খেলা।
সকলেই এখন ঘরে বসে থেকে যেকোনো ধরনের গেম খেলে থাকে। যার ফলে তাদের কষ্ট করে মাঠে যেতে হয় না। এমনকি একজন আরেকজনের সাথে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে অনলাইন গেম খেলতে পারে। সবই আজ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কল্যাণে ঘটেছে।
৭। কৃষি ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহারঃ একটা সময় ছিল মানুষ গরুর লাঙ্গল দিয়ে মাঠে বিভিন্ন ধরনের চাষাবাদ করতো। কিন্তু বর্তমান সময়ে প্রযুক্তির কল্যাণে গরুর লাঙ্গলের বদলে ভিন্ন ধরনের যন্ত্রের সাহায্যে চাষাবাদ করে। শুধু তাই নয় সার থেকে শুরু করে বীজ পর্যন্ত সবই আধুনিক ভাবে তৈরি হচ্ছে।
যার ফলাফল হিসেবে দেখা যাচ্ছে জমিতে আগের থেকে অনেক বেশি পরিমাণে ফসল পাওয়া যাচ্ছে। কৃষকরা আজ ঘরে বসে থেকে বিভিন্ন ধরনের কৃষি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ গ্রহণ করতে পারছে। তারা নতুন নতুন উদ্ভাবন ও তথ্য সম্পর্কে জ্ঞান আহরণ করতে পারছে। আগে ধান কাটা ও নেড়ানোর জন্য মানুষ শারীরিক পরিশ্রম করত।
কিন্তু বর্তমানে আধুনিকতার ছোঁয়ায় ও প্রযুক্তির কল্যাণে বিভিন্ন ধরনের আধুনিক যন্ত্রপাতির আবিষ্কার হয়েছে। যার দ্বারাই কৃষকরা সহজেই ধান কাটা থেকে শুরু করে নেড়ানো পর্যন্ত সবই যন্ত্রের সাহায্যে করতে পারে। যদিও এটি একটু ব্যয়বহুল কিন্তু সময় সাশ্রয় এবং শারীরিক পরিশ্রম করতে হয় না।
৮। ব্যবসায় ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহারঃ প্রাচীন ও মধ্যযুগে মানুষের ব্যবসায়ের ধরন ও প্রকৃতি ভিন্ন ছিল। আর বর্তমানেও ব্যবসায়ের আওতা ও পরিধি ভিন্ন। এটি বলার কারণ হচ্ছে আগে যে কোন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান শুরু করলে মানুষকে জানানো সহজ ছিল না। কিন্তু বর্তমানে আধুনিক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির যুগে মানুষকে জানানোর ব্যাপারটা খুবই সহজ।
এর কারণ হচ্ছে ফেসবুক ও ইউটিউব সহ বিভিন্ন ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া রয়েছে যেগুলো ব্যবসায় ক্ষেত্রে দারুন ভূমিকা পালন করে। বৈদেশিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও প্রযুক্তির নির্ভরতা রয়েছে। তাইতো অন্য সকল ক্ষেত্রের মত ব্যবসায় ক্ষেত্রেও প্রযুক্তির ভূমিকা অতুলনীয়।
৯। গবেষণা ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহারঃ আগে যেকোনো গবেষণা করতে হলে তার তথ্য ও উপাত্ত সংগ্রহ করার জন্য অনেক পরিশ্রম করতে হতো। এমনকি গবেষণার যে তথ্যগুলো রয়েছে সেগুলো সংরক্ষণেও ঝুঁকি থাকতো।
আরো পড়ূনঃ প্রতিদিন ৫০০ টাকা ইনকাম এর apps
কিন্তু বর্তমানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির যুগে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ থেকে শুরু করে সংরক্ষণ পর্যন্ত সবকিছুই ঝুঁকিমুক্ত। মহাকাশ অভিযানে তথ্য ও প্রযুক্তির ভূমিকা অতুলনীয়। তাই তো যেকোনো গবেষণা ক্ষেত্রে তথ্য ও প্রযুক্তি ছাড়া অসম্পূর্ণ থেকে যায় বললেই চলে।
১০। তথ্য সংরক্ষণের জন্য প্রযুক্তির ব্যবহারঃ প্রাচীন ও মধ্যযুগের তথ্য সংরক্ষণের জন্য মানুষ বিভিন্ন ধরনের উপায় খুঁজে বের করত। যেমন মাটির নিচে অথবা বাক্স এই সকল স্থানে তথ্য সংরক্ষণ করা হতো। সেই সময় মানুষ তার তথ্যগুলো নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুক্ত। কিন্তু বর্তমানে আধুনিক যুগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উপর নির্ভর করে। মানুষ তার তথ্যগুলো সঠিক ভাবে সংরক্ষণ করতে সফল হচ্ছে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ভালো দিক
মানুষ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে তার জীবন যাত্রার মানকে অনেক সহজ করে তুলেছে। চলার পথে মানুষ প্রতিনিয়ত তথ্য ও প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে চলেছে। এই কারণেই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কিছু ভালো দিক জেনে নিন।
- মানুষের সাথে মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সহজ করে তুলেছে।
- চিকিৎসার প্রত্যেকটি খাতকে আগের তুলনায় অনেক উন্নত করে তুলেছে।
- মানুষকে যেকোনো ধরনের তথ্য ও উপাত্ত গুলো সংরক্ষণে ভূমিকা পালন করছে।
- শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য ও প্রযুক্তি দারুণ ভূমিকা পালন করে চলেছে।
- মানুষের জীবনযাত্রার মানকে আগে তুলনায় অনেক উন্নত করেছে।
- কৃষকরা কৃষি সম্পর্কে জ্ঞান আহরণের জন্য প্রযুক্তির সাহায্য নিচ্ছে।
- গবেষণা ও ব্যবসায় ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত সহযোগিতা করে চলেছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি।
- ঘরে বসে থেকেই যেকোনো ধরনের বিনোদন ও গ্রহণ করা যাচ্ছে।
- বিশ্বের যেকোনো লাইব্রেরী থেকে বই সংগ্রহ করে জ্ঞান আহরণ করা যাচ্ছে।
- শিক্ষার্থীদের আর কষ্ট করে বিদ্যালয়ে গিয়ে ফলাফল দেখতে হচ্ছে না। বাসায় বসে থেকেই তারা তাদের কাঙ্খিত ফলাফল দেখতে পাচ্ছে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অপকারিতা
যেহেতু তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ভালো কিছু দিক রয়েছে। আর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অপকারিতা বা খারাপ দিক থাকবে না তা কখনো হয় না। এর খারাপ দিকগুলো প্রতিনিয়ত মানুষের মাঝে বেড়েই চলেছে। আর এর ক্ষতিকর দিকগুলো খুবই ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে।
তাই তো মানুষের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করার আগে এর ভালো দিক ও খারাপ দিক সম্পর্কে জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। কারণ প্রযুক্তির খারাপ দিকগুলোর উপর একবার আসক্ত হয়ে পড়লে তারপরে বের হয়ে আসা প্রায় অসম্ভব।
তাই তো আমাদের সকলের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ভালো দিকগুলো গ্রহণ করতে হবে। আর এর যে সকল অপকারিতা বা খারাপ দিক রয়েছে সেগুলো বর্জন করতে হবে। তাহলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির যে সকল অপকারিতা রয়েছে সে সম্পর্কে জেনে নিন।
- সবচাইতে বেশি যুবকরা এর উপরে আসক্ত।
- মানুষ তার জীবনের অধিকাংশ সময় এই প্রযুক্তির পেছনে ব্যয় করছে।
- অতিরিক্ত প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল হওয়ার কারণে মানসিক ভাবে নির্ভরশীলতা হারিয়ে ফেলছে।
- মানুষ তার চিন্তাশীল ও সৃজনশীলতার শক্তি অবক্ষয় ঘটাচ্ছে।
- তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অপব্যবহার হওয়ার ফলে মানুষের বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হারিয়ে যাচ্ছে।
- মানুষের গোপনীয়তার অবক্ষয় ঘটছে।
- অতিরিক্ত প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে মানুষ দিন দিন অলসে পরিণত হচ্ছে।
- অতিরিক্ত প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে মানুষ ডিপ্রেশন ও মানসিক সমস্যায় ভুগছে।
- শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার প্রতি অমনোযোগী হয়ে যাচ্ছে। তারা নতুনভাবে কোন কিছু চিন্তা করতে পারছে না।
- যত দিন যাচ্ছে তত বেশি সাইবার ক্রাইম এর মত অপরাধগুলো ঘটছে।
উপসংহার
পরিশেষে বলা যায় যে আমরা সকলেই প্রযুক্তির উপর নির্ভর কিন্তু সম্পূর্ণভাবে নির্ভর হওয়া যাবেনা। নিজেকে সময় দিতে হবে জ্ঞান আহরণের জন্য তা না হলে মস্তিষ্কের অবক্ষয় হতে পারে। প্রযুক্তির ভালো দিক যেমন রয়েছে ঠিক তেমনি খারাপ দিক রয়েছে। আমরা সকলেই ভালো দিকটি গ্রহণ করব আর খারাপ দিকটি বর্জন করব। যাতে করে আমরা সুস্থ ও স্বাভাবিক ভাবে জীবন যাপন করতে পারি। পুরো তথ্যটি পড়লে আপনারা অবশ্যই তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
শেষ কথাঃ প্রিয় পাঠক ইতিমধ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ১০ টি ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছেন। এই তথ্যটি বিস্তারিত পড়ে যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে আপনার কাছের মানুষদেরকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পর্কে অবগত করুন। আর এর ব্যবহার সম্পর্কে তাদেরকে জানান। যাতে করে তারাও এই বিষয়গুলো নিয়ে ভাবতে পারে। পুরো তথ্যটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
এসএইচ নিউজস্টোরের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url