ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কি - ফ্রিল্যান্সিং কোথায় শিখবো

যদি জানতে চান ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কি এবং ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিলে কেমন হবে। তাহলে বলবো এই পুরো আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনি ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কি সেই সম্পর্কে সহ ফ্রিল্যান্সিং এর ক্যারিয়ার কেমন পাশাপাশি আরো অন্যান্য বিষয় জানতে পারবেন। এই বিষয়গুলো বিস্তারিত করার মাধ্যমে খুব সহজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কি - ফ্রিল্যান্সিং কোথায় শিখবো
পোস্টসূচিপত্রঃবর্তমান সময়ে কিছু যুবক ও কিশোর সহ চাকরিজীবী তারা ফ্রিল্যান্সিংকে তাদের ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিতে চাই। কিন্তু সঠিক তথ্যের অভাবে তারা সঠিক সিদ্ধান্তটি নিতে পারেনা। আশা করি পুরো তথ্যটি বিস্তারিত করার মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং এর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করবে।

    ফ্রিল্যান্সিং কি

    ফ্রিল্যান্সিং হচ্ছে যে কাজে স্বাধীনতা রয়েছে। যে কাজের মধ্যে নিজেই নিজের বস না কারো হস্তক্ষেপ বা হুকুমের আধিপত্য আছে। এই জন্য ফ্রিল্যান্সিংকে মুক্ত পেশাও বলা হয়। অনেকে আছে যারা চাকরি করতে করতে নিজের জীবনটা অতিবাহিত করে দিয়েছে। তবুও জীবনের শান্তির খোঁজ পাই নি।

    সেই বাধা ধরা জীবন যেখানে নির্ধারিত সময় অফিসে ঢুকতে হয় এবং নির্ধারিত সময় বের হতে হয়। ছুটি কাটানোর সময় দরখাস্ত বা আবেদন করতে হয়। তবুও অনেক সময় ছুটি মঞ্জুর হয় আবার হয় না। কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে পুরো ভিন্ন রূপ ধারণ করে। আপনার যখন ইচ্ছা তখন কাজ করবেন আবার যখন ইচ্ছা তখন কাজ করবেন না।

    মন চাইলে এক থেকে দুই দিন ছুটি কাটাবেন। আবার মন না চাইলে ছুটি কাটাবেন না। ফ্রিল্যান্সিং এর নির্ধারিত কোন ছুটি দিবস নেই। এটি আপনার ব্যক্তি স্বাধীনতা। কিন্তু চাকরিতে নির্ধারিত ছুটি দিবস রয়েছে। এখানে চাকরিজীবীদের কোনো ব্যক্তি স্বাধীনতা নেই।
    তাই তো অনেকে ফ্রিল্যান্সিংকে তাদের পেশা হিসেবে বেছে নিতে চাই। তারা স্বাধীনভাবে বেঁচে থেকে উপার্জন করতে চাই। কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কেমন বা ক্যারিয়ার কেমন তা কি জানেন। অবশ্যই না জানার কথা, কারণ জেনে থাকলে এখানে আসতেন না। তাহলে ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে পরে জেনে নিন।

    ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কি

    সাধারণত ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আমরা কেউই অবগত নই। আমাদের ভবিষ্যৎ আমাদেরকে কোন দিকে নিয়ে যাবে তা হয়তো আমাদের অজানা। তবুও ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে সঠিক ভাবে কাজ করার মাধ্যমে ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল করতে পারেন। ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য ইন্টারনেট কানেকশন এর সাথে কম্পিউটার বা ল্যাপটপের প্রয়োজন হয়।

    এই ডিভাইস গুলো ব্যবহারের মাধ্যমে অনেকে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে এসে নিজের ভবিষ্যৎ গড়ে নিয়েছে। যদিও ফ্রিল্যান্সিং কাজে প্রতিযোগিতা অনেক বেশি তবুও এখানে দক্ষতার পরিচয় দেওয়ার মাধ্যমে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারবেন। ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে কাজ করার জন্য মার্কেটপ্লেস এ একাউন্ট খুলতে হবে।
    সেখানে অ্যাকাউন্ট খোলার মাধ্যমে নিজের কাজের প্রতি দক্ষতা সহ যে সকল পরিচয় দেওয়ার প্রয়োজন তা সম্পূর্ণ করতে হবে। তারপরে মার্কেটপ্লেস এ গিগ ও পোর্টফোলিও তৈরির মাধ্যমে কাজ শুরু করতে হবে। আপনার গিগ ও পোর্টফলিও দেখে যদি কোনো ক্লায়েন্টের পছন্দ হয়। তাহলে সেই ক্লাইন্ট আপনাকে কাজ দিবে আপনার ডিমান্ড এর উপর ভিত্তি করে।

    যেমন ফাইবারে কাজ পাওয়ার উপায় হচ্ছে সেখানে নির্দিষ্ট কাজের উপরে দক্ষতা অর্জন করে। সেই কাজের উপরে গিগ তৈরি করতে হবে। গিগ এ নির্দিষ্ট কাজের ব্যাপারে তথ্য থাকবে। তারপরে ঐ গিগ ফাইবার মার্কেটপ্লেস এ পাবলিশ করতে হবে। সর্বনিম্ন কাজের মূল্য পাঁচ ডলার দেওয়ার মাধ্যমে গিগ তৈরি করতে পারবেন।

    আপনার কাজের ব্যাপারে সবকিছু পড়ার মাধ্যমে যেই ক্লায়েন্টের ভালো লাগবে ঐ ক্লাইন্ট আপনার সাথে কথা বলার মাধ্যমে কাজ দিবে। আরো অনেক ধরনের মার্কেটপ্লেস রয়েছে সেগুলোর মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং কাজ পেয়ে থাকবেন। এভাবে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে কাজ করার মাধ্যমে অনেকেই মাসে লাখ লাখ টাকা ইনকাম করছে।

    শুধু তাদের অনলাইনের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টর গুলোতে ঘাটাঘাটি করে ক্লাইন্ট খুজে বের করার মাধ্যমে কাজ করতে হচ্ছে। অবশ্যই কাজগুলো করার জন্য দক্ষতা ও পারদর্শিতা থাকতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা হচ্ছে আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং এর যেকোনো কাজ অর্ধেক শেখার পরে সেই কাজ করার চেষ্টা করেন।

    তাহলে কাজটি যদি খারাপ হয়ে যায় আর সেই পেরিপেক্ষিতে যদি ৫ রেটিং এর জায়গায় এক বা দুই রেটিং পান। তাহলে আপনার কাজের মান খুবই খারাপ। এভাবে দু একটি কাজ করার পরে যদি এই রকম রেটিং পান। তাহলে পরবর্তী সময় মার্কেটপ্লেস থেকে আর কাজ পাবেন না।

    সেক্ষেত্রে বলা যায় ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে আপনার ভবিষ্যৎ বেশিদূর আগাবে না। এই জন্য প্রথমে কাজ শেখার উপরে সময় দিন ও ভালোভাবে শেখার চেষ্টা করুন। এমনভাবে শিখুন যাতে কাজ পাওয়ার সাথে সাথে ঐ কাজটি কম সময়ের মধ্যে ভালোভাবে সম্পন্ন করে দেওয়া যায়।

    ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার কেমন

    আমরা হয়তো ইতিমধ্যে জানলাম ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কি এটা এবং ফ্রিল্যান্সিং এর ক্যারিয়ার কেমন দুটো বিষয় প্রায় একই। তবুও আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং এর ক্যারিয়ার গঠন করতে চান। তাহলে সেই কাজের উপরে বেশি বেশি জানার চেষ্টা করুন। কিভাবে এই কাজ করলে বা কিভাবে পরবর্তী ধাপ ফেললে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া যাবে।
    যেই কাজটি শিখছেন সেই কাজটি বেশি বেশি প্র্যাকটিস করুন। আর সেই কাজের উপরে দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি আরেক জনের থেকে ভালো করার চেষ্টা করুন। নিজের ভেতরে একটা জেদ তৈরি করুন যে এই কাজটি আমি এমন ভাবে করবো যাতে করে যে আমাকে কাজ দিবে সে যেন পেয়ে খুশি হয়ে যায়। প্রথমের দিকে কাজ পেতে কষ্ট হবে।

    হয়তো কয়েক মাস কাজ পাবেন না। কিন্তু হতাশ হওয়া যাবে না। হতাশ না হয়ে নিজের কাজের ব্যাপারে সচেতন হন এবং আরও বেশি বেশি নিজের কাজকে স্ট্রং করুন। একটা সময় যখন কাজ পেতে শুরু করবেন তখন কাজ পেতেই থাকবেন। যদি সেই কাজটি সুন্দর ও গোছালোভাবে করতে পারেন। দেখুন সফলতা ও ক্যারিয়ার একদিনে গঠন হয় না।

    যেকোনো বিষয়ের উপরে ক্যারিয়ার গঠন করতে হলে সেখানে সময় দিতে হয়। নিশ্চয়ই সফল ব্যক্তিরদের পেছনে তাদের পরিশ্রম ও ধৈর্য শক্তি দুটোই রয়েছে। তাই ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে ক্যারিয়ার গঠন করতে হলে পরিশ্রম ও ধৈর্য শক্তি দুটোই থাকতে হবে।

    ফ্রিল্যান্সিং এর বর্তমান অবস্থা

    একটা সময় ছিল ফ্রিল্যান্সিং এ কাজ করিয়ে নেওয়ার মতো মার্কেটপ্লেসগুলো ফ্রিল্যান্সার খুঁজে পেত না। কিন্তু ফ্রিল্যান্সিংয়ের বর্তমান অবস্থা খুবই ভালো। কারণ ফ্রিল্যান্সিং এ কাজের পরিমাণও বেড়েছে আবার কাজের উপরে প্রতিযোগিতা বেড়েছে। বর্তমানে মার্কেটপ্লেসগুলোতে কাজের যেমন অভাব নেই ঠিক তেমনি ফ্রিল্যান্সারদের অভাব নেই।

    একটি কাজের পেছনে বিট করার জন্য অনেকেই প্রতিযোগিতা করে। দেখা যায় যে একটি কাজের উপরে ১০০ এর বেশি ফ্রিল্যান্সার বিট করে বসে আছে। এখান থেকে একজন কাজ পাবে। যার বিট উপস্থাপন করার ধরন ও কাজের প্রতি অভিজ্ঞতা পাশাপাশি কাজের মূল্য নির্ধারণের ওপর নির্ভর করে কাজ পাবে।
    তাই ফ্রিল্যান্সিং এর বর্তমান অবস্থা প্রতিযোগিতায় ভরপুর। এখানে টিকে থাকার জন্য লড়াই করতে হবে। আর লড়াই করার জন্য কাজের উপরে দক্ষতা ও শ্রম ঢালতে হবে। তাহলেই ফ্রিল্যান্সিং এ ক্যারিয়ার গঠন করতে পারবেন।

    ফ্রিল্যান্সিং কেন করা উচিত

    এটা একটা মূল্যবান প্রশ্ন ফ্রিল্যান্সিং কেন করা উচিত অথবা ফ্রিল্যান্সিং আমরা কেন করবো। পৃথিবীর প্রায় বেশিরভাগ কাজ করার পেছনের উদ্দেশ্য হচ্ছে অর্থ উপার্জন করা। ঠিক তেমনি ফ্রিল্যান্সিং করার পেছনে সবচেয়ে মূল্যবান উদ্দেশ্য হচ্ছে টাকা বা অর্থ উপার্জন করা। ফ্রিল্যান্সিং এই জন্য করা উচিত এটা কে আপনি চাকরির বিকল্প হিসেবে ভাবতে পারেন।

    একজন চাকরিজীবী নির্দিষ্ট সময়ে অফিসে ঢুকে আবার নির্দিষ্ট সময় অফিস থেকে বের হয়। সেই বাধা ধরা নিয়ম অনুযায়ী তার জীবন পরিচালনা করতে হয়। এই কথা বিচার বিবেচনা করলে দেখবেন ফ্রিল্যান্সিং অনেক স্বচ্ছন্দ্যময় পেশা।

    এই পেশাতে কেউ আপনাকে বলবে না এই কাজটি এখনই করতে হবে। এমনকি এই কাজ না করা পর্যন্ত আপনার ছুটি নেই। কারো ঝাড়ি বা ধমক শুনতে হবে না। নিজের নির্দিষ্ট সময়মতো কাজে বসতে পারবেন বা করতে পারবেন। এক কথায় এখানে কাজের যেমন স্বাধীনতা রয়েছে ঠিক তেমনি এখানে অনেক বেশি প্রতিযোগীতা রয়েছে।

    এমন ব্যক্তি খুঁজে পাবেন যারা ফ্রিল্যান্সিং করার মাধ্যমে প্রতি মাসে ঘরে বসে থেকে লাখ লাখ টাকা উপার্জন করছে। তাও আবার নিজের স্বাধীন মত কাজ করে। এই জন্যই আপনার ফ্রিল্যান্সিং করা উচিত। যদি আপনি বেশি অর্থ উপার্জনের পাশাপাশি স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকতে চান।

    ফ্রিল্যান্সিং কোথায় শিখবো

    ফ্রিল্যান্সিং শেখার তিনটি উপায়ে রয়েছে। দুইটি উপায় হচ্ছে মূল্য পরিশোধ করার মাধ্যমে। আর একটি উপায় হচ্ছে বিনামূল্যে। প্রথমে দুইটি উপয়ের কথা বলি যেখানে মূল্য পরিশোধ করার মাধ্যমে কাঙ্খিত ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারবেন।

    বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজের চাহিদা ও প্রতিযোগিতা যেমন বেড়েছে ঠিক তেমনি ফ্রিল্যান্সিং এর কোর্স করানোর জন্য অনেক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। ফ্রিল্যান্সিং কোর্স দুই ভাবে করানো হয় প্রথম অনলাইন দ্বিতীয় অফলাইন। অনলাইন হচ্ছে ইন্টারনেট এর মাধ্যমে কম্পিউটার, ল্যাপটপ বা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে।

    আর অফলাইন হচ্ছে আপনার বাসার আশেপাশে ফ্রিল্যান্সিং শেখানো যে প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেগুলোতে শারীরিকভাবে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার মাধ্যমে শেখা। তবে এই দুই ধরনের কোর্স করার আগে বিচার-বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন। আপনি যে টাকাগুলো দিয়ে কোর্স করছেন সেটা বিফলে যাচ্ছে না তো সেটা ভাবতে হবে।

    কারণ বিভিন্ন ধরনের প্রতারক প্রতিষ্ঠান রয়েছে যাদের ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে তেমন অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও প্রতিষ্ঠান খুলে বসেছে। সেই প্রতিষ্ঠানের সাহায্যে বিভিন্ন শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ প্রদান করছে। তাহলে ওই শিক্ষার্থী গুলো কিছু শিখতে পারবে। নিশ্চয়ই কিছুই শিখতে পারবে না। তাই টাকার বিনিময়ে কোর্স করার আগে যে সকল বিষয় বিচার-বিশ্লেষণ করবেন।
    • প্রথমত প্রতিষ্ঠানটির পরিচিতি কেমন।
    • তাদের ফেসবুক পেজ ফলোয়ার ও ইউটিউব চ্যানেল এ সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা কেমন।
    • তাদের যে প্রতিষ্ঠাতা রয়েছে এবং যে ট্রেনিং করাবে তার ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে অভিজ্ঞতা কেমন।
    • যে ট্রেনিং করাচ্ছে সে এই পর্যন্ত ফ্রিল্যান্সিং করে কত টাকা উপার্জন করেছে।
    • তার ফ্রিল্যান্সিং করার পেছনে কত বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে।
    • ফ্রিল্যান্সিং কোর্স কতটা সময় করায় এবং ভালোভাবে শেখায় কিনা। নাকি প্রথমদিকে ভালো হবে শেখালেও শেষের দিকে তেমন একটা গুরুত্ব দেয় না।
    • কোর্সের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে শিক্ষার্থীদের কেমন সাপোর্ট দেয়।
    • তাদের কাছে যে সকল শিক্ষার্থী ট্রেনিং নিয়েছে তারা কি কাজ করে টাকা ইনকাম করেছে।
    • তাদের মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে কোনো অভিজ্ঞতা আছে কিনা। থাকলেও সেটা কেমন সেই মার্কেটপ্লেস থেকে কত টাকা উপার্জন করেছে।
    এই যাবতীয় বিষয়গুলো বিচার বিশ্লেষণ করার পরে একটি কোর্সে ভর্তি হবেন। কারণ এই সকল অভিজ্ঞতা যদি একটি প্রতিষ্ঠানের না থাকে তাহলে তারা আপনাকে কি শেখাবে। তাই নিজের টাকা যেখানেই শেখার উদ্দেশ্যে ব্যয় করেন না কেন সেটা ভেবে চিন্তে করেন।

    তৃতীয় যে বিষয়টি ছিল সেটা হচ্ছে বিনামূল্যে ফ্রিল্যান্সিং শেখা। প্রথমত কথা হচ্ছে বিনামূল্যে কোন কিছু শিখতে গেলে পরিশ্রম একটু বেশি করতে হয়। এখানে নিজেই নিজেকে ডিরেকশন করতে হবে। কেউ আপনাকে পার্সোনালি ডিরেকশন করবে না। তাই সঠিকভাবে ডিরেকশন করাটাও খুবই কষ্টসাধ্য তবে অসম্ভব নয়। বিনামূল্যে শেখার জন্য গুগল ও ইউটিউবকে বাছাই করুন।

    কারণ এই দুই মাধ্যমে বিনামূল্যে শেখার জন্য সবচেয়ে উপযোগী। আর যে বিষয়টি শিখবেন তার সম্পর্কে বই পড়ুন। এখন গুগল ও ইউটিউব থেকে শেখার জন্য কোন ধাপ গুলো অনুসরণ করতে হবে।
    • প্রথমত ইউটিউব থেকে শেখার জন্য ভালো কয়েকটি চ্যানেল বাছাই করুন। তাদের সাবস্ক্রাইবার ও শেখানোর পদ্ধতি বিচার-বিশ্লেষণ করুন। যে আপনি তাদের শেখানো বুঝতে পারছেন কিনা।
    • দ্বিতীয় গুগল থেকে কয়েকটি ওয়েবসাইট বাছাই করুন। যারা খুব সুন্দরভাবে ফ্রিল্যান্সিং কাজ সম্পর্কে বুঝাতে পারে এবং বলতে পারে। নতুন নতুন তথ্য আপনাকে জানাতে পারবে।
    • তৃতীয় ফেসবুকে অনেক পেজ রয়েছে যারা ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে বর্তমান অবস্থা জানায়। কোথায় কাজ করলে কেমন ইনকাম হবে এবং কেমন ভাবে কাজ করলে ভালো হবে। এই রকম কয়েকটি পেজ বাছাই করে রাখুন।
    • চতুর্থ বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং মোটিভেশনাল স্পিকারের কথা শুনুন। তারা কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং সেক্টর থেকে সফলতা পেয়েছে। তারা যে সকল ডিরেকশন দেয় সেটা যদি ভালো মনে হয় তাহলে গ্রহণ করুন।
    • পঞ্চম নিয়মিত ইউটিউবে ভিডিও দেখার মাধ্যমে প্র্যাকটিস করুন। যত বেশি প্র্যাকটিস করবেন তত কাজের উপরে দক্ষতা বাড়বে। কারণ কাজের উপরে দক্ষতা না বারলে কাজ পাবেন না।
    • ষষ্ঠ বিভিন্ন ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া এর মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং গ্রুপগুলোতে জয়েন হয়ে থাকুন। তারা কি ধরনের তথ্য দেয় সেগুলো গ্রহণ করুন। সেগুলো থেকে কিছু শেখার চেষ্টা করুন।
    এই বিষয়গুলো যদি অনুসরণ করে শিখতে পারেন। তাহলে আপনার পক্ষে ফ্রিল্যান্সিং শেখা কঠিন হবে না। কারণ বিনামূল্যে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে হলে এ বিষয়গুলো অনুসরণ করা প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তাই এই বিষয়গুলোর শেখার মাধ্যমে নিজে থেকে নতুন কিছু শেখার চেষ্টা করুন। আরেকজন যে কাজটি করছে সেটা হুবহু করবেন না। তার থেকে ভালোটা করার চেষ্টা করুন। তবেই ফ্রিল্যান্সিং করে ভবিষ্যৎ ও ক্যারিয়ার গঠন করতে পারবেন।

    ফ্রিল্যান্সিং এর সুবিধা কি কি

    বেশিরভাগ ব্যক্তি মূলত ফ্রিল্যান্সিং এর সুবিধা ও অধিক টাকা উপার্জনের আশায় ফ্রিল্যান্সিং এ কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করে। তারা তাদের ভবিষ্যৎ উপার্জন ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে করতে চাই। যে কাজে যত বেশি সুযোগ সুবিধা পাওয়া যাবে। সেই কাজে তত বেশি প্রতিযোগিতা হবে এটাই স্বাভাবিক। তো আসেন জেনে নি ফ্রিল্যান্সিং কোন সুযোগ সুবিধা গুলো পাবেন।
    • ফ্রিল্যান্সিং কে কাজ পেশা হিসেবে বেছে নিলে কাজের স্বাধীনতা পাবেন।
    • আনলিমিটেড টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
    • যখন ইচ্ছে হয় তখন কাজ করতে পারবেন যখন ইচ্ছে হয় তখন কাজ থেকে উঠে যেতে পারবেন। কাজের সময়সীমার কোন বাধা ধরা নিয়ম নেই।
    • আপনি অসুস্থ হয়ে গেলেও ফ্রিল্যান্সিং পেশার প্যাসিভ ইনকাম চালু থাকবে। আর একটিভ ইনকাম যখন কাজ করবেন তখনই টাকা পাবেন। তবে অসুস্থ হয়ে গেলে এই পেশা থেকে বাহিরে তাড়িয়ে দেওয়া হবে না।
    • এখানে ছুটি নেওয়ার জন্য দরখাস্ত বা আবেদন পত্র জমা দিতে হয় না। নিজের ইচ্ছে মতো ছুটি কাটাতে পারবেন।
    • আপনি এখান থেকে অন্যান্য কিছু পেশা এর তুলনায় বেশি টাকা ইনকাম করতে পারবেন। এমনও অনেক মানুষ রয়েছে যারা ঘরে বসে থেকে লাখ টাকার উপরে অর্থ উপার্জন করে।
    • নিজের ইচ্ছে মত নিজের ইনকাম বাড়িয়ে তুলতে পারবেন। তার মানে যত কাজ তত বেশি টাকা উপার্জন করতে পারবেন।

    ফ্রিল্যান্সিং এর অসুবিধা কি কি

    এখন এটা শোনার পরে বলবেন ফ্রিল্যান্সিং এ কাজ করার মধ্যে আবার কিসের অসুবিধা রয়েছে। অসুবিধা রয়েছে গুরুতর না হলেও কিছু অসুবিধা রয়েছে। যে অসুবিধা গুলো শারীরিক সমস্যার সাথে জড়িত। এই জন্য অনেকেই বেশি দিন যাবত ফ্রিল্যান্সিং পেশার সাথে জড়িত থাকতে পারেনা। তাহলে কি সেই অসুবিধা যার কারণে অনেকের ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার দীর্ঘদিন হয় না।
    • যারা ফ্রিল্যান্সিং করে অধিকাংশ রাতে ঘুমানোর সময় পায়না। যার ফলে শারীরিক অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। তাদেরকে বিভিন্ন ধরনের অসুখ জর্জরিত করে ফেলতে পারে।
    • যারা ফ্রিল্যান্সিং পেশার সাথে জড়িত তাদের কাজ করার জন্য দীর্ঘ সময় কম্পিউটার বা ল্যাপটপের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়। যার ফলে এই ডিভাইসের আলোক রশ্মি চোখের ক্ষতি করে।
    • ফ্রিল্যান্সিং পেশা হচ্ছে ঘরে বসে থেকে দীর্ঘ সময় করা। এই দীর্ঘদিন যাবত ও দীর্ঘ সময় বসে থাকার কারণে মাজা ও মেরুদন্ডে সমস্যা হতে পারে। কারণ এটা কোন শারীরিক পরিশ্রমের কাজ নয় মূলত এটা হচ্ছে মানসিক পরিশ্রমের কাজ।
    • ফ্রিল্যান্সিং পেশার সাথে যুক্ত থাকার ফলে অনেকেই সময় মত খাবার খায় না। যার ফলে তাদের শরীরে অনেক পুষ্টির ঘাটতি দেখা দেয়। সবশেষে দেখা যায় তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে।
    ফ্রিল্যান্সিং এ ক্লায়েন্ট কাকে বলে?
    উত্তরঃ ফ্রিল্যান্সিং এর ভাষায় ক্লায়েন্ট হচ্ছে যার কাছ থেকে সেলার বা আপনি কাজে নিবেন তাকেই সাধারণত ক্লায়েন্ট বলা হয়। সেই ব্যক্তি আপনাকে কাজ দিবে এবং কাজ করিয়ে নেওয়ার বিনিময়ে অর্থ প্রদান করবে।

    ক্লায়েন্ট কোথায় খুঁজে পাওয়া যায়?
    উত্তরঃ বিভিন্ন ধরনের মার্কেটপ্লেসগুলোতে ক্লায়েন্টের খোঁজ বেশি পাওয়া যায়। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেও অনেকে ক্লাইন খুজে থাকেন। তাদের কাছ থেকে কাজ নিয়ে অর্থ উপার্জন করেন।

    উপসংহার

    পরিশেষে বলা যায়, আমরা সকলেই আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত কিন্তু আমাদের ভবিষ্যৎ আমাদের হাতে থাকে না। আবার কঠোর পরিশ্রম ও সৃষ্টিকর্তার প্রতি বিশ্বাস আমাদের ভাগ্য বদলে দিতে পারে। অনেকেই ফ্রিল্যান্সিংকে তাদের ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিতে চাই।

    আমার মতামত হচ্ছে আপনাদের যদি কঠোর পরিশ্রম ও ধৈর্যের মানসিকতা থাকে তাহলে মূলত ফ্রিল্যান্সিং থেকে ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিবেন। আর তা না হলে দেখা যাবে আপনার সময় নষ্ট হচ্ছে। কারণ এখানে এমন কিছু সময় যাবে যেখানে আপনাকে ঘিরে নিতে পারে। তখন হতাশ হওয়া যাবে না আপনাকে আপনার কাজ করে যেতে হবে। তাই ফ্রিল্যান্সিং পেশায় যুক্ত হওয়ার আগে অবশ্যই ভেবে চিন্তে যুক্ত হবেন।

    শেষ কথাঃ প্রিয় পাঠক আশা করা যায় ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কি এবং ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার কেমন তার বিষয়ে বিস্তারিত পড়ার মাধ্যমে বুঝতে পেরেছেন। আপনি যদি বুঝতে পারেন তাহলে আপনার যে সকল বন্ধু ফ্রিল্যান্সিংকে ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিতে চায়। তাদেরকে এই আর্টিকেলটি পড়ার সুযোগ করে দিন। যাতে করে তারাও ফ্রিল্যান্সিংকে ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিবে কিনা তা নিয়ে দ্বিধায় না পড়ে। পুরো তথ্যটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

    এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

    পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
    এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

    এসএইচ নিউজস্টোরের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

    comment url