গ্লিসারিন এর ক্ষতিকর দিক এবং ত্বকের উপকারিতা
আপনি যদি গ্লিসারিন এর ক্ষতিকর দিক গুলো জানার জন্য এদিক-ওদিক খোঁজাখুঁজি করে থাকেন। তাহলে কিছুক্ষণের জন্য খোঁজাখুঁজি বন্ধ করুন কারন আপনাদের গ্লিসারিন এর ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জানাবো পাশাপাশি গ্লিসারিন মুখে দেওয়ার উপকারিতা এবং চুলে দেওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো। এই তথ্যগুলো পড়ার মাধ্যমে অনেক উপকার পাবেন।
আমরা অনেকেই গ্লিসারিনকে অবহেলা চোখে দেখলেও এর উপকারিতা ও কার্যকারিতা সম্পর্কে জানলে নিশ্চয়ই কেউ আর অবহেলা চোখে দেখবে না। এই জন্যই গ্লিসারিনের উপকার ও ব্যবহারের নিয়ম জানা প্রয়োজন।
পোস্ট সূচীপত্রঃ
ভূমিকা
আমরা অনেকেই ত্বক ও চুলের যত্নে গ্লিসারিন কে গুরুত্ব এর চোখে দেখি না। কারণ গ্লিসারিন এর ক্ষতিকর দিক এবং ত্বক ও চুলের ক্ষেত্রে গ্লিসারিন এর উপকারিতা জানি না। তবে আপনি যেন অবাক হবেন যে গ্লিসারিনের ব্যবহার এতটাই তাৎপর্যপূর্ণ যে আপনি সঠিক ভাবে ব্যবহার করতে পারলে এই গ্লিসারিন আপনাকে দিতে পারে প্রসাধনীর মতো উপকারিতা।
আপনি চাইলে প্রসাধনী গুলোর পাশাপাশি গ্লিসারিন ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু গ্লিসারিনের ক্ষতিকর দিকগুলো থেকে বাঁচার জন্যেও এর ক্ষতিকর দিকগুলো জানার প্রয়োজন রয়েছে। তাই তো এই সকল বিষয়গুলো তথ্যের ভিতরে বিস্তারিত জানতে পারবেন। যেই তথ্যগুলো জেনে আপনারা অনেক উপকৃত হবেন বলে আশা করা যায়।
গ্লিসারিন মুখে দিলে কি হয়
গ্লিসারিন মুখে দেওয়ার মাধ্যমে আপনি আপনার ত্বকের সুরক্ষা প্রদান করতে পারেন। আপনারা হয়তো অনেকেই আছেন যারা শীতের সময় ত্বকে গ্লিসারিন ব্যবহার করেন। আবার অনেকেই মনে করেন গিলিসারিন কোনো কাজের না। আসলে এই কথাটির মধ্যে আপনাদের কিছু ভুল ধারণা রয়েছে। আপনারা ত্বকের সুরক্ষার জন্য অনেক ধরনের প্রসাধনী ব্যবহার করে থাকেন।
যাতে করে নিজেদেরকে একটু সুন্দরভাবে কারো সামনে উপস্থাপন করতে পারেন। এটি কোনো দোষের না এটি সকলেরই একটি চাওয়া বা পাওয়া। আমরা সকলেই চাই নিজেকে অন্যের সামনে সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করতে। কিন্তু সেটি করার জন্য ত্বকের সঠিক পরিচর্যার প্রয়োজন হয়।
তাই আপনি অন্যান্য প্রসাধনী ব্যবহারের পাশাপাশি গ্লিসারিন মুখে ব্যবহার করে দেখতে পারেন। আশা করা যায় গ্লিসারিন আপনাকে হতাশ করবে না। গ্লিসারিন আপনার মুখের যথাযথ সুরক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করবে। গ্লিসারিন মুখে দেওয়ার মাধ্যমে আপনি অনেক উপকারিতা পেতে পারেন। সেই উপকারিতাগুলো কি কি তার নিচে তুলে ধরা হয়েছে।
গ্লিসারিন মুখে দেওয়ার উপকারিতা
সবচেয়ে গ্রামের মানুষদের গ্লিসারিন মুখে দিতে বেশি দেখা যায়। বিশেষ করে শীতের সময় তারা গ্লিসারিন বেশি মুখে দেয় কারণ তারা জানে যে এটি আমাদের ত্বককে প্রটেক্ট বা উপকারিতা দেওয়ার জন্য চেষ্টা করবে। হয়তো অনেকেই জানে আবার অনেকে নাও জানতে পারে। কিন্তু তারা এই গ্লিসারিন ব্যবহারে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে।
অবশ্যই গিলিসারিন ব্যবহারের পূর্বে পানি অথবা ভালো কোনো জিনিস ব্যবহার করুন। কারণ গ্লিসারিন হচ্ছে ভারী জাতীয় জিনিস। এইজন্য ব্যবহারের পূর্বে কোনো কিছু মিশিয়ে নিন। সত্যি যদি আপনারা শীতের সময় বা যেকোনো সময় ত্বককে প্রটেক্ট করতে চান। তাহলে গ্লিসারিন মুখে ব্যবহার করে এর উপকারিতা নিতে পারেন। তাহলে আর দেরি না করে গ্লিসারিন মুখে দেওয়ার উপকারিতা গুলো কি কি ও কিছু নিয়ম জেনে নিন।
১। বয়স্কের ছাপ থেকে ত্বককে লুকিয়ে রাখাঃ বার্ধক্যর বা বয়স্কের ছাপ থেকে ত্বককে লুকিয়ে রাখবেন কিভাবে। যদি এই বিষয়টি নিয়ে ভাবেন তাহলে বলবো গ্লিসারিন আপনার জন্য উপকার হবে। তাইতো নিজের ত্বকের যৌবন ধরে রাখতে গ্লিসারিনের সহায়তা নিতে পারেন।
২। টোনার হিসেবে কাজ করেঃ ত্বকের সুরক্ষায় টোনার হিসেবে কাজ করতে পারে গ্লিসারিন। এটি আপনার ত্বককে সব সময় ফ্রেশ ও কোমল রাখতে সহায়তা করে। এখন কোন নিয়মে ব্যবহার করলে টোনার হিসেবে কাজ করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে। ২০০ গ্রাম গ্লিসারিনের মধ্যে কিছু পরিমাণ পানি মিশিয়ে নেওয়ার পরে। তার ভিতরে ৩ থেকে ৪ চামচ গোলাপ জল মিশিয়ে নিন। তারপরে সেটিকে কোনো সুরক্ষিত পাত্রে সুরক্ষিত স্থানে সংরক্ষণ করে নিয়মিত ব্যবহার করুন। তাই ক্ষতিকর দিকগুলো থেকে বেঁচে থাকার জন্য নিয়ম গুলো মেনে ব্যবহার করুন।
৩। মেকআপের সহযোগীঃ মেকআপের সহযোগিতায় দারুন ভাবে কাজ করে থাকে। ত্বকে মেকআপ করার আগে মশ্চারাইজারের প্রয়োজন হয়। আর ময়শ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে গ্লিসারিন। মেকআপ করার আগে বা মেকআপ করার পরে গ্লিসারিন ব্যবহার করতে পারেন। এর জন্য নিয়ম হচ্ছে গ্লিসারিন এর মধ্যে হালকা পানি মিশিয়ে সেই মেশানো গ্লিসারিন দিয়ে মেকআপ দেওয়ার আগে ত্বক পরিষ্কার করে নিন। আবার ত্বক থেকে মেকআপ তুলে ফেলার সময় একই পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন।
৪। ময়লা ক্লিনারঃ ত্বকের যত্নে ত্বককে ময়লা ও জীবাণু থেকে সুরক্ষা প্রদান করা খুবই জরুরী। আর ঠিক এই কাজটাই করে থাকে গ্লিসারিন। ত্বকের ভিতর থেকে জীবাণুগুলোকে টেনে বের করতে কার্যকরী ও দারুণ উপকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ ব্যবহারের নিয়ম হচ্ছে ১০০ গ্রাম গ্লিসারিন এর মধ্যে ২ থেকে ৩ চামচ দুধ বা অ্যালোভেরা মিশিয়ে নিন।
তারপরে সেটিকে ত্বকে ব্যবহার করুন। অবশ্যই ব্যবহারের কিছুক্ষণ পরে পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলবেন। এতে করে ত্বকের তৈলাক্ত ভাব ও জীবাণু নিঃসরণ হয়ে যাবে। আপনি যদি নিয়ম মেনে গ্লিসারিন ব্যবহার করেন। তাহলে ক্ষতিকর দিকগুলো আপনার ধারের কাছেও আসবে না।
৫। ত্বকের শুষ্কতাঃ আমরা সকলেই জানি শীতের সময় ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। আবার আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যাদের সারা বছর ত্বক শুষ্ক থাকে। তাইতো আপনাদের জন্য আছে গ্লিসারিন যা ব্যবহারের ফলে ত্বকের শুষ্কতা নিমিষেই দূর করতে পারে। অবশ্যই ত্বকে গ্লিসারিন ব্যবহারের পূর্বে গ্লিসারিন এর মধ্যে পানি মিশিয়ে নিন। তারপরে সেটিকে ত্বকের ব্যবহার করুন।
৬। ব্রণের সমাধানঃ ব্রণের সমস্যার সমাধানে নিয়মিত কাজ করে গ্লিসারিন। আপনার ত্বক থেকে ব্রণকে নিরময় বা দূর করার জন্য ব্যবহার করতে পারেন। এটি যে শুধু ব্রণকে দূর করতে সাহায্য করে তা নয় পাশাপাশি ব্রণের দাগ দূর করতেও সহায়তা করে। তাই আজ থেকে ব্রণ দূর করার উদ্দেশ্যে গ্লিসারিন ব্যবহার শুরু করে দিতে পারেন।
৭। ত্বকের উজ্জ্বলতাঃ আমরা ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরে পেতে বা ধরে রাখতে কত ধরনের প্রসাধনী ব্যবহার করি। প্রসাধনী ব্যবহারের পাশাপাশি প্রাকৃতিক কিছু ঘরোয়া উপায় ব্যবহার করতে পারি। যেমন শীতের সময় গ্লিসারিন ব্যবহার করলে ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে সহায়তা করবে। তাই ত্বকের উজ্জ্বলতা বা গ্লো বৃদ্ধি করার জন্য গ্লিসারিন ব্যবহার করতে পারেন। গ্লিসারিন এর মধ্যে ত্বকের কোনো ক্ষতিকর দিক নেই বললেই চলে।
৮। ত্বকের দাগ দূরীকরণঃ ত্বকের দাগ এমন একটি জিনিস যা সহজে দূর হতে চায় না। সেটি হোক ব্রণের দাগ বা কাঁটা ছেড়ার দাগ। কিন্তু এই দাগ দূরীকরণ অসম্ভব নয়। তাই তো ত্বকের বলি রেখা ও কাটা ছেঁড়া দাগ দূর করার জন্য অনেকেই বেছে নিয়েছে গ্লিসারিনকে। তাই আপনিও এই সকল দাগ দূর করার জন্য গ্লিসারিন ব্যবহার করতে পারেন। অবশ্যই গ্লিসারিন এর সাথে গোলাপ জল বা কাঁচা দুধ ব্যবহার করুন।
৯। ত্বকের মৃত কোষঃ ত্বকের যে সকল মৃত কোষ রয়েছে তা আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা সহ আরো কিছু সমস্যা ডেকে নিয়ে আসে। আর এই মৃত কোষগুলোকে দূর করার জন্য উপকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয় গ্লিসারিন। তাই মৃত কোষ ও ত্বকের জন্য ক্ষতিকর জীবাণু দূর করার জন্য গ্লিসারিন সহায়তা করে।
চুলে গ্লিসারিন ব্যবহারের নিয়ম ও উপকারিতা
আমরা কিছুক্ষণ আগে মুখের ক্ষেত্রে গ্লিসারিন দেওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানলাম। এই গ্লিসারিন শুধু যে মুখে দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। এমনটি নয় আমরা অনেকেই মনে করি গ্লিসারিন শুধু ত্বকের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।
আপনাদের জেনে রাখা ভালো চুলেও ক্ষতিকর দিক এর ব্যবহারের নিয়ম রয়েছে যা আপনাকে উপকারিতা এনে দিবে। তাই তো চুলের ক্ষেত্রে গ্লিসারিন এর উপকারিতা জানতে হলে এর উপকারিতা গুলো পড়তে হবে। আরেকটি বিষয় জেনে রাখা ভালো গ্লিসারিন ব্যবহারে চুলের ক্ষতিকর দিক নেই বললেই চলে। তাহলে আর দেরি না করে নিচে দেওয়া তথ্যগুলো পড়ে নিন।
১। খুশকি দূরীকরণঃ খুশকি মানুষের চুলের উজ্জ্বলতাকে নষ্ট করে দেয়। এই খুশকি থেকে বাঁচার জন্য গ্লিসারিন সাহায্য করতে পারে। বিশেষ করে খুশকি শীতের সময় বেশি হয়। এই সময় ত্বক ও চুল দুটোই খারাপ হয়ে যায়। তাই খুশকি দূরীকরণের জন্য নিয়মিত গ্লিসারিন ব্যবহার করুন। হাতে হালকা গ্লিসারিন নিয়ে চুলে মাসাজ করুন। এভাবে করে ৫ থেকে ১০ মিনিট হালকা ভাবে মাসাজ করুন।
২। চুলের আগা ফাটাঃ অনেকেই চুলের আগা ফেটে যাওয়ার মত মারাত্মক সমস্যা নিয়ে ভুগছেন। খুবই চিন্তিত আগা ফেটে যাওয়া কারণে। চিন্তার কোন কারণ নেই এর সমাধান রয়েছে। হাতে গ্লিসারিন নিয়ে চুলের আগাতে হালকা করে মাসাজ করুন। এভাবে করে কিছুক্ষণ মাসাজ করতে থাকুন। আস্তে আস্তে মাসাজ করবেন যেন চুল হাতের সাথে না উঠে আসে।
৩। চুলের রুক্ষতাঃ এই সমস্যাটি প্রায়ই জনের মধ্যেই দেখা যায়। । চুলের রুক্ষতা হচ্ছে গুরুতর সমস্যা। এটি আপনার চুলের সাইন কে নষ্ট করে দিবে এবং চুলের বৃদ্ধি কেউ। তাই এটি সমাধানের প্রয়োজন। আর এর সমাধান হচ্ছে গ্লিসারিন ব্যবহার। হাতে হালকা পানি মিশিয়ে তার উপরে কিছু গ্লিসারিন নিয়ে চুলে মাসাজ করুন বা স্প্রেও করতে পারেন।
৪। কন্ডিশনারের বিকল্পঃ গ্লিসারিনকে কন্ডিশনারের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। আপনার চুলের শ্যাম্পু ব্যবহারের পরে মাথা ধুয়ে ফেলুন। তারপরে গ্লিসারিন মাথায় দিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিন। তার কিছুক্ষণ পরে মাথা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন গ্লিসারিন আপনার চুলের জন্য কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করছে। তাই যেকোনো সময় চুলের ব্যবহারে কন্ডিশনার হিসেবে গ্লিসারিন ব্যবহার করতে পারেন।
গ্লিসারিন ব্যবহারের নিয়ম
প্রত্যেকটি জিনিস ব্যবহারের আগে তার নিয়ম গুলো জেনে নেওয়া উচিত। ঠিক তেমনি ভাবে গ্লিসারিন ব্যবহারেরও কিছু নিয়ম রয়েছে। যে নিয়মগুলো জেনে ব্যবহার না করলে হয়তো আপনার ক্ষতি হতে পারে। তাই তো কিছু গ্লিসারিন ব্যবহারের নিয়ম রয়েছে যেগুলো জানা উচিত। গ্লিসারিন ব্যবহারের প্রথম শর্ত হচ্ছে অতিরিক্ত ব্যবহার না করা। আমরা অনেকেই জানি অতিরিক্ত কোনো কিছুই ভালো না।
ঠিক এই জিনিসটি গ্লিসারিনের ব্যবহারের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। শরীর, ত্বক ও চুল যেখানেই ব্যবহার করেন না কেন পরিমাণ মতো ব্যবহার করুন। যাতে করে উপকারিতা থেকে ক্ষতিকর দিকগুলো বেশি না দেখা যায়। তাই আজকে এমন কিছু ব্যবহারের নিয়ম বলে দিবো যেগুলো থেকে খুব সহজেই কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বা ক্ষতিকর দিক ছাড়াই ব্যবহার করতে পারবেন।
- কাঁচা দুধের সাথে গ্লিসারিন ব্যবহার করতে পারেন। যতটুকু পরিমান গ্লিসারিন নেবেন তার অর্ধেকের কিছু কম কাঁচা দুধ নিবেন। মুখের ক্ষেত্রে ব্যবহার করুন।
- এলোভেরা জেল এর সাথে গ্লিসারিন ব্যবহার করতে পারেন। আধা গ্লাস গ্লিসারিনের সাথে ২ থেকে ৩ চামচ এলোভেরা জেল ব্যবহার করতে পারেন। ত্বকের ক্ষেত্রে ব্যবহার করুন।
- গোলাপ জলের সাথে গ্লিসারিন ব্যবহার করে দেখতে পারেন। ১৫০ গ্রাম গ্লিসারিন এর ভেতরে ২ থেকে ৩ চামচ গোলাপজল ব্যবহার করুন। ত্বকের উপকারিতায় ব্যবহার করুন।
- গিলিসারিন এর সাথে হালকা পানি মিশিয়ে শরীর ও চুলের যেকোনো অংশে ব্যবহার করতে পারেন। অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন অতিরিক্ত ব্যবহার না হয়ে যায়।
গ্লিসারিন এর ক্ষতিকর দিক
আমরা তো এতক্ষণ গ্লিসারিনের ত্বক ও চুলের উপকারিতা পাশাপাশি ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে জানলাম। কিন্তু গ্লিসারিনের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে আমরা কেউ কি অবগত নাকি এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বা ক্ষতিকর দিক না জেনেই ব্যবহার করছি। আসলেই কি গ্লিসারিন এর ক্ষতিকর দিক বা অপকারিতা রয়েছে। জেনে কিছুটা বিস্তৃত হলেও কথাটি সত্য যে গ্লিসারিনের ক্ষতিকর দিক রয়েছে।
যেগুলো ভয়ানক না হলেও স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। প্রথমত যারা গ্লিসারিন অতিরিক্ত ব্যবহার করেন। তাদের সতর্ক হওয়া উচিত। অতিরিক্ত গ্লিসারিন ব্যবহার আপনার জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। আবার কেউ যদি গ্লিসারিন খেয়ে ফেলে তবুও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতি হতে পারে। তবে ভুলে যদি অল্প খেয়ে ফেলে সে বিষয়টি একটু আলাদা। তাহলে গ্লিসারিনের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জেনে নিন।
- গ্লিসারিন খেয়ে ফেললে বমি বমি ভাব হতে পারে।
- গ্লিসারিন খাওয়ার মাধ্যমে ডায়রিয়া হতে পারে।
- কেউ যদি গ্লিসারিন অতিরিক্ত খেয়ে ফেলে তাহলে হজমের সমস্যা হতে পারে।
- আবার কেউ যদি গ্লিসারিন অতিরিক্ত ত্বকে ব্যবহার করে। তাহলে যে উপকারিতা গুলো রয়েছে তার ফলাফল বিপরীত হতে পারে।
- গ্লিসারিন ব্যবহারের ফলে এলার্জি সমস্যা হতে পারে।
- অনেকেই অতিরিক্ত লাভের আশায় চুলে বেশি বেশি গ্লিসারিন ব্যবহার করেন। এতে করেও চুলের নানান প্রকারের ক্ষতি হতে পারে।
- শরীরের ক্ষেত্রেও ঠিক একই কথাটাই প্রযোজ্য শরীরের যেকোনো অংশে ঠোট হোক বা হাত ও পায়ের অংশ কোথাও অতিরিক্ত ব্যবহার করা যাবে না। এমন পরিমাণে ব্যবহার করবেন যেন সহনশীল হয়।
আশা করা যায় আপনারা গ্লিসারিনের ক্ষতিকর দিকগুলো খুব ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। তাই এর ক্ষতিকর দিকগুলো থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করুন। আর গ্লিসারিনকে সঠিক ভাবে ব্যবহার করে এর উপকারিতা গুলো লুফে নিন। আমাদের সকলেরই উচিত ক্ষতিকর দিকগুলো থেকে বেঁচে থাকা। যাতে করে উপকারিতা গুলো ফুটে উঠতে পারে।
ঠোঁটে গ্লিসারিন দিলে কি হয়
ঠোঁটে গ্লিসারিন দিলে ঠোঁট ফাটা ও ঠোঁটের শুষ্কতা দূর হয়ে যায়। এমনকি ঠোঁটে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় এবং ঠোঁটকে কোমল ও সুন্দর করতে সাহায্য করে। তাই তো গ্লিসারিন ঠোঁটে ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু শুধু গ্লিসারিন ব্যবহার করলে ঠোটের ক্ষেত্রে তেমন একটা উপকারিতা পাওয়া যায় না।
তিন ভাগের এক ভাগ গ্লিসারিন এবং দুই ভাগ গোলাপ জল নিন তারপরে সেটিকে মিশিয়ে নিয়মিত ঠোঁটে ব্যবহার করুন। অবশ্যই মেশানো গ্লিসারিন সংরক্ষিত স্থানে এবং সংরক্ষিত পাত্রে ভরে রাখুন। যাতে করে পরবর্তী যেকোনো সময় ঠোঁটে দিতে পারেন। ঠোঁট ফাটার উপযুক্ত সময় হচ্ছে শীতের সময় এই সময় মানুষের ঠোঁট বেশি শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যায়।
এটি ব্যবহারের উপযুক্ত সময় হচ্ছে রাতে ঘুমানোর আগে আপনি চাইলে দিনের যেকোনো সময় ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু বেশি কার্যকরী হবে রাতের সময় ব্যবহার করলে। তাহলে আশা করা যায় ঠোঁটে গ্লিসারিন দিলে কি হয় এই বিষয়টি সম্পর্কে কিছু ধারনা পেয়েছেন।
উপসংহার
পরিশেষে বলা যায় আমরা সকলেই ত্বক ও চুলের যত্নে কোনো কমতি ছাড়ি না। আবার এগুলোর কোনো ক্ষতি হলে তা নিরাময়ের জন্যও কোনো কমতি রাখি না। কারণ সবাই নিজেকে সুস্থ ও স্বাভাবিক রাখতে চান। তাইতো আমাদের সকলেরই ত্বক ও চুলের ক্ষেত্রে গ্লিসারিন ব্যবহার করা উচিত। কারণ ত্বক ও চুলের জন্য গ্লিসারিনের বিকল্প নেই বললেই চলে। আবার এর ব্যবহারই বিচুক্তি হলে ক্ষতিকর দিকগুলো দেখা দিতে পারে। তাই গ্লিসারিন এর ব্যবহারের নিয়ম গুলো মেনে এবং ক্ষতিকর দিকগুলো জেনে তারপরে ব্যবহার করুন।
শেষ কথাঃ প্রায় পাঠক নিশ্চয়ই গ্লিসারিন এর ক্ষতিকর দিক ও ত্বক ও চুলে গ্লিসারিন ব্যবহার করলে কি হতে পারে সে বিষয়গুলো জেনে উপকৃত হয়েছেন। সত্যি এই বিষয়গুলো জানার পরে আপনি যদি উপকৃত হয়ে থাকেন। তাহলে আপনার আশেপাশের অন্যজন কেউ জানান। যেন তারাও এই বিষয় সম্পর্কে তথ্যগুলো জেনে উপকৃত হতে পারে। পুরো তথ্যটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
এসএইচ নিউজস্টোরের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url